Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Visva Bharati University

বিশ্বভারতীতে মোদীর ভাষণ, চলছে তরজা

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অংশগ্রহণ না করায় তাঁর বিরুদ্ধে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ‘অপমান’ করার অভিযোগ তুললেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।

বিশ্বভারতীতে ভার্চুয়াল ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি পিটিআই।

বিশ্বভারতীতে ভার্চুয়াল ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:২৮
Share: Save:

বিশ্বভারতীতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভার্চুয়াল ভাষণকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সরগরম হয়ে উঠল রাজ্য রাজনীতি। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের ‘ভুল’ ধরে খোঁচা দিলেন তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বিপরীতে বিশ্বভারতীর ওই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অংশগ্রহণ না করায় তাঁর বিরুদ্ধে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ‘অপমান’ করার অভিযোগ তুললেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য জানান, তাঁকে বিশ্বভারতীতে এ দিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি।

বিশ্বভারতীতে মোদীর এ দিনের ভাষণ নিয়ে ব্রাত্যবাবুর অভিযোগ, ‘‘প্রধানমন্ত্রী ভাষণে রবীন্দ্রনাথের মেজদাকে বড়দা বলেছেন। তাঁর স্ত্রী জ্ঞানদানন্দিনীকে বলেছেন জ্ঞানন্দিনী। প্রধানমন্ত্রী বার বার রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে গুজরাতের যোগ দেখাতে চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জ্ঞানদানন্দিনী গুজরাতি মহিলাদের থেকে ভিন্ন ভাবে শাড়ি পরা শিখেছিলেন। এটা অর্ধসত্য। তিনি এটা পার্সি নারীদের থেকেও শিখেছিলেন।’’

বিশ্বভারতীর প্রবীণ আশ্রমিক সুবোধ মিত্রও বলেন, ‘‘উনি তো শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, উনি একই সঙ্গে বিশ্বভারতীর আচার্য। ওঁর রবীন্দ্রনাথ, তাঁর পরিবার ও তাঁর আদর্শ সম্পর্কে পড়াশোনা করা উচিত। উনি তো সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রীর নামও ভুল উচ্চারণ করেছেন! বিশ্বভারতীর শতবর্ষ উদ্‌যাপনের বক্তৃতায় যদি এমন তথ্যগত ভ্রান্তি থাকে, তবে তা লজ্জার। যে উদ্দেশ্যে তিনি সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরকে টেনে এনেছেন, সেটাও হাস্যকর। হঠাৎ করে ঠাকুর পরিবারের সঙ্গে গুজরাতের সম্পর্ক টানার কী প্রয়োজন ছিল, সেটা আমার বোধগম্য হল না। যিনি বিশ্বভারতী সম্পর্কে জানেন না, রবীন্দ্রনাথকে বোঝেন না, তার বিশ্বভারতীর মতো প্রতিষ্ঠানের আচার্য হওয়ার যোগ্যতা নেই।’’

আরও পড়ুন: ‘আত্মনির্ভর ভারত’ থেকে ‘ভোকাল ফর লোকাল’, রবীন্দ্র-দর্শনে আশ্রয় মোদীর

রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য অবশ্য ব্রাত্যবাবুর আক্রমণের জবাবে বলেছেন, ‘‘গুজরাতের এক জন মানুষের জ্ঞানদানন্দিনী উচ্চারণে সামান্য ভুল হয়ে থাকতে পারে। অধ্যাপক ব্রাত্য বসু শুধরে দিয়েছেন। কিন্তু তাঁর সামনে যে বিধানসভার ভিতরে-বাইরে রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে অজস্র ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে এবং নানা বিষয়ে বহু ভুল উচ্চারণ করা হয়ে থাকে, সে সবের প্রতিবাদ করার সৎ সাহস ওঁর নেই কেন?’’ প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতায় রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে গুজরাতের যোগ নিয়ে শমীকবাবুর বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যদি উত্তরপ্রদেশের কোথাও বক্তৃতা করেন, তিনি কি সেখানকার কবি-সাহিত্যিকের কথা বলতে গিয়ে কবি নিরালার বাংলা-যোগ টেনে আনবেন না?’’

আরও পড়ুন: পাল্টা কৃষক জমায়েতে আজ বক্তৃতা মোদীর

বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য সবুজকলি সেনও বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী সম্ভবত, দাদা অর্থেই ‘বড়ে ভাইয়া’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করেছিলেন, বড় দাদা বা মেজ দাদা অর্থে নয়। এমনিতেও মেজ শব্দের হিন্দি প্রতিশব্দের বিশেষ চল হিন্দিভাষীদের মধ্যে আমি দেখিনি। আমার মনে হয়, উনি ভুল কিছু বলেননি। আর প্রধানমন্ত্রী গুজরাতের মানুষ। জ্ঞানদানন্দিনী শব্দটি উচ্চারণ করতে গিয়ে তাঁর হোঁচট খাওয়ার মধ্যে অস্বাভাবিকতা কিছু নেই। অনেক বাঙালিও জ্ঞানদানন্দিনী শব্দ উচ্চারণ করতে গিয়ে হোঁচট খান।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Visva Bharati University Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE