Advertisement
E-Paper

রোদের তেজে উঠল অবরোধ

গরমে তেতে উঠেছে জেলা। জল মিলছে না বলে হামেশাই রাস্তায় নামছেন জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা। বুঝিয়ে সুঝিয়ে তাদের শান্ত করতে ঘাম ছুটছে পুলিশ এবং প্রশাসনের আধিকারিকদের। এই পরিস্থিতিতে হঠাৎ মাত্রাছাড়া গরমের সুবিধা হাতেনাতে টের পেলেন কর্তামশাইরা। তাঁদের চেয়ার ছেড়ে উঠতে হল না, সূর্য একটু চোখ রাঙাতেই অবরোধকারীরা পড়িমড়ি করে দৌড়লেন ছায়ার খোঁজে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৬ ০২:০৯

গরমে তেতে উঠেছে জেলা। জল মিলছে না বলে হামেশাই রাস্তায় নামছেন জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা। বুঝিয়ে সুঝিয়ে তাদের শান্ত করতে ঘাম ছুটছে পুলিশ এবং প্রশাসনের আধিকারিকদের। এই পরিস্থিতিতে হঠাৎ মাত্রাছাড়া গরমের সুবিধা হাতেনাতে টের পেলেন কর্তামশাইরা। তাঁদের চেয়ার ছেড়ে উঠতে হল না, সূর্য একটু চোখ রাঙাতেই অবরোধকারীরা পড়িমড়ি করে দৌড়লেন ছায়ার খোঁজে। রাস্তা সাফ হয়ে ফের ছুটল গাড়ি।

কিছু দিন আগে পাইপ লাইন খারাপ হয়ে বরাবাজারের নামোপাড়া এবং কোটালপাড়া এলাকায় জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তখন এক দফা রাস্তায় নেমেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। সেই সময় পুলিশ এবং প্রশাসনের কর্তারা গিয়ে অনেক আশ্বাস দিয়ে অবরোধ তোলেন। তার পর থেকে রোজ ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে জল ভর্তি ট্যাঙ্ক পৌঁছে যাচ্ছিল এলাকায়।

শনিবার আবার রাস্তায় নামেন নামোপাড়ার কিছু বাসিন্দা। তাঁদের দাবি, জল মিলছে বটে, কিন্তু দরকারের তুলনায় তা যৎসামান্য। তার উপরে ট্যাঙ্কও খুবই চঞ্চলমতির। স্থির হয়ে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে জল দেয় না। অবরোধকারীদের কয়েক জন বলেন, ‘‘ট্যাঙ্কের হাবভাব অনেকটা গেছো দাদার মত। অনেক ক্ষণ লাইন দিয়ে দু’ কলসি জল নিয়ে বাড়ি গিয়েছি রেখে আসব বলে। কলসি নিয়ে ফিরে দেখি ট্যাঙ্ক চলে গেছে অনেক দূরে। এ ভাবে কী জল নেওয়া যায়!’’

বেলা তখন ১১টা। এই সমস্ত অভিযোগ নিয়ে বাজার এলাকায় রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় কিছু বাসিন্দা। কিন্তু মাথার উপর রোদ চড়তেই শুরু হল হাঁসফাঁস। মিনিট পনেরো অবরোধ করে রণে ভঙ্গ দিলেন সবাই। অমিতাভ কোটাল এবং ধরণী কোটাল নামে দুই অবরোধকারী ছায়ায় কিছুক্ষণ জিরিয়ে নিয়ে বলেন, ‘‘রোদের যা তাপ! দাঁড়ানো যায় না। তবে আন্দোলন থেকে আমরা সরছি না। সমস্যা না মিটলে ফের নামব রাস্তায়।’’

এ যাত্রা সূর্য তাঁদের ছোটাছুটি থেকে রেহাই দিয়েছে। কিন্তু তাতেও মুখ ভার প্রশাসনের কর্তাদের। বরাবাজারের বিডিও বিনয়কৃষ্ণ বিশ্বাসের দাবি, ট্যাঙ্কে করে যথেষ্ট জল পাঠানো হচ্ছে এলাকায়। তিনি বলেন, ‘‘পাইপ লাইন ভাঙার খবর পেয়েই জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের কর্মীরা মেরামতের কাজে নেমে পড়েছিলেন। কাজ প্রায় হয়েও এসেছে। দিন কয়েকের মধ্যেই জল সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তার আগে এমন ধুয়ো তুলে রাস্তা নামা হল কেন বুঝতে পারছি না।’’ তাঁর দাবি, এই অবরোধের পিছনে রাজনৈতিক উস্কানি থাকতে পারে। তবে তাঁর সন্দেহের তির কাদের দিকে, সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মুখে কুলুপ আঁটেন বিডিও।

রোজ জলের ট্যাঙ্ক নিয়ে এলাকায় যান প্রশাসনের যে সমস্ত কর্মীরা, অবরোধের কথা শুনে তাঁদেরও মুখ হাঁড়ি। গজগজ করতে করতে এক জন বলেন, ‘‘এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকলে সবাই জল পাবেন কী করে? ট্যাঙ্ক নিয়ে তো এলাকায় ঘুরতেই হবে। তখন আবার জল দেওয়া নিয়ে পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে বলে রাস্তা অবরোধ শুরু হবে।’’ সমস্ত দেখে শুনে ব্লক অফিসের এক কর্মী বলেন, ‘‘গরমে সবাই মাথা গরম করে ফেলেছেন। ভালয় ভালয় জলটা চলে এলেই সবার মঙ্গল।’’

water crisis Agitation Withdrawn heatwave
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy