E-Paper

স্কুলে-স্কুলে পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবি

উন্নয়ন পর্ষদের পুরুলিয়ার কর্মকর্তা সুব্রত মুখোপাধ্যায় মনে করাচ্ছেন, এই দাবিতেই সংগঠিত আন্দোলনের একটা মাধ্যম হচ্ছে চতুর্থ শ্রেণিতে বৃত্তি পরীক্ষা শুরু করা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:২৮
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। যদিও রাজ্য শিক্ষা দফতরের দাবি, ইতিমধ্যেই এখানে পঞ্চম ও অষ্টমে পাশ-ফেল শুরু হয়েছে। তবে, সে দাবি মিথ্যা বলে পাল্টা দাবি করেছে শিক্ষক সংগঠন ‘বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি’ (বিপিটিএ) এবং ‘মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি’ (এসটিইএ)। শিক্ষক সংগঠন ও ছাত্র সংগঠনগুলি পাশ-ফেল ফেরানোর পক্ষে সওয়াল করলেও দাবি করেছে তার আগে স্কুলগুলির পরিকাঠামো উন্নতি করা হোক। না হলে পাশ-ফেল চালু করলে স্কুলছুটের সংখ্যা বাড়তে পারে।

বিপিটিএ-র পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক রাজকিশোর মাহাতোর দাবি, ‘‘পঞ্চম শ্রেণিতে পাশ-ফেল প্রথা শুরুর জন্য রাজ্য শিক্ষা দফতরের কোনও নির্দেশ স্কুলগুলিতে আসেনি।’’ এসটিইএ-র পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক ললিতকিশোর মাহাতোরও দাবি, ‘‘বাংলা শিক্ষা পোর্টালে এমন পদ্ধতি করা হয়েছে যাতে কোনও পড়ুয়া ‘অকৃতকার্য’ হলে তা উল্লেখ করা সম্ভব নয়। সবাইকে ‘উত্তীর্ণ’ দেখাতে হয়। তাহলে রাজ্য কোথায় পাশ-ফেল শুরু করেছে?”

তবে টিএমসিপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তীর্থঙ্কর কুন্ডুর দাবি, ‘‘রাজ্য সরকার ২০২০ সাল থেকেই পঞ্চম ওঅষ্টমে পাশ-ফেল শুরু করে দিয়েছে। পড়াশোনায় প্রতিযোগিতাথাকা ভাল। তবে অকৃতকার্য হওয়া পড়ুয়ার প্রতি শিক্ষকদের বেশি যত্ন নিতে হবে।”

অন্যদিকে, প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল শুরুর দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলন করে আসা ‘সেভ এডুকেশন কমিটি’ ও ‘প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন পর্ষদ’-এর দাবি, শুধু পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণি নয়, কেন্দ্র ও রাজ্যকে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল শুরু করতে হবে।

উন্নয়ন পর্ষদের পুরুলিয়ার কর্মকর্তা সুব্রত মুখোপাধ্যায় মনে করাচ্ছেন, এই দাবিতেই সংগঠিত আন্দোলনের একটা মাধ্যম হচ্ছে চতুর্থ শ্রেণিতে বৃত্তি পরীক্ষা শুরু করা। ১৯৯২ সাল থেকে সেই পরীক্ষা চলছে। তাঁর দাবি, ‘‘অবিভাবকেরাপ্রথম শ্রেণি থেকেই পাশ-ফেল চাইছেন। তাই তিন দশকের বেশি সময় ধরে হাজার হাজার পড়ুয়াবৃত্তি পরীক্ষা দিচ্ছে।”

প্রথম শ্রেণি থেকে পাশ ফেল শুরুর দাবিতে আন্দোলন করা এসইউসি-র বাঁকুড়ার জেলা নেতা স্বপন নাগ বলেন, ‘‘বেসরকারি স্কুলে পাশ-ফেল আছে। অথচ সরকারি স্কুলে তা নেই। এ ভাবেই দুই শ্রেণির নাগরিক তৈরি করছে দুই সরকার।”

তবে শিক্ষক সংগঠনগুলির একাংশের মত, পাশ-ফেল শুরুর আগে স্কুলগুলিতে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন। ‘অ্যাডভান্স সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেস’-এর বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক চিন্ময় কোনার বলেন, ‘‘পাশ-ফেল না থাকায় মাঝারি মানের পড়ুয়ারা হারিয়ে যাচ্ছে। পড়াশোনার গুরুত্ব কমছে।”

দু’জেলারই প্রধান শিক্ষকদের বড় অংশই মনে করছেন, শুধু পাশ ফেল ফিরিয়ে আনলেই চলবে না, স্কুলগুলিতে পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। স্কুলগুলির পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করাটাও আশু প্রয়োজন।

বামফ্রন্ট সরকারের আমলেই পাশ-ফেল উঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপরেও এসএফআই-এর বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অনির্বাণ গোস্বামী মনে করছেন, ‘‘পাশ-ফেল প্রথাকে বাস্তব রূপ দিতে স্কুলে উন্নত পরিকাঠামোর প্রয়োজন। যা না থাকায় এখন স্কুলছুটের সংখ্যা বাড়ছে। আগে ওই পড়ুয়াদের স্কুলে ফেরানো প্রয়োজন।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

purulia bankura

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy