E-Paper

জেএমবি থেকেই এবিটি, মানল ধৃত জঙ্গিরা

বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকার জোগাড় করে তারা ধরা পড়া শাদ রাডি ওরফে শাব শেখকে পাঠাত। তারা কত টাকা তুলে শাবকে পাঠিয়েছে, সে হিসাব করা হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৫ ০৭:৫২
এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে।

এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

এক সময়ের পরিচিত জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ’ (জেএমবি)-এর সদস্যেরাই এখন আর এক জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লা বাংলা টিম (এবিটি)-এ ভিড়েছে বলে আগেই জানতে পেরেছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। এ বার রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)-এর গোয়েন্দারা জানালেন, সোমবার মুর্শিদাবাদের নওদা থেকে গ্রেফতার হওয়া সাজিবুল ইসলাম এবং মুস্তাকিন মণ্ডল ওরফে মোস্তাকিম শেখকে জেরা করে তাঁরা এ কথাই জানতে পেরেছেন। এসটিএফ গোয়েন্দাদের দাবি, কয়েক বছর আগে সাজিবুল ও মুস্তাকিন জেএমবির ‘স্লিপার সেল’-এর সদস্য হিসেবে কাজ শুরু করেছিল। বছর খানেক তারা এবিটির হয়ে কাজ করছে।

নওদা থানায় ওই দু’জনের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে। সূত্রের খবর, ধৃতদের বিরুদ্ধে ১১৩ (৩/৪/৫/৬), ৬১(২), ১৪ (সি) ধারায় মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার বহরমপুরে মুখ্য বিচার বিভাগীয় বিচারকের এজলাসে হাজির করানো হলে ধৃতদের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠায় আদালত। সরকারি কৌঁসুলি বিশ্বপতি সরকার বলেন, “ধৃতদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ১৪ জানুয়ারি তাদের ফের আদালতে তোলা হবে।” মুর্শিদাবাদ পুলিশ-জেলার সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব বলেন, “সাজিবুল ও মুস্তাকিনকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করে আরও তথ্য জানার চেষ্টা হচ্ছে।”

কী কাজ করত ওই দুজন? এসটিএফের দাবি, এলাকায় ঘুরে ঘুরে তারা স্থানীয় যুবকদের জঙ্গি সংগঠনের কাজে ভিড়িয়েছে। বাংলাদেশ থেকে অবৈধ ভাবে সীমান্ত পেরিয়ে এ দেশে আসা এবিটির অন্যতম নেতা ফারহান ইসরাক-সহ দুই জঙ্গি সংগঠনেরই চাঁইদের থাকার ব্যবস্থা করার দায়িত্ব ছিল ওই দু’জনের উপরে। আর্থিক দিক থেকে সংগঠনকে চাঙ্গা করার দায়িত্বও ছিল সাজিবুলদের।

বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকার জোগাড় করে তারা ধরা পড়া শাদ রাডি ওরফে শাব শেখকে পাঠাত। তারা কত টাকা তুলে শাবকে পাঠিয়েছে, সে হিসাব করা হচ্ছে। এ ছাড়া, দুই জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের গোপন বৈঠক, নানা শিবিরের আয়োজনেও ভূমিকা ছিল সাজিবুল, মুস্তাকিনের। ফারহান ইসরাক বাংলাদেশ থেকে শাবকে কোনও নির্দেশ দিলে, শাব তা জানাত তার পিসতুতো ভাই সাজিবুলকে।

অসম পুলিশ এ রাজ্যের দু’জন-সহ বারো জন এবিটি সদস্যকে গ্রেফতার করে গত সপ্তাহে। অসমে গিয়ে এসটিএফের দল শাব এবং নুর ইসলাম মণ্ডলকে জেরা করে সাজিবুল এবং মুস্তাকিনের সন্ধান পায়। রবিবার রাতে হয় নওদা থানা এলাকা থেকেই ওই দু’জনকে আটক করে সোমবার রাতে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের জেরা করে কয়েক জন বাংলাদেশির নাম মেলে, যাদের এ রাজ্যে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়ায় অভিযুক্ত ওই দু’জন। কত লোককে সংগঠনের কাজে যুক্ত করা হয়েছে, এলাকার আর কেউ নিখোঁজ কি না, জানার চেষ্টা চলছে।

সাজিবুলের মা আনজিরা বেওয়া দাবি করেন, ‘‘আমার ভাইপো শাব মাঝেমধ্যে নওদায় বেড়াতে আসত। কিন্তু ও জঙ্গি নয়। আমার ছেলেও অপকর্মে জড়িত নয়।’’ মুস্তাকিনের মা আফরোজা বিবি বলেন, ‘‘ছেলে নির্দোষ। দুর্লভপুরের ছেলেটার জন্য পুলিশ ওকে ধরেছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

arrest Ansarullah Bangla Team Jamaat-ul-Mujahideen Bangladesh Bangladesh Unrest Bangladesh India-Bangladesh Border

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy