এই বাড়িতেই হয়েছিল বিস্ফোরণ। ছবি: অভিজিৎ সিংহ
সক্কাল সক্কাল বিস্ফোরণের আওয়াজ! চমকেই গিয়েছিলেন বাঁকুড়া শহরের প্রতাপবাগান এলাকার বাসিন্দারা। আওয়াজ শুনে অনেকেই বাড়ির বাইরে ছুটে বেরিয়ে আসেন। পরে জানা গেল, সেই বিস্ফোরণের উৎস নির্মীয়মান একটি আবাসন। ঘটনায় ঘটনায় অল্পবিস্তর জখমও হয়েছেন ওই আবাসনে কর্মরত সুমিতকুমার মণ্ডল নামে এক শ্রমিক। তাঁর হাঁটুর নীচ থেকে পায়ের বেশ কিছু জায়গায় ছোট ছোট ক্ষত তৈরি হয়। খবর পেয়েই দ্রুত পুলিশ এসে ওই জখম শ্রমিককে থানায় নিয়ে যায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।
বিস্ফোরণের কারণ নিয়ে অবশ্য ধোঁয়াশা ছড়িয়েছে। জখম শ্রমিকের বয়ানেও অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। ঘটনার পর থেকেই পুলিশ দাবি করছিল, চকোলেট বোমা ফেটে এই ঘটনা। কিন্তু, বিকেলে পুলিশ সুপার সুখেন্দু হিরা বলেন, “আবাসনের শ্রমিকেরা পরিত্যক্ত জিনিসপত্র পোড়াচ্ছিলেন। সেখানে কাচের বোতলও ছিল। তা ফেটেই বিস্ফোরণ হয়েছে।’’ যদিও ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বিহারের বেগুসরাইয়ের বাসিন্দা, সুমিত দাবি করেন, দোতলা থেকে সিঁড়ি বেয়ে এক তলায় নেমে আসার সময় তার পায়ের কাছে বোমা ফাটে। বোমার ছিটে লেগেই তাঁর পায়ে ক্ষত হয়। আবার পুলিশের দাবি, থানায় জিজ্ঞাসাবাদের সময় সুমিত জানায়, দিন দুয়েক আগে একটি চকোলেট বোম কুড়িয়ে পেয়েছিলেন তাঁরা। সেটি ভিজে থাকায় দু’দিন ধরেই তা শুকনো করা হয়। তার পর এ দিন সকালে নিজেই সেই বোমার সলতেতে আগুন দিয়ে সেটি ফাটাতে গেলে বিপত্তি বাধে।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, এলাকার লোকজন ওই আবাসনের সামনে ভিড় জমিয়েছেন। আবাসনের পাশেই বাড়ি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ দে-র। এলাকার বাসিন্দা মুকেশ পাত্র, ব্রজেশ কুমার সিংহরা বলেন, “বোমা ফাটার আওয়াজে প্রচণ্ড জোর ছিল। ঘরের মধ্যে থেকেই তা শুনতে পেয়ে বাইরে বেরিয়ে আসি আমরা।’’ নির্মীয়মাণ ওই আবাসনের নিরাপত্তারক্ষী মথুর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কাজে যোগ দিতে আবাসনে ঢুকব, তখনই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটল। ভিতরে থাকা দু’জন কর্মী দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে এল। এক জনের পায়ে চোট লেগেছিল।’’ তিনি জানান, আবাসনের প্রথম তলায় লিফটের চেম্বারের পাশেই বোমাটি ফেটেছিল। আশেপাশের দেওয়ালে তখনও কালো কালির দাগ দেখা যাচ্ছিল।
ওই আবাসনের মালিক বিপুল কর্মকার জানান, এখানে বাঁকুড়া ও ছাতনা ছাড়াও বিহারের বেশ কিছু শ্রমিক কাজ করছেন। বাইরের শ্রমিকেরা রাতে ওই আবাসনেই থাকেন। আবাসনের নির্মাণকাজ শেষ। এখন সেখানে মোজাইকের কাজ চলছে। তাঁর বক্তব্য, “শ্রমিকরা চকোলেট বোমই ফাটিয়েছে। বড় কোনও ঘটনা এটা নয়।’’ এ দিন বিকেলে বাঁকুড়া সদর মহকুমাশাসক অসীম কুমার বালা, ডিএসপি (প্রশাসন) আনন্দ সরকার ও বাঁকুড়া সদর থানার আইসি রাজর্ষি দত্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। একটি জেনারেল ডায়েরি করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy