E-Paper

‘কোল্ড চেনে’ দিঘার প্রসাদী খোয়া জেলায় যাবে সড়ক ও বিমানে

দ্রুত পচনশীল খাদ্যদ্রব্য কিংবা ওষুধপত্র, টিকা মূলত এই ‘কোল্ড চেন’ ব্যবস্থায় স্থানান্তরিত হয়। নির্দিষ্ট জিনিসটি সংরক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রাখতে হয়। জিনিসটি তৈরির পরে সরবরাহ, মজুত এবং ব্যবহার পর্যন্ত সেই তাপমাত্রা বা ‘কোল্ড চেন’ বজায় রাখতে হয়।

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২৫ ০৭:৫৩
দিঘার জগন্নাথ মন্দির।

দিঘার জগন্নাথ মন্দির। —ফাইল চিত্র।

এ বার রথযাত্রায় বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছবে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের প্রসাদ। প্রতিটি জেলায় স্থানীয় ভাবেই প্রসাদের মিষ্টি তৈরি হবে। তবে তাতে মিশবে দিঘার মন্দিরের প্রসাদী খোয়া (মূল প্রসাদ)। সেই প্রসাদী খোয়া আজ, সোমবার থেকেই জেলায় জেলায় পাঠানো শুরু হচ্ছে ‘কোল্ড চেন’ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে। দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে তা পৌঁছবে সড়কপথে, উত্তরবঙ্গে যাবে বিমানে। সবটাই হবে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে।

দ্রুত পচনশীল খাদ্যদ্রব্য কিংবা ওষুধপত্র, টিকা মূলত এই ‘কোল্ড চেন’ ব্যবস্থায় স্থানান্তরিত হয়। নির্দিষ্ট জিনিসটি সংরক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রাখতে হয়। জিনিসটি তৈরির পরে সরবরাহ, মজুত এবং ব্যবহার পর্যন্ত সেই তাপমাত্রা বা ‘কোল্ড চেন’ বজায় রাখতে হয়। না হলে তার মান ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এ ক্ষেত্রে নির্দেশ রয়েছে, প্রসাদী খোয়া আনতে এমন গাড়ি পাঠাতে হবে, যাতে ‘কোল্ড চেন’ বজায় থাকে। বাক্সের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে রাখতে বরফও ব্যবহার করা যেতে পারে।

আজ, রবিবার সকালে কলকাতা থেকে ‘ফ্রিজ়ার ভ্যানে’ খোয়া পৌঁছবে মন্দিরে। তার পরে বিশেষ পুজো করে ভোগ নিবেদন করা হবে। দিঘার জগন্নাথ মন্দির পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ইসকনের কলকাতা শাখার সহ-সভাপতি রাধারমণ দাস বলেন, “রাজ্যের ২৩টি জেলায় পাঠানোর আগে ওই খোয়া জগন্নাথদেবের কাছে পুজো করা হবে।” প্রশাসনিক উদ্যোগে মন্দিরে খোয়ার বাক্স আনা-নেওয়ার গোটা বিষয়টি সমন্বয় করবেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি। তিনি বলেন, “নবান্ন থেকে যা নির্দেশ রয়েছে, সেই মাফিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।”

রাজ্য সরকারের এই আয়োজন ঘিরে সরব বিরোধীরা। এই প্রসাদের সঙ্গে মন্দিরের সম্পর্ক নেই বলে আগেই দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যও শনিবার বলেছেন, “আগে উনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) প্রতিবাদ বিতরণ করতেন। এখন পেঁড়া বিতরণ করছেন।” তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের পাল্টা মন্তব্য, “এঁরা (বিজেপি নেতারা) হিন্দু? দেশ-বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ আসছেন। ওঁদের সহ্য হচ্ছে না এটা।”

প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রতি জেলায় ১০ কেজি প্রসাদী খোয়া যাবে একটি কার্টন বা বড় বাক্সে। খোয়ার ১০টি মুখবন্ধ প্যাকেট থাকবে তাতে, এক কেজি করে প্রসাদী খোয়া প্রতিটিতে থাকবে। পুজোর পরেই তা জেলায় জেলায় পাঠানো শুরু হবে। তিনটি বাক্স দিঘার মন্দিরেই থাকবে। সেখান থেকে প্রসাদী খোয়া যাবে দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে। বাকি ২৭টি বাক্স ‘ফ্রিজ়ার ভ্যানে’ কলকাতায় ফিরবে।

কাল, মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির জন্য সাতটি বাক্স কলকাতা থেকে বিমানে শিলিগুড়ি পৌঁছবে। বিমানে থাকবেন তথ্য-সংস্কৃতি দফতরের এক আধিকারিক। পরে শিলিগুড়ির মহকুমাশাসকের অফিস চত্বর থেকে প্রসাদী খোয়ার বাক্স নেবেন দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর— এই সাত জেলার প্রতিনিধিরা। আর দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম— এই ১২টি জেলা কলকাতার রবীন্দ্র সদন চত্বর থেকে প্রসাদী খোয়া সংগ্রহ করবে মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টের মধ্যে।

প্রসাদী খোয়া জেলায় পৌঁছোনোর পরে তা মিশিয়ে স্থানীয় মিষ্টির দোকানে তৈরি হবে পেঁড়া এবং গজা। সেই প্রসাদ ও দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের ছবি আগামী ২৭ জুন রথযাত্রার আগেই বাড়ি বাড়ি পৌঁছবে। ঠিক কবে থেকে প্রসাাদ বিতরণ শুরু হবে, তার চূড়ান্ত নির্দেশ আসেনি। তবে অনুমান, ১৬-১৭ জুন নাগাদ কাজটি শুরু হতে পারে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “আমাদের জেলায় প্রায় সাত লক্ষ পরিবার রয়েছে। সব বাড়িতে রেশন সামগ্রীর মতোই পৌঁছবে মন্দিরের ছবি এবং প্রসাদ।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Digha Jagannath Temple Digha Jagannath Mandir Prasad

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy