হাত পাঁচেক লম্বা শিকল। এক প্রান্ত আটকানো লোহার খুঁটিতে। অন্য প্রান্তে বাঁধা বছর চল্লিশের যুবক। লোহার বেড়ি পায়ে দশ বছর কাটিয়ে দিয়েছেন বান্দোয়ানের গোবর্ধন মাহাতো।
১৫ বছর ধরে মানসিক রোগে আক্রান্ত পুরুলিয়ার রোলাডি গ্রামের গোবর্ধন। দরিদ্র পরিবার তাঁর পর্যাপ্ত চিকিৎসার বন্দোবস্ত করতে পারেনি। ফলে, রোগ ক্রমশ জটিল হয়। প্রতিবেশীদের আঁচড়ে-কামড়ে দিয়েছিলেন কয়েকবার। গলা টিপে ধরেছিলেন কয়েকজনের। রাস্তায় একটি সব্জির গাড়িও ভাঙচুর করেন। আর ঝুঁকি নেয়নি তাঁর পরিবার। বাড়ির অদূরে একটি ঘরে শিকলে বেঁধে রাখা হয় গোবর্ধনকে।
মেরেকেটে ৮০ বর্গফুটের একটি ইটের ঘর। মাথায় অ্যাসবেস্টসের ছাউনি। ঘরের দু’দিকে দরজার জায়গা থাকলেও দরজা নেই। এক কোণে কংক্রিটের মেঝেতে পোঁতা লোহার খুঁটিতেই বাঁধা গোবর্ধন। দু’পায়েই বেড়ি। কোমরে জড়ানো এক খণ্ড কাপড়ে লজ্জা ঢেকেছেন। ঘরের ইতিউতি ছড়ানো খড়ের আঁটি। তা থেকে একটা একটা করে খড় বার করে দড়ি তৈরি করেন গৌবর্ধন। সেটাই তাঁর সারা দিনের কাজ।