উদ্বেগ: হাতির মলে মিলেছে এমনই প্লাস্টিক। নিজস্ব চিত্র
মালবাজার: ডুয়ার্সে বাড়ছে পর্যটকদের ভিড়। জঙ্গলে চলছে পিকনিক থেকে শুরু করে যথেচ্ছ ঘোরাঘুরি। তার প্রভাব এ বারে পড়তে শুরু করেছে বন্যপ্রাণের উপরেও। সম্প্রতি ডুয়ার্সের একাধিক এলাকায় হাতির মল পরীক্ষা করে তার মধ্যে থেকে প্লাস্টিক মিলেছে। যা দেখে আঁতকে উঠেছেন পরিবেশপ্রেমীরা। তাঁদের কথায়, এখনই কঠোর পদক্ষেপ করা না হলে প্লাস্টিক খেয়ে হাতি মারাও যেতে পারে।
গত অগস্ট থেকে ডুয়ার্স জুড়ে হাতি সংক্রান্ত সমীক্ষা চালাচ্ছে ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া বা ডব্লিউটিআই। তারা জলপাইগুড়ির একটি সংস্থাকে দিয়ে এই সমীক্ষা চালাচ্ছে। সেই সমীক্ষা করতে গিয়েই বানারহাটের মরাঘাট রেতি বনাঞ্চল এলাকায় হাতির মলে প্লাস্টিক মিলেছে। এর থেকে ৫০ কিমি দূরে থাকা কালিম্পং বন নিগমের চেল নদীর চর এলাকা থেকেও প্লাস্টিক-সহ হাতির মল পেয়েছে আরেকটি দল। জলপাইগুড়ির সংস্থাটির পক্ষে প্রধান দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শ্যামাপ্রসাদ পাণ্ডে বলেন, “মানুষ জঙ্গলের গভীর অংশগুলোতেও পৌঁছে যাচ্ছে। ফলে প্লাস্টিকের মতো মনুষ্য সৃষ্ট বর্জ্যও সেখানে পৌঁছচ্ছে।’’ মূলত চিপস, নানা ধরনের প্যাকেটজাত খাবার, গুটখার প্যাকেটই জঙ্গলে বেশি পরিমাণে মেলে। পরিবেশবিদদের কথায়, বন্যপ্রাণীরা যে হেতু খাদ্যে কোনও লবণ পায় না, তাই লবণাক্ত বস্তুর প্রতি তাদের বাড়তি আকর্ষণ থাকে। প্যাকেটজাত খাবারের নোনতা স্বাদ তাদের আকর্ষণ করে। তাই পুরো প্লাস্টিক খেয়ে ফেলে তারা। বনকর্মীদের মতেও, এর ফলে বিপত্তি বাড়ছে বলেই বনকর্মীদের মত।
সমীক্ষার এই উদ্বেগজনক রিপোর্ট হাতে পেয়ে চোখ কপালে উঠেছে বন দফতরেরও। বনপাল উত্তর মণ্ডল (বন্যপ্রাণ) উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, “আমরা ডুয়ার্সের লোকালয়, গ্রাম, বাজার এবং পর্যটন এলাকায় প্লাস্টিক-বিরোধী সচেতনতা বাড়ানোর কাজে জোর দিতে চাইছি।” ডব্লিউটিআই-এর পক্ষে এই এলাকায় নিয়মিত নজর রাখেন উপাসনা গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “ডুয়ার্সে হাতি চলাচলের এলাকাগুলি গত দু’দশকে মানুষের কারণেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মলে প্লাস্টিক মেলাটা তারই মারাত্মক উদাহরণ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy