Advertisement
E-Paper

হাতের নাগালে কান্দারি, ঢেলে বিকোচ্ছে উত্তরে

ধরা ছোঁওয়ার বাইরে থাকা ডালিম এ বার উত্তরবঙ্গের ঘরে ঘরে পৌঁছচ্ছে। শুধু রঙে, নামে, জাতে তার ধরন ভিন্ন। অধিক ফলন হওয়ায় নাসিকের কান্দারি আর মৃদুলা এ বার এ রাজ্যেও। আমাদের রাজ্যের ডালিম গুজরাট, রাজস্থানেও অবশ্য ওই দুই নামেই পরিচিত।

রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৬ ০১:৩২
দেখতে ডালিমের মতো। কিন্তু ডালিম নয়। এ ফলের নাম কান্দারি। জলপাইগুড়ির বাজারে বিকোচ্ছে রোজই। রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

দেখতে ডালিমের মতো। কিন্তু ডালিম নয়। এ ফলের নাম কান্দারি। জলপাইগুড়ির বাজারে বিকোচ্ছে রোজই। রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

ধরা ছোঁওয়ার বাইরে থাকা ডালিম এ বার উত্তরবঙ্গের ঘরে ঘরে পৌঁছচ্ছে। শুধু রঙে, নামে, জাতে তার ধরন ভিন্ন। অধিক ফলন হওয়ায় নাসিকের কান্দারি আর মৃদুলা এ বার এ রাজ্যেও। আমাদের রাজ্যের ডালিম গুজরাট, রাজস্থানেও অবশ্য ওই দুই নামেই পরিচিত। এত দিনের দুষ্প্রাপ্য ফল এ বার হাতের নাগালে হওয়ায় শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি-সহ উত্তরবঙ্গের বাজারে ঢেলে বিক্রি হচ্ছে নাসিকের এই ডালিম।

আমাদের এখানে ডালিম ব্যবসায়ীক ভিত্তিতে চাষ হয় না। মাঝে মধ্যে দু’একটি বাড়িতে ডালিমের গাছ দেখতে পাওয়া যায়। গুজরাট এবং রাজস্থানের ফল এ দিকে আসে না। কিন্তু নাসিকের ডালিম শিলিগুড়ির পাইকারি ফলের বাজারে আসে। নাসিকে তা ব্যবসায়িক ভিত্তিতেই চাষ হয়।

উত্তরবঙ্গে এত দিন ডালিম ছিল দুষ্প্রাপ্য। প্রতি কিলোগ্রাম দু’শো টাকা থেকে তিনশো টাকা দরে উত্তরবঙ্গের যে কোনও খুচরো বাজারে বিক্রি হতো। শিলিগুড়ির পাইকারি ফল ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা যায় যে, পাঁচ বছর আগে নাসিকের ডালিমের দাম আরও বেশি ছিল। আমদানিও কম ছিল। শিলিগুড়ির পাইকারি ফলের বাজারে ডালিম বিক্রি হতো প্রতি কিলোগ্রাম দুশ থেকে দুশো পঞ্চাশ টাকা দরে। খুচরো বাজারে বিক্রি হতো কমপক্ষে তিনশো টাকা প্রতি কিলোগ্রাম দরে। শিলিগুড়ির পাইকারি সব্জি বাজারে ডালিমের আমদানি হতো বড়জোর ২০০ প্যাকেট। প্রতিটি প্যাকেট ১০ কিলোগ্রামের হলে আমদানি হতো দু’হাজার কিলোগ্রাম বা দুই টন।

এ বছর সেই আমদানি বেড়ে হয়েছে ৩০ টন। এখন প্রতিদিন শিলিগুড়ির ফলের বাজারে দু’টি ট্রাকে ১৫ টন করে ৩০ টন নাসিকের ডালিম আসছে। তা চলে যাচ্ছে উত্তরবঙ্গের সমস্ত বাজারে। শিলিগুড়ির পাইকারি ফলের বাজারে এখন নাসিকের ডালিমের দাম প্রতি কিলোগ্রাম ৫০-৯০ টাকার মধ্যে। যত ছোট সাইজ হবে তার দাম তত কম এবং যত বড় সাইজ হবে তার দাম তত বেশি। জলপাইগুড়ির খুচরো ফলের বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০-১১০ টাকার মধ্যে।

দাম কমে যাওয়ার ফলে আগে যে ফল দামের জন্য ছোঁয়া যেত না এখন তাই এসে গেছে হাতের নাগালের মধ্যে। জলপাইগুড়ির দিনবাজারের খুচরো ফলের ব্যবসায়ী গণেশ সরকার, বিশু দাস বলেন, “শিলিগুড়ির পাইকারি ফলের বাজারে দাম কমে যাওয়ার ফলে আমরা কম দামে বিক্রি করতে পারছি। এ বছর কমলার অভাব নাসিকের ডালিম পূরণ করে দিয়েছে।” শিলিগুড়ির পাইকারি ফলের ব্যবসায়ী অনন্ত প্রসাদ বলেন, “নাসিকে ফল বেশি হওয়ার জন্য এ বছর আমদানি বেশি হয়েছে। দাম কমেছে। পাঁচ বছর আগে আমরা এত কম দাম ভাবতেই পারতাম না।”

নাসিকের ডালিম দু’রকমের। একটির নাম কান্দারি, অন্যটি মৃদুলা। কান্দারির বাইরের রঙ কালচে লাল। বাইরের ছাল নরম। ভেতরের দানাও লাল। মৃদুলার বাইরের রঙ লাল। ভেতরের দানা হালকা লাল। এখন উত্তরবঙ্গের বাজারে কান্দারি এবং মৃদুলা দু’টিই পাওয়া যাচ্ছে।

জলপাইগুড়ি শহরের শিক্ষিকা বনানী মুখোপাধ্যায়ের শারীরিক করণে রোজ ডালিম খান। ডাক্তারের বিধানে পরিবারের সকলে মিলে ডালিম খেতেন। তিনি বলেন, “এত দিন দাম বেশি ছিল। এ বছর এত ডালিম উঠেছে যে ভাবতেই পারছি না। এখন প্রচুর ডালিম খেতে পারছি।”

জলপাইগুড়ির ওষুধের ব্যবসায়ী গোপাল দত্ত এত দিন ডালিমের দিকে ফিরেও তাকাতেন না। তিনি বলেন, “অন্য বছর অন্য ফলের তুলনায় এর দাম খুব বেশি ছিল। এ বছর দাম কমে যাওয়ার জন্য নিয়মিত খাওয়া যাচ্ছে।”

pomegranate state news
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy