Advertisement
১৬ মে ২০২৪
Kasba Student Death

কী দেখেছিলেন সে দিন দুপুরে? কসবা থানায় এ বার ডেকে পাঠানো হচ্ছে মৃত ছাত্রের শিক্ষকদের

মঙ্গলবার সকাল থেকেই কসবার ওই স্কুলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ এবং ফরেন্সিক দল। সেখানে ঘটনাটির পুনর্নির্মাণও করা হয়। বুধবার সেখানে নিয়ে যাওয়া হতে পারে ছাত্রের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসককেও।

কসবা রথতলার সিলভার পয়েন্ট হাই স্কুল।

কসবা রথতলার সিলভার পয়েন্ট হাই স্কুল। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১:২০
Share: Save:

কসবার স্কুলে ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় এ বার শিক্ষকদের থানায় ডাকতে চলেছে পুলিশ। সিলভার পয়েন্ট হাই স্কুলের প্রধানশিক্ষক-সহ চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মৃত ছাত্রের বাবা। সেই সূত্রেই জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য সাক্ষী হিসাবে থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছে কসবা স্কুলের কয়েক জন শিক্ষককে। বুধবার তাদের কাছ থেকে ঘটনার দিন কী হয়েছিল তা জানতে চাওয়া হতে পারে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

গত সোমবার কসবার রথতলার সিলভার পয়েন্ট হাই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র শেখ শানের রক্তাক্ত দেহ পাওয়া যায় স্কুলবাড়ির নীচে। এর পরেই মৃত ছাত্রের বাবা শেখ পাপ্পু কসবা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন স্কুলের প্রধানশিক্ষক, সহকারী প্রধানশিক্ষক এবং আরও দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। পুলিশকে তিনি জানান, তাঁর ছেলেকে মারধর করেছেন স্কুলের শিক্ষকেরা। তাতেই মৃত্যু হয়েছে তার। এমনকি, স্কুল কর্তৃপক্ষ বছরখানেক আগে তাঁকে ‘চিনে রাখার’ হুমকি দিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন পাপ্পু। যদিও মঙ্গলবার প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা এই ঘটনায় খুনের প্রমাণ পাননি বরং আত্মহত্যারই ইঙ্গিত পেয়েছেন। বুধবার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে কসবার ওই স্কুলে এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়ে যেতে পারে পুলিশ। সূত্রের খবর, ওই চিকিৎসকই মৃত পড়ুয়া শানের দেহের ময়নাতদন্ত করেছিলেন। ঘটনাটি যেখানে ঘটেছিল, সেই জায়গাটি তিনি পরীক্ষা করে দেখবেন বলেও পুলিশ সূত্রে খবর।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকাল থেকেই কসবার ওই স্কুলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ এবং ফরেন্সিক দল। সেখানে ঘটনাটির পুনর্নির্মাণও করা হয়। ছ’তলা থেকে একটি পুতুল মাটিতে ফেলে দেখেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। মাপজোক করেও দেখেন গোটা এলাকা। অন্য দিকে, ছাত্রেক মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে আরও একটি তথ্য প্রকাশ্যে আসে মঙ্গলবার। পুলিশ সূত্রে খবর, ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় এফআইআর দায়ের হওয়ার আগে সোমবার স্কুলের প্রিন্সিপাল একটি ইমেল পাঠিয়েছিলেন কসবা থানার ওসিকে। ওই ইমেলে বলা হয়েছিল, ‘‘একটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে। একটি ছাত্র ঝাঁপ দিয়েছে স্কুলের বারান্দা থেকে।’’ কেন ঝাঁপ তার কারণও জানানো হয়েছিল ইমেলে। তাতে লেখা ছিল, ‘‘ছাত্রদের অঙ্কের প্রজেক্ট দেওয়া হয়েছিল। সোমবার সেই প্রজেক্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল। শেখ শান নামের এক ছাত্র প্রজেক্ট জমা না দেওয়ায় তার বাবাকে বিষয়টি জানানোর কথা বলেন শিক্ষক। পাল্টা সে শিক্ষকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। এর পরে তাকে নিজেদের বিশ্রাম নেওয়ার ঘর স্টাফ রুমে ডেকে আনেন শিক্ষক। বাইরে অপেক্ষা করতে বলেন। ২ মিনিট পরে তাকে ক্লাসে চলে যেতে বলার পরেই ছাত্রটি হঠাৎ ঝাঁপ দেয়।’’

পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, স্কুলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই করে তারা দেখেছে, স্কুলবাড়ির ছ’তলায় যেখানে বারান্দায় গ্রিল বসানোর কাজ চলছিল সেখানকারই করিডোরে সোমবার দুপুরে শেষ বার দেখা গিয়েছিল শানকে। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই স্কুলের নীচে মেলে তার রক্তাক্ত দেহ। ফলে ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kasba Student Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE