Advertisement
E-Paper

এত অস্ত্র কেন, চুপ পুলিশ

এত অস্ত্র কেন? প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছে নদিয়ার কল্যাণী, গয়েশপুর ও হরিণঘাটায়।সামনে ভোট নেই। নেই অন্য কোনও রাজনৈতিক কর্মযজ্ঞও। এলাকায় রাজনৈতিক অস্থিরতা? নাহ্, তেমন কোনও খবর নেই গোয়েন্দা-পুলিশের কাছে। তবু কল্যাণী-হরিণঘাটায় আগ্নেয়াস্ত্রের রমরমা কারবার দেখে অবাক পুলিশ।

সুপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৪:২১
উদ্ধার হওয়া অস্ত্র। —নিজস্ব চিত্র

উদ্ধার হওয়া অস্ত্র। —নিজস্ব চিত্র

এত অস্ত্র কেন?

প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছে নদিয়ার কল্যাণী, গয়েশপুর ও হরিণঘাটায়।

সামনে ভোট নেই। নেই অন্য কোনও রাজনৈতিক কর্মযজ্ঞও। এলাকায় রাজনৈতিক অস্থিরতা? নাহ্, তেমন কোনও খবর নেই গোয়েন্দা-পুলিশের কাছে। তবু কল্যাণী-হরিণঘাটায় আগ্নেয়াস্ত্রের রমরমা কারবার দেখে অবাক পুলিশ।

শনিবার সন্ধ্যায় দুই অস্ত্র কারবারিকে গ্রেফতার করেছে হরিণঘাটা থানার পুলিশ। তাদের কাছ থেকে মিলেছে ছ’টি ওয়ান শটার। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত সালাম আলি ও বাসুদেব সাঁতরা উত্তর চব্বিশ পরগনার হাড়োয়ার বাসিন্দা। গত এক মাসে এই নিয়ে কল্যাণী ও হরিণঘাটায় তিন বার অস্ত্র উদ্ধার হল। স্বাভাবিক ভাবেই আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় হরিণঘাটার ঝিকড়া বটতলায় প্রতিদিনের মতো টহল দিচ্ছিল পুলিশ। তখন রাস্তা দিয়ে হেঁটে আসছিল সালাম ও বাসুদেব। হাতে ছিল বাজারের থলে। রাস্তায় পুলিশ দেখে তারা উল্টো পথে হাঁটতে শুরু করে। পুলিশের সন্দেহ হয়। তাদের তাড়া করে পাকড়াও করে পুলিশ।

রবিবার সকালে সাংবাদিক সম্মেলনে কল্যাণীর এসডিপিও কৌস্তভদীপ্ত আচার্য জানান, ধৃত ওই দু’জন নদিয়ার বিভিন্ন জায়গায় অস্ত্র পাচার করত। বছর চারেক ধরে তারা এই কারবার করছে বলে তারা জেরায় কবুল করেছে।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, কল্যাণী, গয়েশপুর, হরিণঘাটা থেকে বার বার অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। আর এই ঘটনাই প্রমাণ করে যে, এই এলাকা অস্ত্র কারবারি ও দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছে। পুলিশের গাফিলতিতেই দুষ্কৃতীদের এতটা বাড়বাড়ন্ত হয়েছে বলেও অভিযোগ।

তার ফল কী হতে পারে তার প্রমাণও মিলেছে মাস দুয়েক আগে। সগুনাতেই ওয়ান শটারের গুলিতে জখম হয় একাদশ শ্রেণির এক ছাত্র। তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছএ। ওই ছাত্রের দাবি, ঝোপের মধ্যে কুড়িয়ে পাওয়া ওই আগ্নেয়াস্ত্র থেকে আচমকা গুলি ছিটকে গিয়েছিল। কিন্তু সে দাবি যে কতটা সত্যি তা আজও পুলিশের অজানা। তবে এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, এই এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র এখন এতটাই সহজলভ্য যে, সামান্য কয়েক হাজার টাকা ফেললেই মিলে যায় ওয়ান শটার।

মাস খানেক আগে কল্যাণীর সগুনায় সিআইডি তল্লাশি চালিয়ে একটি নাইন এমএম পিস্তল-সহ ন’টি ওয়ান শটার, প্রচুর গুলি, বোমা এবং বোমার মশলা বাজেয়াপ্ত করে। গ্রেফতার হয় কুখ্যাত দুষ্কৃতী রাজীব ও তার তিন সাগরেদ। বছর খানেক আগেও এই সগুনাতেই প্রচুর বোমা-গুলি-আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছিল সিআইডি। গ্রেফতার করা হয়েছিল অস্ত্র কারবারে রাজীবের গুরু প্রশান্তকে। সেই ঘটনার মাসখানেকের মধ্যে গয়েশপুরে অস্ত্র কারখানার হদিস মেলে।

দিন দশেক আগে হরিণঘাটাতেই একটি অস্ত্র কারখানার সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। কারখানার মালিক-সহ দু’জন ধরাও পড়েছে। তাদের কাছ থেকে মিলেছিল সাতটি ওয়ান শটার। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মাঝেমধ্যে পুলিশ কিছু অস্ত্র উদ্ধার করে কয়েক জনকে গ্রেফতার করছে বটে। তবে বাস্তবটা কিন্তু আরও ভয়ের।

কী ভাবে অবাধে চলছে অস্ত্রের কারবার? জেলা পুলিশ কর্তাদের কাছে তার কোনও সদুত্তর মেলেনি। জেলার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়াকে এ বিষয়ে জানতে চেয়ে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। জবাব মেলেনি এসএমএসেরও।

Weapons
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy