Advertisement
০৮ মে ২০২৪

সরেই যেতে চান যোগেশের অধ্যক্ষ

ওই কলেজে এ বার তৃতীয় বর্ষের টেস্টে প্রায় ৪৪০ পড়ুয়ার মধ্যে পাশ করেছেন মাত্র ১১৭ জন। মঙ্গলবার প্রায় সাত ঘণ্টা শিক্ষকদের আটকে রাখেন পড়ুয়ারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:১৯
Share: Save:

ছাত্রছাত্রীদের একাংশের ঘেরাওয়ের জেরে অসুস্থ হয়ে লম্বা ছুটিতে চলে গিয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। আর ফেল করা পড়ুয়াদের পাশ করিয়ে দেওয়ার আন্দোলনের চাপে পদত্যাগ করতে চাইলেন যোগেশচন্দ্র চৌধুরী দিবা কলেজের অধ্যক্ষ পঙ্কজ রায়।

বৃহস্পতিবার পঙ্কজবাবু বলেন, ‘‘খাতা ফাঁকা। কিছুই লেখেনি। এমন ছাত্রকেও পাশ করিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হচ্ছে। এক জন শিক্ষক হিসেবে কি এই দাবি মেনে নেওয়া সম্ভব? পাশ করেই বা এরা কী করবে? এই দাবি মেনে নেওয়া আমার পক্ষে বেদনাদায়ক। এর থেকে দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া ভাল।’’

শিক্ষা শিবিরের পর্যবেক্ষণ, ফেল করেও পাশ করানোর মারমুখী আবদারের সামনে নতিস্বীকারের প্রবণতার বিরুদ্ধে এক জন অধ্যক্ষ অন্তত নিজের মতো করে প্রতিবাদ জানালেন। ক্লাস না-করেও পরীক্ষায় বসতে দেওয়া, ফেল করেও পাশ করিয়ে দেওয়ার যুযুধান দাবির দৌরাত্ম্য চলছে বেশ কয়েক বছর ধরে। শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষা-মানের সঙ্গে আপস করা হবে না বারবার জানানো সত্ত্বেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ পিছু হটছেন। এ বার স্নাতক পার্ট-১ পরীক্ষায় রেকর্ড ফেলের পরেও বিক্ষোভের জেরে নতুন নিয়মকে বেমালুম গিলে ফেলে পাশ করিয়ে দেওয়ার রাস্তা নিয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। সেটাকে দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যান যোগেশচন্দ্রের অকৃতকার্য পড়ুয়ারা।

ওই কলেজে এ বার তৃতীয় বর্ষের টেস্টে প্রায় ৪৪০ পড়ুয়ার মধ্যে পাশ করেছেন মাত্র ১১৭ জন। মঙ্গলবার প্রায় সাত ঘণ্টা শিক্ষকদের আটকে রাখেন পড়ুয়ারা। বুধবারের বৈঠকে ঠিক হয়, পাশ নম্বর কমানো হবে। কিন্তু আন্দোলনকারীদের দাবি, পাশ করাতে হবে বাকিদেরও। কলেজের গেট বন্ধ করে অধ্যক্ষ-সহ শিক্ষকদের রাত পর্যন্ত আটকে রাখেন তাঁরা।

কলেজ সূত্রের খবর, টেস্টে ফেল করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় হাজিরা নেই বহু পড়ুয়ার। বেশ কয়েক জনের হাজিরার সংখ্যা শূন্য! তবু তাঁদের পরীক্ষার ব্যবস্থা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে পরীক্ষার দিনগুলিকে হাজিরা হিসেবে দেখানো হয়েছে!

পাশ নম্বর কমিয়ে দেওয়ার পরেও অকৃতকার্যদের মধ্যে যাঁদের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ফল ভাল, বৃহস্পতিবার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁদের দেখা
করতে বলা হয়েছিল। এ দিন অধ্যক্ষ জানান, ১০-১২ জন পড়ুয়া এসেছিলেন। তাঁদের আগের ফল বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘ওদের আগের ফলের ভিত্তিতে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কিন্তু এ ভাবে চাপ দিয়ে পাশ করে এরা ভবিষ্যতে কী করবে? তার চেয়ে আমার সরে যাওয়া ভাল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE