জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ থাকলেও তারাপীঠে এখনও ‘ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট’ কার্যকর হল না। এর ফলে দ্বারকা নদের দূষণ সংক্রান্ত মামলায় আদালতের নির্দেশকেই অমান্য করা হচ্ছে বলে মামলাকারী জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ। অল ইন্ডিয়া লিগাল এড ফোরামের সম্পাদক এবং লেবার কমিশনের সদস্য, আইনজীবী জয়দীপবাবুর অভিযোগ, ‘‘তারাপীঠে দ্বারকা নদ দূষণ মামলায় জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মতো এখনও ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বসানোর ব্যবস্থা হয়নি। এর ফলে নদীতে বিভিন্ন লজের দূষিত জল পড়ছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ওই মামলার পর তারাপীঠ-রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ গঠিত হয়েছে। সরকার থেকে তারাপীঠের উন্নয়নের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। অথচ কাজের কাজ কিছু হয়নি।’’
এলাকার অনেকের অভিযোগ, পরিবেশ আদালতে তারাপীঠের দ্বারকা নদের দূষণ সংক্রান্ত মামলায় এ পর্যন্ত সরকার তারাপীঠ শ্মশানে বৈদ্যুতিন চুল্লি নির্মাণ থেকে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট গড়ে তোলার ব্যপারে কী কী উন্নয়নমূলক কাজের পদক্ষেপ নিয়েছে, সে ব্যাপারে ডিটেলস প্রোজেক্ট রিপোর্টও (ডিপিআর) জমা দিতে পারেননি। জয়দীপবাবু জানাচ্ছেন, মামলার পরবর্তী শুনানির দিনে বিষয়টি ফের নজরে আনবেন। তারাপীঠ-রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক উমাশঙ্কর এস অবশ্য জানান, তারাপীঠে নদী দূষণ ঠেকাতে পর্ষদ থেকে দ্বারকা নদী পাড়ে হরহরিতলা এবং বামদেব ঘাটে দুটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। আর একটি প্লান্ট তৈরির ব্যাপারে অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। বড় মাপের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট তৈরির জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকেও বলা হয়েছে। তিনি জানাচ্ছেন, প্রয়োজনীয় জায়গা না পাওয়ায় এখনও প্লান্ট গড়ে তোলা যায়নি। সূত্রের খবর, তারাপীঠ পেরিয়ে বন দফতরের একটি জায়গা সম্প্রতি পাওয়া গিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘নো অবজেকশন’ সার্টিফিকেটের জন্য দরবারও করা হয়েছে।
তারাপীঠ-রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান, কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তারাপীঠে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের অগ্রগতির জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর এবং সেচ দফতরের বাস্তুকারদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাদের কথা মতো তারাপীঠ এলাকায় কিছু জায়গায় ছোট মাপের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।’’ তারাপীঠ শ্মশানে বৈদ্যুতিন চুল্লি নির্মাণ খুব তাড়াতাড়ি শুরু হবে বলেও আশিসবাবু আশ্বাস দিয়েছেন।
এ দিকে, তারাপীঠের নদী দূষণ মামলায় বিভিন্ন লজ থেকে নির্গত দূষিত জল নল-বাহিত হয়ে দ্বারকা নদে পড়ে। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ দফতর থেকে বিভিন্ন লজ মালিককে নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই মতো তারাপীঠ ঢোকার আগে দ্বারকা সেতুর এক পাড়ের ৩৫টি বড় লজ ইতিমধ্যে নিজেদের খরচায় ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বসিয়ে নিয়েছে। দ্বারকা সেতুর অন্য পাড়ে অপেক্ষাকৃত ছোট লজ থেকে নির্গত জল ফিল্টার করার জন্য লজ মালিকরা বিশেষ ট্যাঙ্কির ব্যবস্থা করেছে বলে লজ মালিক সমিতির সম্পাদক দেবীপ্রসাদ মণ্ডল জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy