ভোটে তো যা হওয়ার হয়েছেই। ভোটের পরেও বিভিন্ন জায়গায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে আক্রান্ত হতে হয়েছে পুলিশকে। গত মাসেই দুর্গাপুরে উন্মত্ত জনতার হাতে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন পুলিশের এক আধিকারিক। তার পরেও কোচবিহার, নদিয়া-সহ বিভিন্ন জেলায় ক্ষুব্ধ জনতার হাতে আক্রান্ত হতে হয়েছেন পুলিশকর্মীরা।
রাজ্য পুলিশ সূত্রের খবর, পরপর আক্রমণের ঘটনায় উদ্বিগ্ন নবান্ন পুলিশকর্মীদের আত্মরক্ষার্থে হেলমেট-সহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিস ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে নির্দেশ জারি করেছে। রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা)-র ওই নির্দেশে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলের কোনও মিটিং-মিছিল বা আইনশৃঙ্খলাজনিত কারণে ডিউটিতে গেলে হেমলেট পরতে হবে সব পুলিশকর্মীকে। টুপি পরে ওই ডিউটি করা চলবে না। প্রাণঘাতী নয়, এমন অস্ত্র ব্যবহার করতে বলা হয়েছে বাহিনীকে।
নবান্নের নির্দেশে বলা হয়েছে, ডিউটিতে যাওয়ার আগে পুলিশকর্মীরা হেলমেট ও অন্যান্য জিনিস পাচ্ছেন কি না, ব্যক্তিগত ভাবে সেটা দেখতে হবে থানার ওসি-দের। কর্মী-অফিসারেরা ওই নির্দেশ মান্য করছেন কি না, তা দেখতে হবে এ ছাড়া ঘটনাস্থলে থাকা সিনিয়র পুলিশ অফিসারদের। এই নির্দেশ যাতে নিচু তলার পুলিশকর্মীদের কাছে পৌঁছয় এবং সকলেই যাতে তা মেনে চলেন, তার জন্য জেলা এবং রেলের এসপি, পুলিশ কমিশনারদের সেটা যথাযথ ভাবে জানাতে বলা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে যাওয়া পুলিশকর্মীদের সুরক্ষায় নবান্নকে এমন নির্দেশ জারি করতে হল কেন? পুলিশের একাংশ জানাচ্ছেন, রাজ্য পুলিশের ওই কর্তার নির্দেশের শুরুতেই বলা হয়েছে, তাঁদের নজরে এসেছে, পুলিশের বিভিন্ন বড় কর্তা-সহ বাহিনীর অনেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে গিয়ে আত্মরক্ষার্থে হেলমেট ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস ব্যবহার করছেন না। ফলে উন্মত্ত জনতার হাতে আক্রান্ত হতে হচ্ছে পুলিশকর্মীদের। এতে পুলিশবাহিনী সম্পর্কে জনমানসে খারাপ ধারণা তৈরি হচ্ছে।
ভোটের পরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা বিরোধী দল শক্তিশালী হয়েছে। ফলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে ভাটপাড়া, সন্দেশখালির মতো জায়গায়। কাটমানি নিয়ে প্রতিদিনই বিভিন্ন জেলায় অশান্তি হচ্ছে। যা সামলাতে গিয়ে আক্রান্ত হতে হচ্ছে বাহিনীকে। রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, বাহিনীর ক্ষতি ঠেকাতেই নবান্নকে বাধ্য হয়ে এই নির্দেশ জারি করতে হয়েছে। তবে প্রাণঘাতী অস্ত্র সঙ্গে না-থাকলে ক্ষিপ্ত জনতাকে কী ভাবে ঠেকানো যাবে, সেই বিষয়ে স্পষ্ট কোনও বার্তা দেওয়া হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy