Advertisement
E-Paper

২১ হতে ছ’মাস পাত্রের, বিয়ে দিলেন না পুরোহিত

পুলিশ করেছে। বিডিও বা যুগ্ম-বিডিও করেছেন। কোথাও চাইল্ড লাইনের কর্মীরা গিয়েও নাবালিকার বিয়ে আটকেছেন। কখনও আবার নাবালিকা নিজেও পুলিশে ফোন করে নিজের বিয়ে আটকেছে। তা বলে পুরোহিত!

সমীর দত্ত

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৫ ০৩:১৭

পুলিশ করেছে। বিডিও বা যুগ্ম-বিডিও করেছেন। কোথাও চাইল্ড লাইনের কর্মীরা গিয়েও নাবালিকার বিয়ে আটকেছেন। কখনও আবার নাবালিকা নিজেও পুলিশে ফোন করে নিজের বিয়ে আটকেছে।

তা বলে পুরোহিত!

পুরুলিয়ার পুঞ্চায় সেটাই ঘটালেন এক মন্দিরের দুই পুরোহিত। আইনি দায়বদ্ধতার কথা মাথায় রেখে এ বার অপ্রাপ্তবয়স্ক পাত্রকে ফিরিয়ে দিলেন তাঁরা। ফল, বিয়ে পিছিয়ে গেল ছ’মাস। কারণ, ছ’মাস পরেই পাত্র পা দেবে একুশে। এই ঘটনায় আরও উৎসাহ পাচ্ছেন পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের কর্তারা। তাঁরা বলছেন, রেখা কালিন্দী, বীণা কালিন্দী, আফসানা খাতুনদের হাত ধরে যে আন্দোলনের শুরু এই জেলায়, তার রেশ এখনও চলছে।

ঘটনার সূত্রপাত পুঞ্চা থানায় দামোদরপুরের এক বাসিন্দার নিখোঁজ ডায়েরি থেকে। মঙ্গলবার সেই ডায়েরিতে তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর মেয়ে নিখোঁজ এবং এর পিছনে এক পড়শি যুবকের হাত আছে বলে সন্দেহ। পুলিশ বুধবার সকালে বাঁকুড়ার ইঁদপুর থানা এলাকা থেকে দু’জনকে উদ্ধার করে। তরুণী পুলিশকে জানান, তাঁর বয়স উনিশ। এবং তিনি স্বেচ্ছায় বাড়ি ছেড়েছিলেন। তখন দু’জনকে ছেড়েও দেওয়া হয়। এর পরে দুই পরিবার সামাজিক মর্যাদা রক্ষার জন্য পুঞ্চার চরণপাহাড়ি কালী মন্দিরে যায় দু’জনের বিয়ে দিতে।

কিন্তু, কালী মন্দিরে গিয়ে বিয়ের আচার শুরু হওয়ার আগে পুরোহিত শ্রীধর চট্টোপাধ্যায় ও বাসুদেব মুখোপাধ্যায় বর-কনের জন্মের শংসাপত্র দেখতে চান। আর তাতেই বিপত্তি! শ্রীধরবাবুর কথায়, ‘‘ওরা স্কুলের শংসাপত্র নিয়ে এলে দেখি, পাত্রীর বয়স উনিশ চলছে। কিন্তু পাত্রের বয়স ২০ বছর ৬ মাস। আমরা দুই পরিবারকে জানিয়ে দিই, পাত্রের বয়স ২১ পূর্ণ না হওয়ায় এ বিয়ে দিতে পারব না।’’ তাঁদের বক্তব্য, ‘‘আমরা বিয়ের রেজিস্টার অবধি রেখেছি। বয়সের প্রমাণপত্রও দিতে বলি সকলকে।’’

পুঞ্চার ওসি ইসমাইল আলি জানান, এই থানা এলাকার বুধপুর শিবমন্দির ও চরণপাহাড়ি কালী মন্দিরে অনেকেই বিয়ে দেওয়ান। তাই তিনি দুই মন্দিরের পুরোহিতদের বিয়ের রেজিস্টার এবং বয়সের প্রমাণপত্র জমা রাখতে বলেছেন। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, পুরোহিতদের একাংশ অনেক সময় কিছু বাড়তি টাকার আশায় পাত্র-পাত্রীর বয়স খতিয়ে দেখেন না। ওই দুই পুরোহিত আইন মেনে কাজ করেছেন।

বিয়ে বন্ধ হয়ে গেল বলে খারাপ লাগছে না? ওই তরুণীর সপ্রতিভ জবাব, ‘‘ওর সঙ্গে দীর্ঘদিনের পরিচয়। এত দিন যখন অপেক্ষা করেছি, তখন আর তো ছ’মাস!’’

puncha samir dutta marraige ceremony priest priest denied purulia minor marraige puncha marraige
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy