Advertisement
২২ মার্চ ২০২৩

ন্যাপকিন না পরে প্রতিবাদ প্রেসিডেন্সিতে

বর্ষার এই স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে এই পরিস্থিতিতে ক্লাসও করেছেন স্নাতক তৃতীয় বর্ষের ওই ছাত্রী। তাঁর বক্তব্য, ক্যাম্পাসে মেয়েদের কমন রুমে মাত্র একটি ভেন্ডিং মেশিন আছে। কিন্তু সেই মেশিন থেকে যে স্যানিটারি ন্যাপকিন পাওয়া যায় তা খুবই নিম্নমানের। তাই তাঁর এই প্রতিবাদ। যদিও অনেকের মতে প্রতিবাদের ধরনটি তেমন দৃষ্টিনন্দন নয়, ছাত্রীটির পক্ষে স্বাস্থ্যকরও নয়।

আন্দোলন: প্রেসিডেন্সিতে সেই ছাত্রী। নিজস্ব চিত্র

আন্দোলন: প্রেসিডেন্সিতে সেই ছাত্রী। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৭ ০৪:৫০
Share: Save:

ক্যাম্পাসে স্যানিটারি ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিনের সংখ্যা অপ্রতুল। ভেন্ডিং মেশিন থেকে যে স্যানিটারি ন্যাপকিন পাওয়া যায় তার মানও খুব খারাপ। এই অভিযোগে আন্দোলনে নামলেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। সোমবার ঋতুস্রাবের সময় স্যানিটারি ন্যাপকিন না পরেই প্রতিবাদ জানালেন তিনি।

Advertisement

বর্ষার এই স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে এই পরিস্থিতিতে ক্লাসও করেছেন স্নাতক তৃতীয় বর্ষের ওই ছাত্রী। তাঁর বক্তব্য, ক্যাম্পাসে মেয়েদের কমন রুমে মাত্র একটি ভেন্ডিং মেশিন আছে। কিন্তু সেই মেশিন থেকে যে স্যানিটারি ন্যাপকিন পাওয়া যায় তা খুবই নিম্নমানের। তাই তাঁর এই প্রতিবাদ। যদিও অনেকের মতে প্রতিবাদের ধরনটি তেমন দৃষ্টিনন্দন নয়, ছাত্রীটির পক্ষে স্বাস্থ্যকরও নয়। বিষয়টি জেনে রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক দেশে প্রতিবাদের অধিকার সকলেরই আছে। কিন্তু এই ভাবে প্রতিবাদ না করে অন্য ভাবেও করা যেত।’’

পাল্টা যুক্তি হিসেবে কেউ কেউ মণিপুরের মহিলাদের নগ্ন প্রতিবাদের দৃষ্টান্ত স্মরণ করিয়েছেন। যদিও শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তীর বক্তব্য, মণিপুরে সেনাবাহিনীর অত্যাচার সহ্য করতে করতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল মেয়েদের। তার পর তাঁরা ওই রকম প্রতিবাদের পথে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘ছাত্রীটির অভিযোগকে আমি সমর্থন করছি। ধরেই নিচ্ছি ছাত্রীটি বারবার কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও সদর্থক সাড়া পায়নি। কিন্তু তা হলেও আমি প্রতিবাদের এই পথ বেছে নিতাম না। অন্য ভাবে করতাম।’’

প্রেসিডেন্সির উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া অবশ্য এ দিন জানিয়েছেন, এই নিয়ে কোনও অভিযোগ ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের জানাননি। ক্যাম্পাসে যে ভেন্ডিং মেশিন রয়েছে তাতে এক সঙ্গে ৫০০টি স্যানিটারি ন্যাপকিন ভরা থাকে। তার মান খারাপ নিয়ে কোনও অভিযোগ তাঁদের কাছে আসেনি। তিনি বলেন, ‘‘দু’বছর আগে রাজ্যে আমরাই প্রথম এই ভেন্ডিং মেশিন বসাই। আজ হঠাৎ শুনি একটি ছাত্রী আন্দোলন শুরু করেছে। আমি সত্যি অবাক!’’

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আজকাল স্যানিটারি ন্যাপকিনের ভেন্ডিং মেশিন থাকে জেনে বিস্মিত হলেন অভিনেত্রী পাওলি দাম। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমাদের সময় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে এ তো ভাবাই যেত না! সব কিছুতেই একটু ধৈর্য্য ধরা বোধহয় প্রয়োজন। আর এই ভাবে স্যানিটারি ন্যাপকিন না পরে থাকাটা ছাত্রীটির স্বাস্থ্যের পক্ষেও তো ভাল নয়।’’ স্ত্রীরোগ চিকিৎসক অভিনিবেশ চট্টোপাধ্যায়ও এদিন জানালেন, ঋতুকালীন অবস্থায় স্যানিটারি ন্যাপকিন না পরে থাকলে সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে ছাত্রীটির বক্তব্য, সব কিছু জেনেবুঝে কর্তৃপক্ষের টনক নড়াতেই তাঁর এই প্রতিবাদ। মঙ্গলবার তিনি স্বাভাবিক ভাবেই এসে কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে স্মারকলিপি দেবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.