ধলুয়াবাড়িতে কৃষিযন্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য জুড়ে ইউরিয়া সারের আকালের জন্য ‘অসাধু ব্যবসায়ীদের’ দায়ী করলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু। শুক্রবার কোচবিহারের ধলুয়াবাড়িতে তিনি বলেন, “রাজ্যে ইউরিয়ার যা চাহিদা, সেই তুলনায় জোগান খুব একটা কম নেই। কিন্তু অসাধু কিছু ব্যবসায়ী কালোবাজারি করছে। রেলের রেক পয়েন্টগুলিতেও (এ ক্ষেত্রে যেখানে মালগাড়িতে আনা সার নামানো হয়) এ জন্য নজর রাখা হচ্ছে। আগের তুলনায় পরিস্থিতি বদলেছেও।” জেলার কৃষি ও সার উপকরণ ব্যবসায়ীরা অবশ্য মন্ত্রীর অভিযোগ মানতে চাননি।
‘কোচবিহার জেলা সার ও কৃষি উপকরণ ব্যবসায়ী সমিতি’র দাবি, জেলায় খরিফ মরসুমে ৪০ হাজার টন ইউরিয়ার চাহিদা রয়েছে। অথচ, বিভিন্ন সংস্থা ইউরিয়া সরবরাহ করছে না। গত নভেম্বর মাস থেকে ওই প্রবণতা শুরু হয়েছে। ফলে, চাহিদার তুলনায় জোগান কমেছে। তার উপরে নিউ কোচবিহারে রেলের রেক-পয়েন্ট না থাকায় বাড়তি খরচ দিয়ে বাইরে থেকে ওই সার আনতে হয়। বাড়তি খরচের প্রভাবও বাজারে পড়ছে।
ওই সংগঠনের কার্যকরী সম্পাদক রবিরঞ্জন ভাদুড়ির দাবি, ‘‘অন্তত কোচবিহার জেলার ক্ষেত্রে কালোবাজারির ব্যাপার নেই। অসাধু ব্যবসায়ীদের ব্যাপারে আমাদের কাছে কোন অভিযোগও কেউ করেনি। কারও বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংগঠন সেই ব্যবসায়ীর পাশে দাঁড়াবে না। ”
এ ব্যাপারে রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বাম ও বিজেপি। প্রাদেশিক কৃষকসভার কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, “এক দিকে কেন্দ্র সরকার ইউরিয়া সারে ভর্তুকি কমিয়ে দিয়েছে। অন্য দিকে, রাজ্য সরকার গোটা বিষয়টি নিয়ে উদাসীন। যার জেরেই বাজারে ইউরিয়ার আকাল বেড়েছে। শুধু অসাধু ব্যবসায়ীদের উপরে দায় চাপালে হবে না। ওই চক্র থেকে থেকে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দায় রাজ্য সরকার এড়াতে পারে না।” বিজেপি-র কোচবিহার জেলা সভাপতি হেমচন্দ্র বর্মন বলেন, “রাজ্যের উদাসীনতার জন্য ইউরিয়ার কালোবাজারি করার সুযোগ পাচ্ছে অসাধুরা। এ জন্য সরকারি ভাবে তল্লাশি করা দরকার।”
এ দিন একাধিক কর্মসূচিতে যোগ দিতে কোচবিহারে যান কৃষিমন্ত্রী। সকালে পুণ্ডিবাড়িতে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। সেখানে কৃষি বিজ্ঞানকেন্দ্র ঘুরে দেখেন। বিকেলে কোচবিহার ১ ব্লকের ধলুয়াবাড়িতে কৃষি দফতর আয়োজিত কৃষি যন্ত্রপাতি বিলির অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানে তিনি উত্তরবঙ্গের সাতটি জেলায় কৃষকদের সুবিধার জন্য ধান ঝাড়াইয়ের দামী যন্ত্র ভাড়ায় দেওয়ার ব্যবস্থা চালুর আশ্বাস দেন। তিনি জানান, পূর্ব মেদিনীপুর, বর্ধমানের মতো সাতটি জেলায় কৃষি-যন্ত্র ভাড়া দেওয়ার কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। মন্ত্রীর আশ্বাস, ‘‘উত্তরবঙ্গের সাতটি জেলাতেও ওই কেন্দ্র চালু করা হবে।” অনুষ্ঠানে নাটাবাড়ির বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, কৃষি অধিকর্তা পরিতোষ ভট্টাচার্য প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ দিন সন্ধ্যায় ল্যান্সডাউন হলে আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন মন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy