টাকা জমা দিতে হয়রানি। টাকা তুলতে তার থেকেও বেশি হয়রানি। ডাকঘরে আমানতকারীদের এই সমস্যার সুরাহা না-হলে রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করার হুমকি দিলেন সাধন পাণ্ডে। রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী তিনিই।
ডাকঘরের বিভিন্ন প্রকল্পে টাকা জমা দিতে এবং তুলতে গিয়ে আমানতকারীদের চূড়ান্ত হয়রানির সূত্রপাত গত বছর। চলতি বছরের মার্চ থেকে সেটা তুঙ্গে উঠেছে। অভিযোগ, মেয়াদ ফুরোনোর পরেও টাকা ফেরত পেতে মাসের পর মাস গড়িয়ে যাচ্ছে। বেশি মুশকিল অবসারপ্রাপ্তদের। টাকা
তুলতে না-পেরে সংসারে আর্থিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে তাঁদের। ভুক্তভোগীদের
হয়েই সওয়াল করেন মন্ত্রী।
বুধবার ডাকঘরের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন সাধনবাবু। তিনি তাঁদের বলেন, এই সমস্যার কারণ যা-ই হোক, বিজ্ঞাপন দিয়ে তা জানানো উচিত ছিল। মন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, ‘‘মেয়াদ ফুরোনোর পরে আমানতকারীরা যাতে দ্রুত টাকা তুলতে পারেন, তার যথাযথ ব্যবস্থা না-হলে ডাকঘরের বিরুদ্ধে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করা হবে।’’ রাজ্যের পোস্টমাস্টার জেনারেলের (পিএমজি) অফিসের কর্তারা জানান, মন্ত্রীর বক্তব্য কেন্দ্রীয় যোগাযোগ মন্ত্রককে জানানো হবে।
প্রযুক্তিগত ত্রুটিতে ঠিকমতো কাজ না-হওয়ায় ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেট, মাসিক সঞ্চয়-সহ নানা প্রকল্পে রাখা টাকা মেয়াদ শেষেও তুলতে পারছেন না হাজার হাজার আমানতকারী। ডাকঘরে গিয়ে তাঁদের শুনতে হচ্ছে, আজ নয়, কাল আসুন। তবু মিলছে না টাকা। অনেকেই এই নিয়ে ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের শরণাপন্ন হয়েছেন। তাঁদের হয়েই ক্রেতা সুরক্ষা ভবনে ডাককর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন সাধনবাবু। তিনি বলেন, ‘‘বৃদ্ধ বয়সে টাকা না-পেয়ে অনেকে দিশাহারা। ডাকঘরে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। কোথাও কোথাও বসার জায়গা তো দূরের কথা, ছাউনি পর্যন্ত নেই।’’
ডাক বিভাগের অফিসারেরা কেন্দ্রকে পুরো বিষয়টি জানানোর আশ্বাস দেন। তাতে মন্ত্রী আদৌ আশ্বস্ত হয়েছেন, এমন কোনও প্রমাণ মেলেনি। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, প্রযুক্তি-বিভ্রাটই হোক বা আর যা-ই হোক, বিজ্ঞাপন দিয়ে সমস্যার কথা মানুষকে জানানো যেতে পারত। প্রতিটি ডাকঘরে নোটিস টাঙিয়েও তা জানানো যেত। তা হলে বৃদ্ধবৃদ্ধা-সহ আম-গ্রাহককে হয়রান হতে হতো না। সমস্যার সমাধানে কয়েকটি পথ বাতলান সাধনবাবু। তাঁর প্রস্তাব, মেয়াদের টাকা দিতে দেরি হলে বাড়তি সুদ দেওয়া হোক। ডাক বিভাগের অফিসারেরা মন্ত্রীকে আশ্বাস দেন, এই প্রস্তাবও কেন্দ্রকে জানানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy