কলকাতার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কে গ্রাহকদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি। নিজস্ব চিত্র।
নোট বাতিলের পঞ্চম দিনেও কাটল না দুর্ভোগ। রবিবার সকাল হতেই ব্যাঙ্ক আর এটিএগুলোতে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েছে মানুষ। টাকা বদলানো, টাকা তোলার গেরোয় পড়ে ছুটির দিনটাও মাটি হয়ে গেল। পরিস্থিতি এখন যা দাঁড়িয়েছে তাতে মানুষ নাওয়া-খাওয়া ভুলে সারাদিন ব্যাঙ্ক আর এটিএমে গিয়ে হত্যে দিয়ে পড়ে থাকছে। গোটা দেশের ছবিটা এক। তিল ধারণের জায়গায় নেই ব্যাঙ্কগুলিতে। এটিএমগুলোয় লাইন সাপের মতো একেঁবেঁকে চলে গিয়েছে। নোট বাতিলের পর দিন থেকে ছবিটা বিন্দুমাত্র বদলায়নি। বরং উল্টে বেড়েছে হতাশা আর ক্ষোভ।
প্রথমে আসা যাক, কলকাতা-সহ এ রাজ্যের কথায়। এ দিন সকালেই শহরের এটিএমগুলোতে লম্বা লাইন চোখে পড়ছে। টাকা কখন আসবে কারও জানা নেই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে করতে মানুষের ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙতে শুরু করে। শহরের বেশ কিছু এটিএমে অল্পবিস্তর ঝামেলাও হয়। ব্যাঙ্কেও ঝামেলা করেন গ্রাহকরা। ব্যাঙ্ক ও এটিএমে আসা লোকজনের যাতে অসুবিধা না হয়, তার জন্য বেশ কিছু ব্যাঙ্ক থেকে জল ও চেয়ারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
লিলুয়ার এটিএমের সামনে চলছে মারপিট। নিজস্ব চিত্র।
গত কয়েক দিন ধরে যে ভাবে মানুষ দীর্ঘ ক্ষণ ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা বদলানো এবং টাকা তোলার জন্য অপেক্ষা করেছেন, তাতে সবচেয়ে বেশি ভোগাম্তির শিকার হয়েছেন বয়স্ক মানুষরা। কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সে বিষয়টি মাথায় রেখেই অনেক ব্যাঙ্ক জল ও চেয়ারের ব্যবস্থা করেছে।
জেলাগুলোর পরিস্থিতি আরও শোচনীয়। শহরের এটিএমগুলোতে টাকা পৌঁছলেও মফস্সল ও গ্রামাঞ্চলে এখনও সেই ভাবে পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে বার বার।
সুভাষগ্রামে এসবিআই ব্যাঙ্কের সামনে লম্বা লাইন। ছবি: শশাঙ্ক মন্ডল।
যেমন, এ দিন লিলুয়ায় এক এটিএমে গ্রাহকদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ রকম টুকরো টুকরো ঘটনা ঘটছে রাজ্যের সর্বত্র। এ দিকে, যত দিন গড়াচ্ছে মানুষের হাতে টাকাও কমে আসছে। তাই আরও বেশি মানুষ এটিএমমুখো হচ্ছেন। ব্যবসায়ীদেরও মাথায় হাত। এক ব্যবসায়ীর কথায়, টাকা না আসলে মানুষ জিনিস কিনবে কী করে? তার উপর খুচরোর সমস্যা গোদের উপর বিষ ফোড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০০০ টাকার নোট নিয়ে ভাঙানোর জন্য দোকানে দোকানে ঘুরতে হচ্ছে। বেশির ভাগই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। তাঁদের দাবি, হাতে খুচরোর আকাল না মিটলে এই সমস্যা দূর হবে না।
লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষকে জল দিচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্ষোভ-বিক্ষোভের খবর আসছে। দিল্লির বেশ কিছু এটিএমে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ঘোষণা করেছিলেন আরও ২-৩ সপ্তাহ লেগে যাবে এটিএমগুলোর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে। ফলে দুর্ভোগের ছবি যে এখনও দেখা যাবে সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।
আরও খবর...
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy