সংলাপে নজর। রবিবার বক্রেশ্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছবিটি তুলেছেন দয়াল সেনগুপ্ত।
কেউ কেউ অভিনয় করেন। কেউ একেবারেই আনকোরা। এমন দশ কুশীলবকে নির্বাচিত করেই শুরু হল নাটক মঞ্চস্থ করার প্রস্তুতি। উদ্যোক্তা বক্রেশ্বরের জোছন দোস্তিদার অ্যাকাডেমি। বাছাই-পর্ব থেকেই এই কর্মকাণ্ডে যোগদানকারীদের প্রশিক্ষণের দায়িত্বে খোদ অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী, পরিচালক অভিনেতা চিত্রভানু বসু, জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের মতো ব্যক্তিত্ব।
শুক্রবার বিকেল থেকে রবিবার— পরপর তিন দিন এই প্রশিক্ষণের আসর বসেছিল বক্রেশ্বর প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। আদ্যন্ত কমেডির মোড়কে সামাজিক নাটকটি লিখেছেন অভিনেতা অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায়। অনুপ্রেরণা প্রখ্যাত সাহিত্যিক শিব্রাম চক্রবর্তীর হাসির গল্প। আপাতত নাটকের নাম ঠিক হয়েছে ‘হাতুড়ে’। কীভাবে সংলাপ বলবেন, প্রত্যেক চরিত্রের অভিব্যক্তি, হাঁটাচলা, সব কিছুই যত্ন করে কুশীলবদের দেখিয়ে দিচ্ছিলেন ওঁরা।
প্রসঙ্গত, এলাকার নবীন প্রজন্মকে সংস্কৃতিচর্চায় আকৃষ্ট করতে, প্রশিক্ষিত করতে এবং স্থানীয় প্রতিভা খুঁজে পেতে শিক্ষক জোছন দোস্তিদারের নামে অ্যাকডেমি তৈরি করেন সব্যসাচী, চিত্রভানুরা। প্রতিষ্ঠান এখনও গড়ে ওঠেনি, ধারাবাহিক চর্চাও শুরু হয়নি। তবে, সুযোগ পেলেই প্রশিক্ষণ চলছে। গত বছর থেকেই সেটা শুরু হয়েছে। সে বার স্থানীয়দের যোগদানে মঞ্চস্থ হয়েছিল দু’টি নাটক— ‘শূন্য পেল সরস্বতী’ ও ‘হাসির লড়াই’। একটি ছোটদের, অন্যটি বড়দের। পাশাপাশি সব্যসাচী চক্রবর্তী, খেয়ালি দোস্তিদার এবং অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায়রা নিজেরা বক্রেশ্বরের ওই মঞ্চেই মঞ্চস্থ করেছিলেন আর একটি নাটক— ‘দুধ খেয়েছে ম্যাও’। সব্যসাচী বলছেন, ‘‘যত ক্ষণ না মানুষ নিজে সচেতন হচ্ছে, কোনও সরকারি উদ্যোগ তাঁদের সচেতন করতে পারবে না। সেই বার্তা নিয়েই আমাদের এ বারের নাটক। তবে, পরে নামটি পরিবর্তিত হতে পারে।’’
হাতের নাগালে এমন বিশিষ্ট অভিনেতাদের কাছ থেকে সরাসরি শেখার সুযোগ পেয়ে আপ্লুত সকলেই। চন্দ্রানী ধীবর, সন্তু মুখোপাধ্যায়দের মতো আনকোরা তো বটেই, সিউড়ির দু’টি নাট্যদলের সঙ্গে যুক্ত রূপা সাহা, অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়রাও বলছেন, ‘‘দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা হল। আমরা সব কিছু নতুন করে শিখছি।’’
এখন সন্দীপ রায় পরিচালিত ‘ডবল ফেলুদা’ চলচ্চিত্রের শ্যুটিংয়ে তিনি ব্যস্ত। তাই এর পরে কবে রিহার্সালে সময় দিতে পারবেন, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন সব্যসাচী। তবে নিয়ম করে এখানে আসবেন বলে জানাচ্ছেন চিত্রভানু। আসার কথা অরিন্দমও। বড়দের নাটকের পাশাপাশি একটি ছোটদের নাটক ও কলকাতা থেকে পেশাদার নাট্যদলের একটি নাটক-সহ মোট তিনটি নাটক মঞ্চস্থ হবে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে। গত বার তাঁরা নিজেরাই নাটক মঞ্চস্থ করেছিলেন। এ বার কলকাতা থেকে নাট্যদল আসবে। সব্যসাচীরা বলছেন, ‘‘এখানে আমাদের যোগ দেওয়ার কোনও মানে নেই। স্থানীয়রাই সব কিছু করবেন। আমরা থাকলে একটা বাড়তি প্রচার হয়। তাই আমরাও থাকব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy