উদ্ধার হওয়া সরীসৃপ। —নিজস্ব চিত্র
পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে আসা একটি সরীসৃপকে উদ্ধার করল পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে এই ঘটনায় কালিয়াচকের এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ফরাক্কা থানার পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম মহম্মদ ঈশা শেখ (২৩)। তার বাড়ি কালিয়াচক থানার পশ্চিম খাসচাঁদপুর গ্রামে। বন্যপ্রাণীর চোরা কারবার করে সে। ওই অভিযোগে আগেও পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে বলে সূত্রের খবর। পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া সরীসৃপটির বাজারমূল্য কয়েক লক্ষ টাকা।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার দুপুরে বিপন্ন “গেকো” প্রজাতির সরীসৃপটিকে একটি ছোট হাতব্যাগে ভরে কালিয়াচক থেকে আসা একটি বাসে ফরাক্কায় আসে ওই যুবক। এনটিপিসি মোড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে বাস থেকে নামে সে। তাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল ফরাক্কারই আরেক যুবক। বাসস্টপ থেকে ফিডার ক্যানেল এলাকার পুরনো ধোসা ঘাটের কাছে এক নির্জন জায়গায় যায়। সেখানেই সরীসৃপটি নিতে আসার কথা ছিল বিহারের দুই ব্যক্তির। গাড়িতে করে তারা ফরাক্কায় এসেওছিল। পুলিশও আগাম খবর পেয়ে ওঁত পেতে ছিল আশপাশে। কালিয়াচক থেকে আসা যুবককে দেখামাত্র পুলিশ তাকে ঘিরে ফেলে। তল্লাশিতে তার ব্যাগের মধ্যে মেলে সরীসৃপটি। তারপরই ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। অবশ্য বাকিরা পালিয়ে গিয়েছে।
ধৃত যুবক মহম্মদ ঈশা শেখ
ফরাক্কা থানার আইসি উদয়শঙ্কর ঘোষ জানান, উদ্ধার হওয়া সরীসৃপটি ১৪ ইঞ্চি লম্বা। রং মিশমিশে কালো। ওজন ১৭৫ গ্রাম। ধৃত যুবক পুলিশকে জানিয়েছে, সরীসৃপটি মায়ানমার থেকে বাংলাদেশ হয়ে কালিয়াচকে আনা হয়েছিল গত সপ্তাহে। তিন লক্ষ টাকায় এটি বিক্রির জন্য আনা হয়েছিল। বিহারের দু’জন ক্রেতার সেটি কেনার কথা ছিল। তারা সেই দাম মিটিয়ে দিয়েছে আগেই।
আরও পড়ুন: টিকিটবিহীন পড়ুয়াকে আটক করায় এক ঘণ্টা গেদে স্টেশন অবরোধ করলেন স্থানীয়েরা!
এদিন সরীসৃপটিকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্যই ফরাক্কায় আনা হয়েছিল। হাতবদলের খবর আগে থেকেই ছিল পুলিশের কাছে। যদিও প্রাথমিক ভাবে পুলিশের কাছে খবর ছিল সরীসৃপটি বিরল প্রজাতির এবং এটির দাম প্রায় ৯ কোটি টাকার কাছাকাছি। কিন্তু পরে বনদফতর থেকে জানানো হয় যে সরীসৃপটি বিরল প্রজাতির নয়।
আরও পড়ুন: মৃত্যুর পর হাহুতাশ করে কী লাভ?
বন দফতরের এক স্থানীয় আধিকারিককে ডাকা হয়েছিল। তিনি তাঁদের দফতরে সরীসৃপটির ছবি তুলে পাঠান। আপাতত সেটিকে ফরাক্কা থানায় রাখা হয়েছে। ওই যুবককে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জেনেছে, বিহারের দু’জনের সরীসৃপটিকে চিনে পাচারের পরিকল্পনা ছিল।
তবে রঘুনাথগঞ্জে বন দফতরের রেঞ্জার শিবপ্রসাদ সিংহের বক্তব্য, সরীসৃপটি বিরল প্রজাতির নয়। মূল্যবানও নয়। “গেকো” সোনালি রঙের। এদের ওজন কমপক্ষে ৪০০ গ্রাম। তিনি বলেন, “এই সরীসৃপটি সহজলভ্য। কেন তা এত চড়া দামে কেনাবেচা হচ্ছিল, সেটা পুলিশই তদন্ত করে বলতে পারবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy