কলকাতা থেকে হাওড়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে যাচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আচমকাই একটি লরির চাকা খুলে তাঁর গাড়ির সামনে চলে আসে। থেমে যায় মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি। দেখা যায়, লরিটির পিছনে লাগানো অতিরিক্ত চাকাটি খুলে বেরিয়ে গিয়েছে। লরিটি আটক করে মামলা দায়ের করে পুলিশ।
এই ঘটনার পরে প্রশাসনিক বৈঠকে এসে শহরের পথে যানবাহনের বেনিয়ম ও নজরদারির অভাব নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশও যে এই নিয়ে যথেষ্ট সক্রিয় নয়, তার ইঙ্গিতও ছিল মমতার বক্তব্যে। তিনি বলেন, ‘‘গাড়ির চাকাটা দুম করে আমার সামনে চলে এল। চালক সতর্ক না থাকলে দুর্ঘটনা ঘটে যেত। যদি যাত্রিবাহী বাস থাকত, তা হলে তো বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেত। অনেকে মারা যেতেন। এ সবে কারও হাত থাকে না। কিন্তু সাবধান হওয়া জরুরি।’’ বাস-লরি-ট্যাক্সি তো বটেই, জলপথ-পরিবহণও যে নিয়মের তোয়াক্কা করছে না, তা-ও স্পষ্ট বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মাস কয়েক আগে হাওড়াতেই কোনা এক্সপ্রেসওয়ের উপরে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় অভিনেতা পীযূষ গঙ্গোপাধ্যায়ের। মাসখানেক আগে শান্তিপুর থেকে কালনা গঙ্গা পারাপারের সময়ে নৌকাডুবিতে মৃত্যু হয় ২০ জনের। এই সব ঘটনাই যে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বেগ বাড়িয়েছে, তা এ দিন বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ওভারলোডিং, ইচ্ছেমতো গাড়ি চালানো, প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। পুলিশকে এ জন্য কড়া আইন প্রয়োগ করতে হবে। চালকেরা কিছুই কেয়ার করছে না। সব মাতব্বর হয়ে গিয়েছে।’’ রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ করপুরকায়স্থকে পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসার নির্দেশও দেন। ডিজিও জানিয়ে দেন, ইতিমধ্যেই আলোচনা হয়েছে। আরও পদক্ষেপ করা হবে।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী ফেরিঘাটগুলির সমন্বয়ের উপরেও বাড়তি জোর দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘১০টা ছাতা ১০ রকম পদ। আমরা সমস্ত ফেরি ঘাটগুলিকে পরিবহণ দফতরের অধীনে চাইছি।’’
এর উত্তরে পরিবহণ সচিব জানান, ইতিমধ্যেই মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি বৈঠকে কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী তা সবাইকে জানিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। আলাপনবাবু জানান, প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, সুন্দরবন এলাকার সব ফেরিঘাট সুন্দরবন উন্নয়ন দফতরের অধীনে থাকবে। কলকাতা মেট্রোপলিটন এলাকার সব জেটি থাকবে পরিবহণ দফতরের অধীনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy