বাঁকুড়া জেলা আদালতে হাজির করানো হচ্ছে অভিযুক্তকে। মঙ্গলবার দুপুরে। —নিজস্ব চিত্র।
এক কলেজ ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগকে কেন্দ্র করে রাতভর উত্তেজনা বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় থানা এলাকায়। সোমবার বিকালে গ্রামের অদূরে রাস্তায় ওই কলেজ ছাত্রীকে তিন যুবক বাইকে করে এসে শ্লীলতাহানি করেন বলে অভিযোগ। ছাত্রী ও তাঁর সঙ্গী আত্মীয়ার চিৎকারে গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে ছুটে এলে বাইক ফেলেই চম্পট দেন ওই তিন জন। পরে পুলিশ গ্রামে গেলে তাদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। কলেজ ছাত্রীর নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে পরে ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মঙ্গলবার ধৃতকে বাঁকুড়া জেলা আদালতে হাজির করানো হয়।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্যান্য দিনের মতোই সোমবার সন্ধ্যার মুখে এক আত্মীয়ার সঙ্গে গ্রাম লাগোয়া রাস্তায় বেড়াতে যান ওই কলেজ ছাত্রী। গ্রামের অদূরে বেড়ানোর সময় একটি বাইকে চড়ে তিন যুবক ওই ছাত্রীর কাছে আসেন। অভিযোগ, গাড়ি দাঁড় করিয়ে প্রথমে ওই তিন জন কলেজ ছাত্রীর কাছে মোবাইল নম্বর চান। ছাত্রীটি মোবাইল নম্বর দিতে অস্বীকার করলে ওই তিন যুবক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করেন বলে অভিযোগ। এই সময় ছাত্রী ও তাঁর আত্মীয়া চিৎকার করলে স্থানীয় গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। গ্রামবাসীদের ছুটে আসতে দেখে ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে ঘটনাস্থলে বাইক ফেলে রেখেই ছুটে পালিয়ে যান তিন জন। এর পর গ্রামবাসীরা পড়ে থাকা বাইকটি নিয়ে গ্রামে ফিরে আসেন। রাতে দুই যুবক ওই গ্রামে বাইকটি আনতে গেলে তাঁদের ঘিরে রাখেন গ্রামবাসীরা। খবর পেয়ে বেলিয়াতোড় থানার পুলিশ ওই গ্রামে গেলে পুলিশকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখানো হয়। দীর্ঘক্ষণ পরে এর পরই নির্যাতিতা কলেজ ছাত্রীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে শ্লীলতাহানির ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
নির্যাতিতা কলেজ ছাত্রী এই প্রসঙ্গে বলেন, “আমাদের গ্রামে কখনও এমনটা হয়নি। ভাবতেও পারিনি বিকেলে বেড়াতে বেরিয়ে এমন একটা ঘটনার মুখোমুখি হতে হবে। এই ঘটনায় আমি এক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছি। অন্য দু’জনের নাম আমরা জানতে পারিনি। আশা করি অভিযুক্ত তিন জনকেই দ্রুত গ্রেফতার করা হবে এবং তাদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা হবে।” এই ঘটনা প্রসঙ্গে বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পরই এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর দুই অভিযুক্তকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। অপর দুই অভিযুক্তর ভূমিকা কী ছিল, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গোটা ঘটনায় শ্লীলতাহানির নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।” পুলিশকে হেনস্থা করা এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে পৃথক একটি মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy