Advertisement
E-Paper

তৃণমূলের মনোনয়ন ৬৭৮টি, বিরোধী মোটে ২

গত সোমবার থেকে মনোনয়ন শুরু হয়েছে। কিন্তু বিষ্ণুপুর মহকুমার প্রায় সব ব্লক থেকেই বিরোধীরা মনোনয়ন তুলতে বাধা পাচ্ছে বলে শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠতে শুরু করে।

শুভ্র মিত্র

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৮ ০২:২৭
সুনসান: বিষ্ণুপুর ব্লক দফতরে প্রার্থীদের অপেক্ষায় সরকারি কর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র।

সুনসান: বিষ্ণুপুর ব্লক দফতরে প্রার্থীদের অপেক্ষায় সরকারি কর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র।

গ্রাম পঞ্চায়েতে মনোনয়ন জমা পড়ল ৫৫৪। পঞ্চায়েত সমিতিতে ১০৫টি এবং জেলা পরিষদে ২১টি। এর মধ্যে তৃণমূল গ্রাম পঞ্চায়েতে মনোনয়ন দিয়েছে ৫৫৪, পঞ্চায়েত সমিতিতে ১০৫, জেলা পরিষদে ১৯টি। শুধুমাত্র কংগ্রেসই জেলা পরিষদে মোটে দু’টি মনোনয়ন দিয়েছে। বিজেপি, বামফ্রন্ট পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরে একটিও মনোনয়ন জমা দিতে পারেনি। এটাই বিষ্ণুপুর মহকুমা এলাকায় মনোনয়ন পর্বের ষষ্ঠ দিন, শনিবার পর্যন্ত ছবি।

গত সোমবার থেকে মনোনয়ন শুরু হয়েছে। কিন্তু বিষ্ণুপুর মহকুমার প্রায় সব ব্লক থেকেই বিরোধীরা মনোনয়ন তুলতে বাধা পাচ্ছে বলে শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠতে শুরু করে। বিষ্ণুপুরে মার খেয়ে হাত ভাঙে সিপিএমের এক এরিয়া কমিটির সদস্যের। সোনামুখীর বিধায়ক অজিত রায়ের উপরেও হামলা হয় বলে অভিযোগ। বিরোধীদের অভিযোগ, বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসকের অফিসের সামনেই শাসকদলের কর্মীরা স্লোগান দেয়— বিরোধীদের মনোনয়ন দিতে দেওয়া যাবে না। এর পরে কোন ভরসায় মনোনয়ন তুলবেন তাঁরা?

রাজ্য নির্বাচন কমিশন এই পরিস্থিতিতে শনিবার ও সোমবার মহকুমাশাসকের অফিসে গিয়েও পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির আসনের জন্য মনোনয়ন দেওয়া যাবে বলে জানায়। কিন্তু তাতেও যে পরিস্থিতির বিশেষ বদল হয়েছে, তেমনটা প্রতিফলিত হয়নি মনোনয়ন জমা পড়ার পরিসংখ্যানে।

প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, শনিবার পর্যন্ত সোনামুখী ব্লকে পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনের জন্যও কেউই মনোনয়ন দেয়নি। বিষ্ণুপুর ব্লকেও শুক্রবার পর্যন্ত একই অবস্থা ছিল। শনিবার সেখানে মনোনয়ন জমা দেন শুধু তৃণমূলের প্রার্থীরা। এখানে পঞ্চায়েতে ৭৮টি, পঞ্চায়েত সমিতিতে ৬টি মনোনয়ন জমা পড়েছে। জয়পুর ব্লকে পঞ্চায়েতে ১১৬ ও পঞ্চায়েত সমিতিতে ২৫টি মনোনয়ন জমা পড়ে। কোতুলপুরে পঞ্চায়েতে ১৩০টি ও পঞ্চায়েত সমিতিতে ২৩টি জমা পড়েছে। ইন্দাসে পঞ্চায়েতে ১২০টি ও পঞ্চায়েত সমিতিতে ২৫টি জমা পড়ে। পাত্রসায়রে পঞ্চায়েতে ১১০টি ও পঞ্চায়েত সমিতিতে ২৬টি মনোনয়ন জমা পড়েছে।

কেন এমনটা হল?

কংগ্রেসের জেলা সভাপতি নীলমাধব গুপ্তের দাবি, ‘‘প্রত্যেক জায়গায় আমাদের কর্মীরা শাসকদলের লোকেদের হাতে মার খাচ্ছেন। কোনওরকমে সাত সকালে এসডিও অফিসে ঢুকে জেলা পরিষদের জন্য দু’টি মনোনয়ন জমা করা গিয়েছে।’’ বিজেপি-র বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্বপন ঘোষের অভিযোগ, ‘‘কোতুলপুরে ব্লক অফিসে যাওয়ার ‘অপরাধে’ এক কর্মীর বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে তৃণমূলের ছেলেরা। তা হলে মনোনয়ন দেবে কী ভাবে। সিপিএমের সন্ত্রাসকে এরা ছাপিয়ে যাচ্ছে।’’ সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য তথা প্রাক্তন বিধায়ক স্বপন ঘোষ বলেন, ‘‘প্রার্থীদের নামের তালিকা তৈরি। কিন্তু এসডিও অফিসের ভিতরেই নেতা মার খেলেন। কর্মীরা কোন ভরসায় মনোনয়ন করতে যাবেন?’’

মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সোনামুখীর পুরপ্রধান তথা তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি সুরজিৎ মুখোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নে বিরোধীরা প্রার্থী পাচ্ছেন না। তাই নাটক করছেন।’’ কিন্তু তাঁর ব্লকেই কেন তৃণমূলও মনোনয়ন জমা করতে পারেনি? সুরজিৎবাবুর বক্তব্য, ‘‘এটা আমাদের রণকৌশল। শেষ দিন সোমবারই আমরা সবাই উৎসব করতে করতে মনোনয়ন দিতে যাব।’’ যদিও দলেরই একটি অংশ জানাচ্ছে, সোনামুখীতে নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে প্রার্থী বাছাই নিয়ে জটিলতা পুরোপুরি কাটেনি। তাই শেষ দিন পর্যন্ত রফা করার চেষ্টা চলছে। সে জন্যই মনোনয়ন হয়নি।

West Bengal Panchayat Elections 2018 Nomination TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy