Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পুরুলিয়া জেলা পরিষদে রইল দলেরই ‘কাঁটা’

সোমবার মনোনয়নের শেষ দিনে পুরুলিয়ায় মহকুমাশাসকের দফতরে মনোনয়ন জমা দেন কাশীপুর পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া। তিনি হুড়ার একটি কেন্দ্র থেকে জেলা পরিষদের প্রার্থী হচ্ছেন। কাশীপুরের বিধায়ক-পুত্রকে নিয়ে কর্মীরা উল্লাসে মাতলেও স্বস্তি মিলল না।

মহকুমাশাসকের (সদর) দফতরে মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছেন বিদায়ী সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো। পুরুলিয়ায়। নিজস্ব চিত্র

মহকুমাশাসকের (সদর) দফতরে মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছেন বিদায়ী সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো। পুরুলিয়ায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া ও রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৮ ০০:৩০
Share: Save:

জেলা পরিষদের প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে সোমবার পর্যন্ত বেশ কিছু আসনে ঐক্যমত্যে পৌঁছতে পারল না তৃণমূল। জেলা পরিষদের একই আসনে তৃণমূলের একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিলেন এ দিন। তা নিয়েই জল ঘোলা শুরু হয়ে গিয়েছে।

সোমবার মনোনয়নের শেষ দিনে পুরুলিয়ায় মহকুমাশাসকের দফতরে মনোনয়ন জমা দেন কাশীপুর পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া। তিনি হুড়ার একটি কেন্দ্র থেকে জেলা পরিষদের প্রার্থী হচ্ছেন। কাশীপুরের বিধায়ক-পুত্রকে নিয়ে কর্মীরা উল্লাসে মাতলেও স্বস্তি মিলল না।

কারণ ওই আসনে তৃণমূলের হয়েই মনোনয়ন জমা করেছেন গত পঞ্চায়েত ভোটে হুড়ারই অন্য একটি কেন্দ্র থেকে জেলা পরিষদে জেতা অনিতা চক্রবর্তী। ওই আসনেই মনোনয়ন করেছেন দলের হুড়া ব্লক সভাপতি শ্যামনারায়ণ মাহাতোও। অনিতাদেবী বলছেন, ‘‘খোদ দলনেত্রী বলেছিলেন, যাঁরা গতবার জয়ী হয়েছেন, এ বারও তাঁদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। তাই মনোনয়ন করেছি।’’ শ্যামনারায়ণবাবুর অনুগামীদের দাবি, নিচুতলার কর্মীরা বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে ব্লক সভাপতিই এই আসনে প্রার্থী হবেন। সেই অনুযায়ী ব্লক সভাপতির নাম জেলা নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হয়েছিল।

আর কাশীপুরের বিধায়ক সৌমেন বেলথরিয়ার বক্তব্য, ‘‘দলই এই আসনে সৌমেনকে প্রার্থী হিসেবে ঠিক করেছে। অন্য কেউ মনোনয়ন জমা করলেও দলই বিষয়টি দেখবে। না হলে দলবিরোধী কাজের দায়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ সৌমেনবাবুও বলছেন, ‘‘দল আমাকে প্রার্থী করেছে, তাই মনোনয়ন জমা দিয়েছি।’’

আবার, পুরুলিয়া ২ ব্লকে জেলা পরিষদের ২১ নম্বর আসনটি নিয়েও দলে দাবিদারের সংখ্যা ছিল একাধিক। এ দিন এই আসনে মনোনয়ন জমা করেছেন গতবার এই আসন থেকেই জয়ী পুষ্প বাউরি। এ দিনই ওই একই আসনে তৃণমূলের হয়েই মনোনয়ন জমা করেন জেলা পরিষদের আর এক বিদায়ী সদস্য হলধর মাহাতোও। তিনি গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই ব্লকের অন্য একটি আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। হলধরবাবুও দাবি করেন, ‘‘রাজ্য নেতৃত্বের সবুজ সঙ্কেত পেয়েই আমি দাঁড়িয়েছি।’’ পুষ্পদেবীও বলেন, ‘‘কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেই মনোনয়ন জমা করেছি।’’

জেলা পরিষদের অন্তত একটি আসনে সংখ্যালঘু প্রার্থী দেওয়ার দাবি উঠেছিল তৃণমূলের অন্দরে। বিশেষ করে পাড়া ব্লকের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত আসনটিতে তাদের প্রার্থী দেওয়া হোক বলে দাবি করেছিলেন দলের শাখা সংগঠন সংখ্যালঘু সেল। সেই আসনে প্রার্থীর নাম আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেননি জেলা নেতৃত্ব। তবে ওই আসনে সোমবার মনোনয়ন জমা দিলেন এলাকার তৃণমূলের সংখ্যালঘু নেতা রেয়াজ আহমেদ। ওই আসনেই পাড়া ব্লকের দলের কার্যকরী সভাপতি মনোজ সাহাবাবুও এ দিনই মনোনয়ন জমা দেওয়ায় বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে এলাকার তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে। পাড়া ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি রামলাল মাহাতো জানান, জেলা পরিষদের ওই আসনে কে প্রার্থী হবেন, সেটা জেলা নেতৃত্বই সিদ্ধান্ত নেবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE