এসআইআর নিয়ে অস্বস্তি বাড়ছে বিজেপিতে। তাই নির্বাচন কমিশনের ওই উদ্যোগের ইতিবাচক দিক জনতার কাছে তুলে ধরার জন্য বিজেপি সাংসদদের পরামর্শ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ সংসদে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পশ্চিমবঙ্গের সাংসদদের ওই বৈঠকে ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়। দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত সাংসদ খগেন মুর্মুর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কেও জানতে চান মোদী। বিজেপির অন্য সাংসদদের উপরে একই ধরনের হামলা হতে পারে বলেও সতর্ক করে দেন।
সূত্রের মতে, দলগত কাজের নিরিখে সাংসদেরা কে কেমন সক্রিয়তা দেখিয়েছেন, তার মূল্যায়ন করে সাংসদদের আগামী দিনে কী করতে হবে, সেই নির্দেশ একটি খামে ভরে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে অসুস্থতার কারণে অনুপস্থিত ছিলেন জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়। পরে বৈঠকে যোগ দেন রাজ্যসভার সাংসদ অনন্ত মহারাজ।
পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর করতে গিয়ে উল্টো প্যাঁচে পড়েছে বিজেপি। দল প্রথম থেকেই দাবি করছিল, এসআইআর হলে প্রায় এক কোটির বেশি ভুয়ো ভোটার, বাংলাদেশি-রোহিঙ্গাদের নাম বাদ যাবে, যারা মূলত তৃণমূলের ভোটার বলেই পরিচিত। কিন্তু এসআইআর-এর কাজ শুরু হওয়ার পরে মুশকিলে পড়েছেন মতুয়ারা। বিশেষ করে যাঁরা সপরিবার ২০০২ সালের পরে বাংলাদেশ থেকে এসেছিলেন।
রাজ্য বিজেপির একটি অংশের আশঙ্কা, এসআইআর-এ অন্তত তিন থেকে পাঁচ লক্ষের কাছাকাছি মতুয়া ভোট বাদ যেতে পারে। তাতে সমস্যায় পড়বে বিজেপিই। তাই নেতিবাচক প্রচার রুখে দিয়ে ইতিবাচক দিকগুলি তুলে ধরার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। এর ফলে যে একমাত্র বৈধ ভোটারেরা ভোট দিতে পারবেন, তা জনসংযোগের মাধ্যমে তুলে ধরতে বলেন। বিজেপির এক সাংসদ বলেন, ‘‘এসআইআর যে জনবিরোধী নয়, বরং দেশের স্বার্থে করা হচ্ছে, তা প্রচারে জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিরোধীদের অপপ্রচার রুখে মতুয়া সমাজকে আশ্বস্ত করার প্রশ্নে বিজেপি সাংসদদের আরও সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।’’ তৃণমূলকে হারানোর প্রশ্নে দল কতটা প্রস্তুত তার বিশ্লেষণ করেন প্রধানমন্ত্রী। নিজেদের লোকসভা কেন্দ্রকে ছোট ছোট এলাকায় ভাগ করে সাংসদদের এখন থেকেই ভোটারদের কাছে পৌঁছতে বলেন। সূত্রের খবর, মতুয়াদের আশঙ্কা কাটাতে আগামী ২০ ডিসেম্বর রানাঘাটে সভা করে বিধানসভা ভোটের প্রচার শুরু করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
বৈঠকের শুরুতে খগেন মুমুর্র উপরে ‘শাসক দলের’ দুষ্কৃতীদের হামলার ঘটনা তুলে ধরেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। এর পরেই খগেন এবং তমলুকের সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন মোদী। তিনি বলেন, বাংলার বিজেপি কর্মীরা প্রতিকূলতার মধ্যে লড়াই করে চলেছেন। জয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ওই লড়াই জারি রাখতে হবে। প্রত্যেক সাংসদকে আরও বেশি করে সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় থাকার উপরে জোর দিয়েছেন মোদী।
পশ্চিমবঙ্গে রণকৌশল ঠিক করতে দিনভর বৈঠক করেন
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। আজ বিকেলে দলীয় দফতরে সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন শমীক ভট্টাচার্য। আর একটি বৈঠক হয় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা তথা বাংলার দায়িত্বে থাকা ভূপেন্দ্র যাদবের বাড়িতে। ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শমীকও ওই বৈঠকে যোগ দেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)