Advertisement
০১ মে ২০২৪
একটিই গোষ্ঠী, কটাক্ষ বিজেপির
Kajal Sheikh

পুরসভাতেও ‘পা’, কর্মী সংগঠনের মাথায় কাজল

প্রথমবার ভোটে নেমেই বিপুল জয়, তার ‘পুরস্কার’ হিসাবে সোজা সভাধিপতি পদ এবং এ বার শাসকদলের রাজ্য পুর-কর্মচারী ইউনিয়নেও প্রবেশ ঘটল কাজলের।

সিউড়ি পুরসভায় পুর-কর্মচারীদের সাধারণ সভার শেষে ঘোষিত হচ্ছে নতুন কমিটি। সোমবার।

সিউড়ি পুরসভায় পুর-কর্মচারীদের সাধারণ সভার শেষে ঘোষিত হচ্ছে নতুন কমিটি। সোমবার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২৩ ০৯:৪৪
Share: Save:

সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীর পরিবর্তে সদ্য তাঁকে জেলা পরিষদের সভাধিপতি করেছে দল। এ বার জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বাক বিকাশের খাসতালুক সিউড়ি পুরসভাতেও ‘পা’ পড়ল সেই কাজল শেখের।

কাজল শেখকে মাথায় রেখে রাজ্য পুর-কর্মচারী ইউনিয়নের সিউড়ি শাখার নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে সোমবার। সিউড়ি পুরসভার স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মী মিলিয়ে মোট ৭৮৩ জন কর্মী রয়েছেন। তাঁদের নিয়ে এ দিন পুরসভায় সাধারণ সভা আয়োজিত হয়। সভার শেষে আগামী দুই বছরের জন্য ৩১ জনের একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটির মুখ্য উপদেষ্টা পদে রাখা হয়েছে বর্তমান সভাধিপতি কাজল ও প্রাক্তন সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীকে। সিউড়ি পুরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর সুব্রত চক্রবর্তীকে কমিটির সভাপতি এবং রাজ্য পুর কর্মচারী ইউনিয়নের সম্পাদক আশিস দে-কে এই কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসাবে পুনর্নির্বাচিত করা হয়।

প্রথমবার ভোটে নেমেই বিপুল জয়, তার ‘পুরস্কার’ হিসাবে সোজা সভাধিপতি পদ এবং এ বার শাসকদলের রাজ্য পুর-কর্মচারী ইউনিয়নেও প্রবেশ ঘটল কাজলের। স্বাভাবিক ভাবেই, এই নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। বিশেষ করে বিকাশের শহরে এ বার কাজলের ‘প্রভাব’ বাড়তে শুরু করেছে কি না, তা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। সিউড়িতেই আগামী দিনে তিনি থাকবেন কি না, সে প্রশ্নও উঠছে।

কাজল নিজে যদিও এমন গুঞ্জন মানতে নারাজ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি গ্রামের মানুষের আশীর্বাদ পেয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিতে সভাপতির আসনে বসেছি। তাই গ্রামের মানুষের সার্বিক উন্নয়ন করাই আমার প্রধান লক্ষ্য। সিউড়ি পুরসভার কর্মী ইউনিয়ন আমাকে ভালবেসে তাদের সংগঠনের উপদেষ্টা পদে বসিয়েছে। আমিও চেষ্টা করব তাদের সঠিক উপদেশ দিয়ে এগিয়ে যেতে সাহায্য করতে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘সিউড়িতে পাকাপাকি থাকার বা এখান থেকেই কাজ করার কোনও ভাবনা আমার নেই।’’

কাজল এ কথা বললেও পুরসভার কর্মী ইউনিয়নের এই ঘোষণা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। দলের বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি বাবন দাস বলেন, ‘‘বিকাশ রায়চৌধুরীকে আগেই জেলা পরিষদের সভাধিপতির পথ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিতে আসা এক প্রার্থীকে পুরসভার কর্মী ইউনিয়নের মাথায় নিয়ে আসা হচ্ছে। বোঝাই যাচ্ছে, জেলায় তৃণমূলে আর গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। এখন সবটা এক জনেরই গোষ্ঠী, আর বাকিরা সবাই বাদ!’’

বিজেপির কটাক্ষকে আমলা দিতে চাননি বিকাশ নিজে। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘কাজল জেলা পরিষদের সভাধিপতি হওয়ার পাশাপাশি দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তাঁকে যদি তৃণমূলের কোনও কর্মী ইউনিয়ন উপদেষ্টা পদে বসায়, তা হলে তা নিয়ে বিতর্কের কোনও মানেই হয় না। তৃণমূলকে নিয়ে ভাবার আগে বিজেপি নিজের চরকায় তেল দিক!’’

পুর-কর্মচারী ইউনিয়নের নবনির্বাচিত কমিটি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই ১২ দফা দাবি নিয়ে সিউড়ির নবনিযুক্ত পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখ করবে বলে জানিয়েছেন আশিস দে। তিনি বলেন, “যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দলের নীতি যাতে সুরক্ষিত থাকে, তার জন্য আমরা অবশ্যই কাজল শেখ ও বিকাশ রায়চৌধুরীর পরামর্শ নেব। পুর কর্মচারীদের বেতন, ছুটি সহ নানাবিধ জটিলতার সমাধান করবে আমাদের এই কমিটি। কর্মচারীদের স্বার্থে প্রয়োজনে পুর কর্তৃপক্ষের বিরোধিতা করতেও আমরা পিছপা হব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suri Municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE