অন্য-ভূমিকায়: মঞ্চে ‘বাঁচো ও বাঁচাও’ নাটক। নবদ্বীপে। —নিজস্ব চিত্র।
পুলিশ নাকি সব পারে!
গাঁ-গঞ্জে কথাটা বেশ প্রচলিত। তাই বলে নাটকের মাধ্যমে লোকশিক্ষা?
নদিয়ার নবদ্বীপের আইসি সুবীর পাল মুচকি হাসছেন, ‘‘চেষ্টায় কোনও ত্রুটি রাখিনি। কেমন হয়েছে, সে তো দর্শকেরা বলবেন!’’
শনিবার ছিল নবদ্বীপ নাট্য উন্নয়ন পরিষদের ৪২তম নাট্যসম্মেলনের উদ্বোধনী সন্ধ্যা। সেখানেই মঞ্চস্থ হয়েছে ‘বাঁচো ও বাঁচাও’। পুলিশের ওই নাটক দেখে উচ্ছ্বসিত দর্শকেরা বলছেন, ‘‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ নিয়ে বহু প্রচার দেখেছি। কিন্তু তা নিয়ে যে এত ভাল নাটকও হতে পারে, না দেখলে বিশ্বাসই হতো না।’’
কাজের ফাঁকে এক-আধটু লেখালেখির অভ্যাস আছে নবদ্বীপ থানার কনস্টেবল নারায়ণ রায়ের। নিজের খেয়ালেই নাটকটি লিখে ফেলেন তিনি। সেটা পড়ে উৎসাহিত হন আইসিও। পরিচালনার দায়িত্ব তিনিই নেন।
কিন্তু অভিনয় করবে কারা?
কিছুটা কিন্তু কিন্তু করে কনস্টেবল নারায়ণ বলেন, ‘‘আপনি অভয় দিলে অভিনয়টাও করতে পারি স্যার।’’ সিভিক ভলান্টিয়ার্স তাজিবুল রহমান, সুবীর দাস, সুশোভন সাহা, সুদীপ্ত ঘোষ, আদিত্য সিদ্ধান্ত, শুভঙ্কর দত্ত ও ভিলেজ পুলিশ সাক্ষী ঘোষেরাও জানান, তাঁরাও স্কুল-কলেজে বেশ কয়েক বার নাটক করেছেন।
ব্যস, হয়ে গেল মুশকিল আসান! ডিউটির শেষে থানাতেই শুরু হল নাটকের মহলা। আইসি সুবীর পাল বলছেন, ‘‘ভাগ্যিস নারায়ণবাবু নাটকটা লিখেছিলেন! না হলে জানতেই পারতাম না আমার সহকর্মীরা এত ভাল অভিনয়ও করতে পারেন!’’
মাস দেড়েক আগে নবদ্বীপের রাধাবাজারে প্রথম পথনাটক। সেটা ‘হিট’ হতেই ডাক আসে নবদ্বীপ শ্রীচৈতন্য বইমেলা কমিটি থেকে। পথ থেকে এ বার সটান মঞ্চে। শনিবার ছিল নাটকের অষ্টম রজনী।
নাটক শুরু হয় গুপীদার (সুদীপ্ত) চায়ের দোকান থেকে। সেখানেই দুর্ঘটনার খবর বয়ে আনে পরান (সুবীর)। সেই দুঃসংবাদ শুনতে শুনতে গফুর মিঞার (আজিবুল) মনে পড়ে যায় দুর্ঘটনায় মৃত তাঁর একমাত্র ছেলের কথা। এ ভাবেই নাটকে উঠে আসে গতি, ট্রাফিক আইন ভাঙা ও দুর্ঘটনার মর্মান্তিক বিবরণ।
নদিয়ার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলছেন, ‘‘নাটকের মাধ্যমে যে কোনও বিষয় খুব সহজেই মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়। সেই কাজটাই করছে নবদ্বীপ থানা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy