Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

অমিতাভ খুনে গ্রেফতার তিন

এ দিনই সকালে মোর্চার সদর দফতর সিংমারির ভবনটিও সিল করে দিয়েছে প্রশাসন। বিমলের ছেলে অবিনাশ গুরুঙ্গের নামে বেআইনি নথি তৈরি করে সরকারি জমিটি দখল করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।

অমিতাভ মালিক। ছবি তাঁর ফেসবুক পেজের সৌজন্যে।

অমিতাভ মালিক। ছবি তাঁর ফেসবুক পেজের সৌজন্যে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:১০
Share: Save:

সাব ইনস্পেক্টর অমিতাভ মালিককে খুনে জড়িত সন্দেহে বিমল গুরুঙ্গের ঘনিষ্ঠ তিন যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার তারা হেঁটে সিকিম পালানোর চেষ্টা করছিল। তখনই দার্জিলিঙের বিজনবাড়ি এলাকা থেকে তাদের ধরা হয়।
তিন জনেই গুরুঙ্গর তৈরি সশস্ত্র বাহিনী জিএলপির সদস্য ছিল বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তিন জনকেই সিআইডির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বুধবারই তিন জনের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজত হয়েছে। এই নিয়ে ওই ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

এ দিনই সকালে মোর্চার সদর দফতর সিংমারির ভবনটিও সিল করে দিয়েছে প্রশাসন। বিমলের ছেলে অবিনাশ গুরুঙ্গের নামে বেআইনি নথি তৈরি করে সরকারি জমিটি দখল করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। তিন তলা অফিসটি তৈরি হয়েছে অনেক দিন আগে। অথচ এত দিন জমি দখলের বিষয়টি প্রশাসনের কেন অজানা ছিল, সেই প্রশ্ন তুলেছেন গুরুঙ্গ অনুগামীরা। সিংমারি অফিসের অদূরে দাঁড়িয়ে কয়েকজন মোর্চা সমর্থক জানিয়ে দেন, ঠিক মতো তদন্ত হলে পাহাড়-সমতলে এমন অনেক অফিসই সিল করে দিতে হবে।

পুলিশের গোয়েন্দাদের ধারণা, গুরুঙ্গ ঘনিষ্ঠ কট্টরপন্থী মোর্চা নেতা-কর্মীদের অনেকেই অবশ্য এখন দার্জিলিং পাহাড় ছেড়ে পালিয়েছেন। মঙ্গলবার ধৃত তিন জনও সিকিম পালানোর চেষ্টা করছিল। তাদের নাম শ্যাম কামি, মহেন্দ্র কামি এবং দেওয়াজ লেপচা। শ্যামের বাড়ি কুমারগ্রামের নিউল্যান্ড চা বাগানে, মহেন্দ্রর বাড়ি বীরপাড়া খাওয়াসবস্তিতে। দেওয়াজ আলিপুরদুয়ারের বক্সাতে থাকে। জুনের পরে তিন জনই বাড়ি ছেড়ে পাহাড়ে চলে যায়। তারপরে দীর্ঘ দিন ধরে তিন জনই গুরুঙ্গের সঙ্গে সঙ্গেই ছিল। এর মধ্যে অমিতাভ খুনে এফআইআরে নাম ছিল মহেন্দ্রর। এর আগে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ অস্ত্র সহ সুরজ প্রধান নামে গুরুতর জখম এক মোর্চা সর্মথককে গ্রেফতার করে। এখনও সে হাসপাতালে ভর্তি।

সিআইডি অফিসারেরা জানান, গত কয়েক বছর ধরে গুরুঙ্গ-সহ একাধিক মোর্চা নেতা পাহাড় ছাড়াও ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকা যেতেন। বিশেষ করে ভুটান সীমান্ত লাগোয়া জয়গাঁ, কালচিনি এলাকায় একাধিকবার মোর্চার সভা, বৈঠক হয়েছে। সেই সময় থেকেই এই তিন যুবক সহ অনেকেই মোর্চা নেতাদের সংস্পর্শে আসেন। উত্তর পূর্বাঞ্চলেও এদের যোগাযোগ রয়েছে। মহেন্দ্র, শ্যামদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

মহেন্দ্র, শ্যামদের সিংমারিতে মোর্চা সদর দফতরেও নিয়মিত যাতায়াত ছিল। এ দিন সকালে দার্জিলিং জেলাশাসকের দফতরের অফিসার, কর্মীরা সিংমারি গিয়ে সেই ভবনটি বন্ধ করে দেন। ভবনটির জমি ও সম্পত্তি রাজ্য সরকারের বলে বাইরে নোটিসও ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের অফিসারেরা জানান, বাড়ির পাশের পাতলেবাস ছাড়া সিংমারির এই বহুতল পার্টি অফিসে বসেই গুরুঙ্গ দলের কাজকর্ম পরিচালনা করতেন। পরে সিংমারির দফতরটিকে সদর দফতর হিসাবে ঘোষণা করা হয়। ১৫ জুনের পর এক দফায় পুলিশ দলীয় দফতরটিতে অভিযানও চালায়। তদন্তে জানা যায়, জমিটি পুরোটাই রাজ্য সরকারের। ভুয়ো নথি তৈরি করে জমিটি দখল করা হয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE