Advertisement
E-Paper

তিন দিন আলু বিক্রি বন্ধ, সিদ্ধান্ত ব্যবসায়ীদের

আলু নিয়ে এ বার সরকারের সঙ্গে সংঘাতের পথেই যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। রাজ্য সরকার প্রতিদিন ১২ টাকা কেজি দরে ৩০০ টন আলু কেনার যে প্রস্তাব দিয়েছে, ক্ষতির আশঙ্কায় তাতে আপত্তি তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। তাই সেপ্টেম্বরের প্রথম তিন দিন রাজ্য জুড়ে আলু কেনা-বেচায় কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আলু ব্যবসায়ীদের অন্যতম সংগঠন ‘প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি’। পাশাপাশি, মিলনমেলা প্রাঙ্গণে আলু পচিয়ে ফেলায় সরকারের কাছে দু’কোটি টাকা ক্ষতিপূরণও দাবি করেছেন তারা।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৫৯

আলু নিয়ে এ বার সরকারের সঙ্গে সংঘাতের পথেই যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

রাজ্য সরকার প্রতিদিন ১২ টাকা কেজি দরে ৩০০ টন আলু কেনার যে প্রস্তাব দিয়েছে, ক্ষতির আশঙ্কায় তাতে আপত্তি তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। তাই সেপ্টেম্বরের প্রথম তিন দিন রাজ্য জুড়ে আলু কেনা-বেচায় কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আলু ব্যবসায়ীদের অন্যতম সংগঠন ‘প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি’। পাশাপাশি, মিলনমেলা প্রাঙ্গণে আলু পচিয়ে ফেলায় সরকারের কাছে দু’কোটি টাকা ক্ষতিপূরণও দাবি করেছেন তারা।

বৃহস্পতিবার মূলত দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির আলু-ব্যবসায়ীদের নিয়ে বর্ধমানের বেচারহাটে ‘প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি’র অফিসে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের শেষে কর্মবিরতির কথা ঘোষণা করেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি শান্তনু মান্না। তাঁদের দাবি, কেজিপ্রতি আলু বাজারে পাঠাতে যেখানে ১৬-১৭ টাকা খরচ হচ্ছে, সেখানে কোনও ভাবেই রাজ্যকে ১২ টাকা কেজি দরে আলু দেওয়া সম্ভব নয়। সরকারের প্রস্তাব মেনে নিলে প্রতিদিন প্রায় ১৩ লক্ষ টাকার ক্ষতি হবে। সেই ক্ষতির দায় কে নেবে, তা নিয়ে সংগঠনের কর্তারা প্রশ্ন তোলেন।

আলু ব্যবসায়ীদের তিন দিনের কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নিয়ে অবশ্য রাজ্য সরকার নরম মনোভাব দেখাতে রাজি নয়। আজ, শুক্রবার নবান্নে এ বিষয়ে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী আলু ব্যবসায়ী এবং রাজ্যের মানুষের স্বার্থেই ৭০০ টন আলু প্রতিদিন বাইরে পাঠানোর প্রস্তাব দেন এবং ৩০০ টন আলু প্রত্যেক দিন ১২ টাকা কেজি দরে সরকারকে দেওয়ার জন্য আর্জি জানান। আলু ব্যবসায়ীরা তা অমান্য করে তিন দিনের ধর্মঘট ডেকে ঠিক করেননি। আলোচনার দরজা এখনও খোলা আছে।”

চলতি মরসুমের গোড়ায় আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় ভিন্ রাজ্যে আলু পাঠানোতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে রাজ্য সরকার। তার পরে অবশ্য অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের অনুরোধে সেই নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল হয়। কিন্তু তাতেও আলুর দাম বেলাগাম হয়ে পড়ায় রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্স আলু ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠকে বসে গত ২৫ অগস্ট। সেই বৈঠকে রাজ্য শর্ত আরোপ করে, ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন ৭০০ টন আলু ভিন্ রাজ্যে পাঠাতে পারবেন, পাশাপাশি রাজ্য সরকারকে ১২ টাকা কেজি দরে প্রতিদিন ৩০০ টন আলু দিতে হবে।

সে দিন কোনও মতামত না জানালেও বৃহস্পতিবার কর্মবিরতির সিদ্ধান্তের কথা জানান ব্যবসায়ীরা। সভাপতি বলেন, “ওই সভায় আমাদের অল্প ক’জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। সে দিনের বৈঠকে বলে হয়, ১২ টাকা কেজি দরে ৩০০ মেট্রিক টন আলু দিতে না পারলে লেনদেন বন্ধ রাখতে হবে। তাই আমরা লেনদেন বন্ধ রাখছি। তবে এখনও সময় আছে, রাজ্য আমাদের সম্পর্কে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনায় ডাকলে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে।”

তবে, তিন দিনের কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এ দিন ব্যবসায়ীদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দেয়। অনেকে কর্মবিরতির আগে সরকারকে চরম সময়সীমা দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেন। তাঁরা মনে করেন, রাজ্যের মানুষই ওই তিন দিন আলুর অভাবে সমস্যায় পড়বেন। সরবরাহ কম থাকায় আলুর দামও বাজারে বাড়বে। তবে, সম্মেলনে আসা দক্ষিণবঙ্গের আটটি জেলার শতাধিক প্রতিনিধি হাত তুলে ভোট দেওয়ার ঢঙে কর্মবিরতির দিন ঘোষণার দাবি জানাতে থাকেন। তখন সর্বসম্মতিক্রমে ঠিক হয়, ১ সেপ্টেম্বর থেকে তিন দিনের কর্মবিরতি পালিত হবে। কৃষি বিপণন মন্ত্রী অবশ্য রাজ্যে আলু নিয়ে চলতি সমস্যার জন্য কেন্দ্রকেই দায়ী করেছেন। তাঁর অভিযোগ, পঞ্জাব এবং উত্তরপ্রদেশের আলু বাইরে যাচ্ছে। তাই এ রাজ্যের উপরে চাপ পড়ছে। কেন্দ্র কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

potato 3days westbengal state news online news latest news online latest news
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy