Advertisement
E-Paper

বামফ্রন্ট প্রার্থীদের খোঁজ নিচ্ছেন কংগ্রেস বিধায়ক

পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কের একেবারে ধার ঘেঁষে, বোঙাবাড়ি এলাকায় পুরুলিয়া ২ ব্লক অফিসের কাছে রাজনৈতিক দলগুলির অস্থায়ী ক্যাম্প অফিসে গত ক’দিন ধরে এমনই ঐক্যের ছবি দেখা যাচ্ছে।

প্রশান্ত পাল

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৮ ০২:১৯
পাশাপাশি: একই গা়ড়িতে বাঁধা দুই দলের পতাকা। নিজস্ব চিত্র

পাশাপাশি: একই গা়ড়িতে বাঁধা দুই দলের পতাকা। নিজস্ব চিত্র

কংগ্রেসের তেরঙ্গা শিবির থেকে কেউ বামেদের লাল শিবির থেকে পেন চেয়ে আনছেন। কখনও বা বামেদের শিবির থেকে কেউ তেরঙ্গা শিবিরে গিয়ে জল খেয়ে আসছেন। মনোনয়ন জমা করতে কেউ বাকি পড়ে গেলেন না কি, বাম শিবিরে গিয়ে সেই খোঁজখবর নিচ্ছেন কংগ্রেস বিধায়ক।

পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কের একেবারে ধার ঘেঁষে, বোঙাবাড়ি এলাকায় পুরুলিয়া ২ ব্লক অফিসের কাছে রাজনৈতিক দলগুলির অস্থায়ী ক্যাম্প অফিসে গত ক’দিন ধরে এমনই ঐক্যের ছবি দেখা যাচ্ছে। তবে, এই ‘গলাগলি’ সম্পর্ক শুধুই বামফ্রন্ট আর কংগ্রেসের মধ্যে। আর তা হয়েছে, নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদেই।

দুই শিবিরের নেতা-কর্মীরা জানাচ্ছেন, বিরোধী ভোট তাঁরা ভাগ হতে দেবেন না। সে জন্য মনোনয়ন পর্ব থেকেই তাঁরা এককাট্টা। গত বিধানসভা ভোটে বামফ্রন্ট আর কংগ্রেস আসন সমঝোতা করায় এই এলাকা থেকে জিতেছিলেন কংগ্রেসের সুদীপ মুখোপাধ্যায়। সেই ফর্মুলাতেই এ বার পঞ্চায়েত ভোট পার হতে চাইছেন তাঁরা।

ভোটে কী হবে, তা পরের কথা। কিন্তু মনোনয়ন পর্বে বাম ও কংগ্রেস কর্মীদের এই ‘গলাগলি’ দেখে উপভোগও করছেন অনেকে। একই গাড়িতে তেরঙ্গা ও লাল পতাকা লাগিয়ে গ্রাম থেকে তাঁরা ব্লক অফিসে আসছেন। তারপরে পাশাপাশি মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাচ্ছেন। কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না অন্য দলের কর্মীরাও।

বাম শিবিরে ঘোঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি আসনের জন্য স্ত্রী নিয়তি মাহাতোর মনোনয়নপত্র তৈরি করছিলেন স্বামী সুনীলচন্দ্র মাহাতো। তিনি বলেন, ‘‘চিন্তা নেই। আমাদের দু’দলের মধ্যে আসন নিয়ে বোঝাপড়া হয়ে গিয়েছে। বিরোধী ভোট আমরা ভাগ হতে দেব না।’’ কর্মীদের মনোনয়নের কাগজপত্র ঠিকঠাক রয়েছে কি না তা দেখার ফাঁকেই সিপিএমের পুরুলিয়া ২ পূর্ব এরিয়া কমিটির সদস্য নিরঞ্জন মাহাতোও দাবি করেন, ‘‘পঞ্চায়েত স্তরে আমাদের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বোঝাপড়া হয়ে গিয়েছে। শাসকদলের বিরুদ্ধ ভোট এক জায়গায় আনতে হবে।’’ আসন সমঝোতা হল কি না, তা জানা যাবে মনোনয়ন প্রত্যাহারের পরেই। কিন্তু, এখন থেকেই এককাট্টা মনোভাব তৈরি হয়ে গিয়েছে পুরুলিয়া ২ ব্লকের বাম ও কংগ্রেস
কর্মীদের মধ্যে।

এই ব্লকে তৃণমূলের মধ্যেকার দ্বন্দ্বকেও কাজে লাগাতে চাইছেন কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়। কিছু দিন আগেই এখানকার তৃণমূলের পুরনো ব্লক কার্যালয় রাতারাতি বদলে গিয়েছে কংগ্রেসের কার্যালয়ে। যদিও প্রথমে কংগ্রেসের কার্যালয় হিসেবেই এটি তৈরি হয়েছিল। সেই অফিসের বাইরেই এখন বাম ও কংগ্রেস কর্মীরা জটলা করেন। কংগ্রেস কর্মী স্বরূপ রায় বলেন, ‘‘যা চলছে, তাতে আমরা বিরোধীরা এক হব না কেন? তৃণমূল আমাদের এক সাথে চলা ভেস্তে দিতে চাইছে। কিন্তু আমরা সতর্ক রয়েছি।’’

বিধায়কের অভিযোগ, ‘‘শাসকদল পঞ্চায়েত সমিতিতে যে দুর্নীতি করেছে, তাতে মানুষই ওদের সরাতে বিরোধী ভোট এক কাট্টা করতে বলছেন। তাই ওদের বিরুদ্ধে আমরা এ বার এক সাথে।’’

তৃণমূলের পুরুলিয়া ২ ব্লক কার্যকরী সভাপতি প্রভাস মাহাতো অবশ্য পাল্টা দাবি করেছেন, ‘‘উন্নয়নের স্বাদ গত পাঁচ বছরে এলাকার মানুষ পেয়েছেন। তাই ভুলেও তাঁরা সিপিএম বা কংগ্রেসকে ভরসা করতে যাবেন না। দুই দল যতই এক সঙ্গে মিলে যাক না কেন, সুবিধা করতে পারবে না।’’

West Bengal Panchayat Elections 2018 Congress CPM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy