Advertisement
০৪ জুন ২০২৪
Mysterious Death

চশমার খাপে ঠিকানা, তরুণী খুনে তদন্ত-সূত্র

তরুণীর দু’পা যে ভাবে ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে বাঁধা ছিল, নাইলনের দড়ি দিয়ে বাঁধা হয়েছিল দু’হাত— তা দেখে পুলিশের ধারণা, একাধিক দুষ্কৃতী মিলেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে।

representational image

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:৪৫
Share: Save:

সাদা রঙের একটা চশমার খাপ। গায়ে কালো অক্ষরে বাংলায় লেখা বাংলাদেশের যশোর জেলার ফরিদপুরের একটি দোকানের ঠিকানা।

আপাতত এটুকুই তথ্য হাতে এসেছে পুলিশের। উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে তরুণীকে হাত-পা বেঁধে খুনের ঘটনায় এই সূত্র ধরে এগোতে চাইছেন তদন্তকারীরা। দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সাহায্যও চেয়েছে পুলিশ। দেহের পাশ থেকে দু’টি বড় ব্যাগ মিলেছে। সেখানে মিলেছে মহিলাদের কিছু পোশাক, প্রসাধন সামগ্রী। সে সবের মধ্যে থেকে তদন্তের কোনও সূত্র উঠে আসে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে পুলিশের তরফে। তরুণীর মোবাইল ফোন গায়েব। দেহের পাশে পড়েছিল মোবাইলের ব্যাক কভার।

তদন্তকারীদের অনুমান, তরুণীর পরিচয় লোপাট করতে সম্ভবত খুনের পরে তাঁর মুখে কাপড় পেঁচিয়ে আগুন লাগানো হয়েছিল। তরুণীর দু’পা যে ভাবে ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে বাঁধা ছিল, নাইলনের দড়ি দিয়ে বাঁধা হয়েছিল দু’হাত— তা দেখে পুলিশের ধারণা, একাধিক দুষ্কৃতী মিলেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তরুণীর পরনে ছিল কালো-সাদা ছাপ টপ ও কালো লেগিংস। পোশাক-পরিচ্ছদ তেমন অবিন্যস্ত নয়। ফলে খুনের আগে তরুণীকে যৌন নিগ্রহ করা হয়েছিল বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন না তদন্তকারীরা। তরুণীর পোশাক, হাতে মেহেন্দি দেখে তদন্তকারীদের অনুমান, মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়েই হবেন তিনি। কাদের সঙ্গে, কেন স্বরূপনগরের সীমান্তবর্তী এলাকায় এলেন, তা স্পষ্ট নয়। কেন এমন নৃশংস খুন, ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। পুলিশ মনে করছে, ময়না তদন্তের রিপোর্ট এলে বোঝা যাবে, বছর পঁচিশের এই তরুণীকে কী ভাবে খুন করা হয়েছে।

বসিরহাট জেলার পুলিশ সুপার জবি থমাস কে বলেন, ‘‘তরুণীর পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। কারা এর পিছনে, আশা করি তা-ও এর মধ্যেই জানা যাবে। বাংলাদেশের পুলিশ ও সীমান্তরক্ষী এবং বিএসএফের সাহায্য চাওয়া হয়েছে।’’ তরুণী এ-দেশ থেকে বাংলাদেশে যাচ্ছিলেন, না কি ও-পার থেকে এ-দিকে ঢুকেছিলেন, তা জানার চেষ্টা চলছে।

মঙ্গলবার সকালে সীমান্তবর্তী গুণরাজপুরে মাঠের ধারে পড়েছিল ওই তরুণীর দেহ। সে জায়গার একশো হাতের মধ্যে সীমান্তের কাঁটাতার। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে দু’পারে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর চোখ এড়িয়ে কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটল? এক ব্যক্তির কথায়, ‘‘এই ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে, আমাদের সকলেরই নিরাপত্তা যে কোনও সময়ে বিঘ্নিত হতে পারে। এটা কোনও এক জনের কাজ হতে পারে না।’’

কাঁটাতার থাকলেও ফাঁক গলে চোরোগোপ্তা আনাগোনা চলে ওই এলাকা দিয়ে, জানান গ্রামবাসী। চোরাপাচার ইদানীং কিছুটা কমেছে। তবে ‘ধুর পাচার’ বা মানব পাচার এখনও হয় বলে দাবি তাঁদের। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মিজানুর পাড় বলেন, ‘‘মানব পাচার এখনও চলছে। প্রতিবাদ করতে গেলে দালালেরা গ্রামবাসীকে ভয় দেখায়।’’ পুলিশ জানিয়েছে, সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Basirhat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE