“নো এনআরসি, নো সিএএ নমো!”
অভিনব এই মন্ত্র জোরে জোরে উচ্চারণ করল দু’পক্ষই। খানিক দম নিয়ে ভক্তের হাতে ধরা সাদা কাগজের উপরের দিকে লাল টিকা লাগিয়ে এর পরে এক পুরোহিত বলতে শুরু করলেন, “এনআরসি, সিএএ বর্জনার্থে, গঙ্গাসাগরে যথাসম্ভব দান সঙ্কল্পার্থে, যথাশক্তি দক্ষিণা ব্রাহ্মণায় অহম সম্প্রদতে!” অবশেষে কাগজে লাগানো লাল টিপই ভক্তের কপালে ছুঁইয়ে পুরোহিত বললেন, “হয়ে গিয়েছে। যান এ বার স্নান সেরে নিন। ধুতিটা ভাল করে গুটিয়ে নিন।”
মঙ্গলবার পুজোর ডালা হাতে, নীল কালি দিয়ে ‘নো এনআরসি, নো সিএএ’ লিখা কাগজ নিয়ে পুজো সারলেন তিন জন। তাঁরা হলেন গোপাল রক্ষিত, তরুণ মণ্ডল ও সুশান্ত ভুঁইয়া। তিন জনেরই বাড়ি গঙ্গাসাগর এলাকার আশপাশের গ্রামে। তরুণ বললেন, “গঙ্গাসাগরই আমাদের বাড়িঘর। নানা বছর নানা কারণে পুজো দিয়েছি। আমার তো মনে হয়, বিপদ কাটানোর জন্যই লোকে পুজো দেয়। এই মুহূর্তে সিএএ, এনআরসি-র থেকে বড় বিপদ আর কিছু আছে?” বিপদ এবং বিপদের ভয় সাধারণ মানুষকে কী ভাবে গ্রাস করেছে, ব্যাখ্যা করলেন গোপাল। তিনি বললেন, “এনআরসি নিয়ে কাকদ্বীপ এলাকায় যে-ভয় দেখেছি, বলে বোঝাতে পারব না। ভয়ে এ বার গঙ্গাসাগর মেলাতেও লোক অনেক কম এসেছেন। এ-রকম চললে তো আমাদের রুটিরুজি বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা রুখতে পারব কি না, জানি না। তবে এই অপয়া শক্তিকে ভগবান নিশ্চয় আটকাতে পারবেন।”