Advertisement
E-Paper

প্রতিরোধে ফাঁকি, ফের হাজির গোদ

একটানা প্রতিরোধ কর্মসূচি না-চালানোর জেরে রাজ্যের উদ্বেগ বাড়িয়ে হাজির হয়েছে ফাইলেরিয়া বা গোদ। এনভিবিডিসিপি জানাচ্ছে, গোদের প্রকোপ রয়েছে বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, কোচবিহার, নদিয়া, জলপাইগুড়ি-সহ ১২টি জেলায়।

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:২৩

সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ কর্মসূচি ধারাবাহিক ভাবে না-চালালে ফল কী হয়, ন্যাশনাল ভেক্টর বোর্ন ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম (এনভিবিডিসিপি)-এর রিপোর্টেই তা ধরা পড়েছে।

একটানা প্রতিরোধ কর্মসূচি না-চালানোর জেরে রাজ্যের উদ্বেগ বাড়িয়ে হাজির হয়েছে ফাইলেরিয়া বা গোদ। এনভিবিডিসিপি জানাচ্ছে, গোদের প্রকোপ রয়েছে বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, কোচবিহার, নদিয়া, জলপাইগুড়ি-সহ ১২টি জেলায়। কোচবিহারে ফাইলেরিয়ার প্রকোপ কমে গিয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হলেও পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য সংগ্রহের পরে দেখা যায়, সেখানে ওই রোগের প্রকোপ রয়েছে।

ফাইলেরিয়া মশাবাহিত রোগ। এই রোগের জীবাণু ‘লিম্ফ’ নামে একটি দেহরসের সংবহনে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে লিম্ফ দেহের উপরের অংশে উঠতে পারে না। পায়ের কিছু গ্রন্থি ফুলে যায়। হাঁটাচলায় সমস্যা হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র রিপোর্ট বলছে, যে-সব রোগের বিষয়ে এ দেশে সচেতনতার অভাব সব চেয়ে বেশি, তার প্রথম সারিতেই রয়েছে ফাইলেরিয়া। অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিশু বয়সেই এই রোগের সংক্রমণ ঘটে। কিন্তু সচেতনতার প্রচার তেমন না-থাকায় রোগটা যে গোদ, অধিকাংশ বাবা-মা তা বুঝতে পারেন না। ২০-২৫ বছর বয়সে রোগের প্রকোপ বাড়তে থাকে। তখন আর চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া যায় না। আক্রান্তেরা কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যে ফাইলেরিয়ার প্রকোপ কমাতে কেন্দ্রের নির্দেশ অনুযায়ী ২০০৪ সাল থেকে মাস ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন প্রোগ্রাম (এমডিএ) চালানো হয়। যে-সব জেলায় ফাইলেরিয়ার প্রাদুর্ভাব আছে, সেখানকার বাসিন্দাদের জন্য ওষুধ দেওয়া হয় ওই কর্মসূচিতে। গর্ভবতী মহিলা এবং আড়াই বছরের কম বয়সের শিশু ছাড়া সকলকেই একটি ওষুধ সরকারের তরফ থেকে দেওয়া হত। যাতে মশার মাধ্যমে এই সংক্রামক রোগ ছড়াতে না-পারে।

কিন্তু কর্মসূচি থাকা সত্ত্বেও পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে না কেন?

স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তা জানান, বেশ কয়েক বছর এমডিএ প্রোগ্রাম ধারাবাহিক ভাবে চলেনি। তাই বিভিন্ন জেলায় রোগ নির্মূল হচ্ছে না। ‘‘কেন্দ্র নিয়মমাফিক ওষুধ পাঠাতে পারেনি। তার জেরেই কিছু জায়গায় ধারাবাহিক কাজ করা যায়নি,’’ বলেন রাজ্যের জনস্বাস্থ্য বিভাগের এক শীর্ষ কর্তা।

ওষুধে পাঠাতে অনিয়মের সঙ্গে সঙ্গে রোগ সম্পর্কে সচেতনতার অভাবও কাজ করেছে। চিকিৎসকেরা জানান, এই ওষুধ দেওয়া হয় ছ’মাসে এক বার। কিন্তু খালি পেটে এই ওষুধ খেতে নেই। তাতে সমস্যা হতে পারে। ওই ওষুধ খাওয়ার পরে বমি করা বা র‌্যাশ বেরোনো স্বাভাবিক। এতে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানেন না। তাই ওষুধ খাওয়ার পরে শরীরে অস্বস্তি হলে অনেকের মধ্যে নানা ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হয়। সেই ভ্রান্ত ধারণা ভাঙতে তেমন উদ্যোগী হয়নি স্বাস্থ্য দফতর।

Filaria Lymphatic filariasis National Vector Borne Disease Control Programme Survey
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy