Advertisement
E-Paper

দুর্নীতির নালিশ, পলাতক তৃণমূল প্রধান

অভিযোগ দায়ের হয়েছিল ৪৯ দিন আগে। এফআইআর করেছিল খোদ প্রশাসন। তার পরেও তৃণমূল প্রধান-সহ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত সাত জনের কাউকেই গ্রেফতার করেনি পুলিশ!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:৫৮

অভিযোগ দায়ের হয়েছিল ৪৯ দিন আগে। এফআইআর করেছিল খোদ প্রশাসন। তার পরেও তৃণমূল প্রধান-সহ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত সাত জনের কাউকেই গ্রেফতার করেনি পুলিশ!

মুরারই ২ ব্লকের নন্দীগ্রাম পঞ্চায়েতের ওই ঘটনায় ফের প্রশ্ন উঠে গিয়েছে জেলা পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে। একই সঙ্গে গোটা ঘটনায় চরম অস্বস্তিতে শাসকদলের নেতৃত্বও। কারণ, অভিযুক্তদের মধ্যে দলের দুই নেতা-কর্মী রয়েছেন। আবার যাঁদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে এই দুর্নীতি ফাঁস, তাঁরাও শাসকদলেরই লোকজন।

এসডিপিও (রামপুরহাট) কমল বৈরাগ্যের দাবি, ‘‘অভিযুক্তেরা পলাতক। তাঁদের সন্ধানে একাধিক বার তল্লাশি চালানো হয়েছে। আমি নিজেও একবার রেড করেছি। কিন্তু সাফল্য মেলেনি।’’ যদিও অভিযোগকারী এবং বাসিন্দাদের পাল্টা অভিযোগ, অভিযুক্তেরা সকলেই নিজেদের এলাকায় রয়েছেন। তবু কোনও অজ্ঞাত কারণে পুলিশ তাঁদের এখনও ধরেনি।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, নন্দীগ্রাম পঞ্চায়েতের কিছু বাসিন্দা (যাঁরা এলাকায় শাসকদলেরই কর্মী বলে পরিচিত) গত অগস্টে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করে দাবি করেন, একশো দিন প্রকল্পে এদরাকপুর, ভোগারপাড়া, কাঠিয়া, গোপনন্দীগ্রাম–আড়াইল— এই চারটি সংসদে মাটি কাটা, রাস্তা সংস্কার, নতুন রাস্তা নির্মাণের কাজে ব্যাপক আর্থিক দুর্নীতি করা হয়েছে। কোনও কাজ না করেও খাতায় কলমে কাজ দেখিয়ে ৩৬ লক্ষ টাকা লোপাট করা হয়েছে। এই গোটা দুর্নীতি চক্রে পঞ্চায়েতের প্রধান সালমা সুলতানা, তাঁর স্বামী ফজলুল হক, পঞ্চায়েতের অস্থায়ী কর্মী (যিনি প্রাক্তন প্রধান) আলতাফ হোসেন, পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক পরিতোষ প্রামাণিক-সহ সাত জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান ওই বাসিন্দারা। এসডিও (রামপুরহাট) সুপ্রিয় দাস বলেন, ‘‘লিখিত অভিযোগ মেলার পরে প্রশাসন তদন্ত শুরু করে। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মেলার পরেই গত ২১ অক্টোবর মুরারই ২ ব্লকের বিডিও ওই সাত জনের বিরুদ্ধেই থানায় এফআইআর করেন। ধরার ব্যাপারটা তো পুলিশের।’’

এলাকাবাসীর ক্ষোভ, দুর্নীতিতে অভিযুক্তেরা এখনও গ্রেফতার হল না। অথচ তৃণমূলের জেলা স্তরের নেতা, ব্লক সভাপতিরা গ্রামে এসে এলাকার তৃণমূল কর্মীদের এ নিয়ে বেশি জলঘোলা করতে বারবার সতর্ক করছেন বলে অভিযোগ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার এক তৃণমূল নেতার ক্ষোভ, ‘‘পুলিশ কী করবে তাদের ব্যাপার। কিন্তু, লক্ষ লক্ষ টাকা লোপাটে যুক্তদের বিরুদ্ধে দল কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না? তা হলে কি আমরা ধরে নেব দুর্নীতির শিকড় আরও গভীরে?’’ স্থানীয় নেতা-কর্মীদের হুঁশিয়ারি, অভিযুক্তেরা অবিলম্বে গ্রেফতার না হলে পরবর্তী পঞ্চায়েত ভোটে প্রতিটি সংসদেই দল বেকায়দায় পড়বে। নেতাদের সতর্কবাণী শুনেও এলাকার বেশ কিছু তৃণমূল কর্মীর সাফ বক্তব্য, উপযুক্ত বিচার না পেলে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হবেন।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তৃণমূলের মুরারই ২ ব্লকের সভাপতি আবু বাক্কার খোলাখুলিই বলছেন, ‘‘আর যেন এমন আর্থিক তছরুপের অভিযোগ না ওঠে তার জন্য কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। তার পরেও কিছু ঘটে থাকলে প্রশাসন হস্তক্ষেপ করে ব্যবস্থা নেবে।’’ একই কথা জানিয়েছেন জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা দলের রামপুরহাট মহকুমা পর্যবেক্ষক ত্রিদিব ভট্টাচার্যও। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এমন কাণ্ড আর যেন না হয়, বৈঠক করে দলীয় কর্মীদের তা জানানো হয়েছে।’’ অভিযুক্তদের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।

TMC Panchayat chief corruption
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy