Advertisement
E-Paper

বিক্ষোভ কোর্ট চত্বরে, ধস্তাধস্তিও

চন্দননগর আদালতের এসিজেএম জয়শঙ্কর রায় বারাণসী থেকে ধৃত সাত জনকে ১৪ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:১৮
বিক্ষোভ: আদালত চত্বরের গেট ভেঙে আসার চেষ্টা

বিক্ষোভ: আদালত চত্বরের গেট ভেঙে আসার চেষ্টা

গোলমালের আশঙ্কা ছিল পুলিশের। সেটাই সত্যি হল।

পুলিশের যাবতীয় প্রস্তুতি সত্ত্বেও ভদ্রেশ্বরের পুরপ্রধান মনোজ উপাধ্যায় খুনে ধৃত সাত জনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে বৃহস্পতিবার তেতে উঠল চন্দননগর আদালত চত্বর। ধৃতদের আদালতে নিয়ে আসা এবং নিয়ে যাওয়া— দু’দফাতেই ভদ্রেশ্বরের কয়েকশো মানুষ সামিল হলেন সেই বিক্ষোভে। কোনও দল হাতে পোস্টার নিয়ে অভিযুক্তদের চরম শাস্তির দাবি তুললেন। কোনও দল আবার পুলিশের গাড়ি আটকে অভিযুক্তদের নামিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তাতে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। শেষ পর্যন্ত পুলিশ ও র‌্যাফ কোনওক্রমে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

চন্দননগর আদালতের এসিজেএম জয়শঙ্কর রায় বারাণসী থেকে ধৃত সাত জনকে ১৪ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। বিচারক আদালতে জানান, পুরপ্রধান হত্যাকাণ্ডে সমাজে সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়েছে। মানুষের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এই আদালতের কোনও আইনজীবী অভিযুক্তদের হয়ে সওয়াল করতে অস্বীকার করেন। এসিজেএম নিজেই অভিযুক্তদের জন্য সরকারের ‘লিগাল এড’ থেকে রবীন মণ্ডল নামে এক আইনজীবীকে ঠিক করে দিয়েছিলেন।

গত ২১ নভেম্বর রাতে ভদ্রেশ্বরের গেটবাজারে বাড়ির কাছেই দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন ভদ্রেশ্বরের পুরপ্রধান। তার পর দিনই পুলিশ মুন্না রায় নামে স্থানীয় এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। গত সোমবার বারাণসীর একটি হোটেল থেকে গ্রেফতার করা হয় রাজু চৌধুরী, রতন চৌধুরী, আকাশ চৌধুরী, রাজেশ চৌধুরী, কৃষ্ণ চৌধুরী, দেবু পাকড়ে ও সন্তোষ চৌধুরী নামে ওই সাত জনকে। বুধবার দুপুরে তাদের হুগলিতে আনা হয়।

ধৃতদের বৃহস্পতিবার চন্দননগর আদালতে হাজির করানোর সময় যে গোলমাল হতে পারে, সে আশঙ্কা পুলিশের ছিল। তাই সকাল থেকেই আদালত চত্বরে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ভিড় সামলাতে ওই জায়গা দড়ি দিয়ে ঘিরেও ফেলা হয়। কিন্তু ১০টা থেকেই পোস্টার নিয়ে আদালত চত্বরে আসতে শুরু করেন বহু মানুষ। বেলা যত গড়িয়েছে, ভিড় তত বেড়েছে।

পোস্টার হাতে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি মহিলাদের পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি।

দুপুর সওয়া ২টো নাগাদ অভিযুক্তদের নিয়ে পুলিশের গাড়ি আদালত চত্বরে ঢুকতেই বিক্ষোভ প্রবল হয়। দড়ির ব্যারিকেড টপকে শ’য়ে শ’য়ে মানুষ ঢুকে পড়েন। ভদ্রেশ্বরের ভিক্টোরিয়া, গোন্দলপাড়া, নর্থ শ্যামনগর চটকল থেকেও বিক্ষোভে প্রচুর শ্রমিক সামিল হন। চটকলগুলিতে দুপুরের শিফ্‌টে কাজ কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। অভিযুক্তদের জনতার হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে সরগরম হয়ে ওঠে আদালত চত্বর। এ নিয়ে পুলিশকে ঘিরেও বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে গেটবাজারের বাসিন্দা রামকৃষ্ণ দাস বলেন, ‘‘আমাদের হাতে একবার আসামীদের পুলিশ তুলে দিক। ভদ্রেশ্বরের মানুষই ওদের বিচার করবে।’’

প্রকাশ গোস্বামী নামে ভদ্রেশ্বরের এক কাউন্সিলর বলেন, ‘‘মানুষের এই ক্ষোভ স্বাভাবিক। যে ভাবে আমাদের প্রিয় পুরপ্রধানকে খুন করা হল, তার নিন্দার ভাষা নেই। আমরা অপরাধীদের কঠিন শাস্তি চাই।’’

বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ অভিযুক্তদের ফিরিয়ে নিতে যাওয়ার সময়েও পুলিশ বিক্ষোভের মধ্যে পড়ে। গাড়ি থামিয়ে, চাপড় মেরে অভিযুক্তদের নীচে নামাতে যায় জনতা। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিয়ে গাড়ি কোনওক্রমে রওনা করিয়ে দেয়।

ছবি: তাপস ঘোষ

murderers Investigation Monoj Upadhyay Protest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy