Advertisement
১৭ মে ২০২৪

দেরিতে গেট খোলায় ভোগান্তি তারাপীঠে

সম্প্রতি তারাপীঠ মন্দির সেবাইত সমিতি, জেলা প্রশাসন ও তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ এক বৈঠকে দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে তারা মায়ের মূল মন্দিরের গেট সকাল সাড়ে ছ’টার মধ্যে খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অথচ নির্দিষ্ট সময়ে গেট না খোলার জন্য দর্শনার্থীরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন।

দরজা খুলতেই মন্দির চত্বরে আছড়ে পড়ল ভিড়। (ইনসেটে) এ ভাবেই পান্ডাদের একাংশ টাকার বিনিময়ে মন্দিরের ভিতরে ঢুকিয়ে দেন দর্শনার্থীদের। শনিবার ছবিটি তুলেছেন সব্যসাচী ইসলাম।

দরজা খুলতেই মন্দির চত্বরে আছড়ে পড়ল ভিড়। (ইনসেটে) এ ভাবেই পান্ডাদের একাংশ টাকার বিনিময়ে মন্দিরের ভিতরে ঢুকিয়ে দেন দর্শনার্থীদের। শনিবার ছবিটি তুলেছেন সব্যসাচী ইসলাম।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তারাপীঠ শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৬ ০১:১৫
Share: Save:

দেরিতে গেট খোলায় ভোগান্তির শিকার হলেন তারাপীঠের দর্শনার্থীরা।

সম্প্রতি তারাপীঠ মন্দির সেবাইত সমিতি, জেলা প্রশাসন ও তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ এক বৈঠকে দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে তারা মায়ের মূল মন্দিরের গেট সকাল সাড়ে ছ’টার মধ্যে খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অথচ নির্দিষ্ট সময়ে গেট না খোলার জন্য দর্শনার্থীরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। তারামাতা সেবাইত সমিতির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যে সেবাইত দায়িত্বে আছেন তিনি বলতে পারবেন।’’

এ দিন দায়িত্বে ছিলেন মূল মন্দিরের পালাদার সেবাইত পলাশ মুখোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ‘‘ছড়িদারদের যা ভিড়। মায়ের স্নান ও আরতি শেষ হতে পনের মিনিট দেরী হয়েছে। এ ছাড়া ছড়িদারদের বের করতে সময় লাগে।’’ পলাশবাবুর দাবি অবশ্য মানতে চাননি সেবাইতদের একাংশ। তাঁরা জানান, মন্দিরে এখন প্রতি পান্ডা পিছু দু’ জন করে ছড়িদার রাখার নিয়ম করা হয়েছে। এবং ছড়িদারদের সচিত্র পরিচয় পত্র দেখে মন্দিরে ঢোকার নিয়ম চালু হয়েছে। সুতরাং পালাদারের কথা ঠিক নয়। উনি নিজের মতো করে স্নান আরতি দেখার জন্য ভক্তদের বিশেষ ব্যবস্থা করার জন্য আজকে মূল মন্দিরের গেট খুলতে দেরি হয়েছে। এ ব্যপারে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপের দাবি করেন তাঁরা।

তারাপীঠ মন্দির চত্ত্বরে গিয়ে দেখা যায়, সেবাইত সমিতির অফিসের গেটের দিকে ১০০ টাকার গেটে ও নাট মন্দিরের সামনে ৩০০ ও ২০০ টাকার গেটে কয়েক শো পুরুষ-মহিলা দাঁড়িয়ে। আবার সাধারণ লাইনে রাত তিনটে থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আরও কয়েক শো দর্শনার্থী। হাওড়া থেকে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এসেছিলেন বিকাশ ঢক। তিনি বলেন, ‘‘রাত জেগে হাওড়া থেকে কষ্ট করে মা তারার দর্শনের জন্য এসেছি। রাত তিনটে থেকে সাধারণের লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। লাইন পাক খেতে খেতে পুকুর পাড় পেরিয়ে গিয়েছে। সাড়ে ছ’টায় গেট খোলার কথা, এখনও গেট খুলছে না।’’

একসময় নাট মন্দির সংলগ্ন ৩০০ টাকা ও ২০০ টাকার গেট খোলা হয়। কিন্তু সাধারণ মানুষের লাইনের গেট তখনও খোলা হয়নি। ঘড়িতে তখন আটটা বাজতে দশ মিনিট বাকি। ওই গেট খুলতেই তীর্থযাত্রীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। আটটা নাগাদ সাধারণ লাইনের গেট খোলা হলে মন্দির চত্ত্বরে দর্শনার্থী ও পান্ডাদের ঠেলাঠেলিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে তারাপীঠ থানা থেকে একজন অফিসার-সহ তিনজন কনস্টেবলকে লাইন ঠিক করতে দেখা যায়। এ দিনই পুজো দিতে এসেছিলেন কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরুপ রায়। মন্ত্রী এসেছেন দেখে মূল মন্দিরের এ দিনের পালাদার পলাশবাবু মন্দিরে আসেন।

সেবাইত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি আশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ কেমন নিয়ম। সকলের জন্য নিয়ম বেধে দেওয়া হল এখনও গেট খোলা হল না! হাজার হাজার তীর্থযাত্রীদের কাছে এ ব্যাপারে কী বার্তা যাবে?’’

দেরিতে গেট খোলায় তারাপীঠ মন্দির চত্ত্বরে দর্শনার্থীদের ভোগান্তি এবং নিয়ম ভেঙে ভিআইপি গেটের নামে ৩০০, ২০০, ১০০ টাকা নিয়ে মূল মন্দিরে প্রবেশ নিয়ে কী বলছেন রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের সহ-সভাপতি তথা সেবাইত ও তৃণমূলের রামপুরহাট ২ ব্লক সভাপতি সুকুমার মুখোপাধ্যায়?

সুকুমারবাবু এ দিন বলছেন, ‘‘এমন ঘটনা হওয়া উচিত ছিল না। আমি মন্দির কমিটিকে বলেছি দ্রুত বৈঠকে বসতে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

temple tarapith
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE