পড়ুয়াদের উপর নজরদারির জন্য নিজেদের খরচে শ্রেণিকক্ষ, সিঁড়ি, প্রবেশপথে সিসিটিভি ক্যামেরা বসালেন খয়রাশোলের বড়রা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা।
স্কুল সূত্রে খবর, শুক্রবার ছ’টি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। পরে আরও দু’টি ক্যামেরা লাগানো হবে। শিক্ষকেরা নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে ওই সব ক্যামেরা কিনেছেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কাঞ্চন অধিকারী বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের উপর নজর রাখার কথা ভেবে এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’
স্কুল সূত্রে খবর, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির কয়েক জন ছাত্রের কাজকর্মের জেরে স্কুল কর্তৃপক্ষ এ বছরের জুলাই মাসে একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ঠিক করো হয়, সপ্তাহে তিন দিন ছাত্রীরা ক্লাসে আসবে। বাকি তিন দিন স্কুলে আসবে শুধু ছাত্রেরা। ওই কথা ছড়াতেই শুরু হয় সমালোচনা। প্রশ্ন ওঠে— সপ্তাহে তিন দিনের পড়াশেনায় কী ভাবে শেষ হবে সিলেবাস? এটা কী ছাত্র শাসনের পদ্ধতি? কেন ব্লক প্রশাসন বা শিক্ষা দফতরকে জানানো হল না? সমালোচনার মুখ পড়ে সিদ্ধান্ত বদল করতে বাধ্য হয় স্কুল।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে পঞ্চম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ২ হাজার ৬০০। একাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া ২৩৬ জন। দ্বাদশ শ্রেণিতে ২৩০। ৫ জন পার্শ্ব-শিক্ষক মিলিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন ৩১ জন। প্রথমত, ছাত্রের তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা কম। দ্বিতীয়ত, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে বেশি পড়ুয়া।
শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ ছিল— ক্লাসেই ছাত্রীদের উত্যক্ত করা, মোবাইলে তাদের ছবি তোলা, অশ্লীল ভিডিও দেখা, মুখ লুকিয়ে অশালীন আওয়াজ করে ওই দু’টি ক্লাসের কয়েক জন ছাত্র। তার জেরে শুধু ওই ক্লাস নয়, অন্য শ্রেণির পঠনপাঠনও ব্যাহত হচ্ছিল। বাধ্য হয়েই ছাত্র ও ছাত্রীদের আলাদা আলাদা দিনে ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু বিতর্কের জেরে তা বাতিল করা হয়। শেষে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা করেন শিক্ষকরা। স্কুলের বক্তব্য, ক্যামেরার নজরদারিতে থাকলে অন্যায় করলে রেহাই পাবে না কোনও ছাত্র। ওই পড়ুয়াকে সতর্ক করা বা তার অভিভাবকদের বিষয়টি জানানোও অনেক সহজ হবে। তা ছাড়া গত মে মাসে স্কুল থেকে কম্পিউটার ও কিছু কাগজপত্র চুরি গিয়েছিল। ক্যামেরা বসিয়ে নিরাপত্তাও আরও জোরদার করা হলো।
ছাত্র ও ছাত্রীদের পৃথক ক্লাস করানোর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছিলেন জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) রেজাউল হক। কিন্তু ক্যামেরা বসানোর কথা শুনে তিনি খুশি। রেজাউল হক বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের অনুশাসনে রাখতে এমন সিদ্ধান্ত নিতেই পারেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। এতে আপত্তির কিছু নেই।’’ শিক্ষকদের এমন পদক্ষেপে খুশি অভিভাবকেরাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy