Advertisement
০২ মে ২০২৪

ডাকঘরে চালু সিবিএস, লিঙ্ক-বিভ্রাটে ক্ষোভও

ডিজিটাল ইন্ডিয়ার হাতছানিতে সে দিনের সেই খড়ের ছাউনি ডাকবাক্স লাগানো মাটির বাড়ির বদলে ঝাঁ চকচকে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত হয়েছে ডাকঘর। বেশ কিছু শাখায় শুরু হয়েছে কোর ব্যাঙ্কিং সিস্টেম (সিবিএস)। তিনটি ডাকঘরে চালু হয়ে গিয়েছে এটিএম পরিষেবাও।

সিউড়িতে খুলেছে এটিএমও।

সিউড়িতে খুলেছে এটিএমও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৬ ০১:১৯
Share: Save:

ডিজিটাল ইন্ডিয়ার হাতছানিতে সে দিনের সেই খড়ের ছাউনি ডাকবাক্স লাগানো মাটির বাড়ির বদলে ঝাঁ চকচকে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত হয়েছে ডাকঘর। বেশ কিছু শাখায় শুরু হয়েছে কোর ব্যাঙ্কিং সিস্টেম (সিবিএস)। তিনটি ডাকঘরে চালু হয়ে গিয়েছে এটিএম পরিষেবাও।

আর আমূলে বদলে যাওয়া এই উন্নততর ডাকঘরকেই মাঝে মধ্যে থমকে রাখছে ‘ইন্টারনেটের লিঙ্ক’। অভিযোগ, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এলেও হঠাৎ হঠাৎ লিঙ্ক না থাকায় পরিষেবা ধাক্কা খাচ্ছে। হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ পেনশনপ্রাপক থেকে সাধারণ গ্রাহক, সকলকেই। টাকা তোলা-জমা, এমনকী পাসবই আপডেট করার জন্যও লম্বা লাইন পড়ছে সিবিএস চালু থাকা ডাক শাখায়। একই কাজের জন্য একাধিক দিন ঘুরতে হচ্ছে গ্রাহকদের। যার জেরে দিনের শেষ ধাক্কা খাচ্ছে ডাক বিভাগের ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ ভাবনা। উন্নততর পরিষেবা দিয়ে আরও বেশি করে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার প্রচেষ্টাও মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ডাক বিভাগ সূত্রের খবর, রামপুরহাট ও সিউড়ির হেড পোস্ট অফিস ছাড়াও জেলায় ৫৯টি সাব-পোস্ট অফিস রয়েছে। গত সোমবার পর্যন্ত সিবিএস চালু হয়েছে দু’টি হেড অফিস-সহ ১৯টি শাখা। লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে জুনের শেষ সপ্তাহের মধ্যেই প্রতিটি শাখায় চালু হয়ে যাবে কোর ব্যাঙ্কিং সিস্টেম। গ্রাহক জেলার যে কোনও প্রান্তের যে কোনও শাখা থেকে, এমনকী রাজ্যের যে কোনও প্রান্ত থেকে টাকা তোলা-জমা দেওয়া-সহ সব রকম পরিষেবা পাবেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে শান্তিনিকেতন সাব-পোস্ট অফিসে এবং মার্চ ও এপ্রিলে যথাক্রমে রামপুরহাট ও সিউড়ি হে়ড অফিসে চালু হয়েছে এটিএম পরিষেবা। ২০০-র বেশি গ্রাহকের হাতে পৌঁছে গিয়েছে এটিএম কার্ড। ডাক বিভাগের কর্তাদের মতে, জেলায় ১৩ লক্ষ ২৯ হাজার ৩২৯ জন গ্রাহক অচিরেই এই সব আধুনিক সুবিধা পাবেন।

কিন্তু এত কিছু সত্ত্বেও সমস্যার মূলে ইন্টারনেটে লিঙ্ক নিয়ে ভুগতে থাকা। গত সোমবারই সিউড়ি শাখায় অন্তত ১ ঘণ্টা ইন্টারনেট লিঙ্ক ফেল করায় যথেষ্টই বিরক্ত দেখাল গ্রাহকদের। পরিষেবার জন্য অপেক্ষায় থাকা তপনকুমার মজুমদার, মানস ঘোষ, মাধুরী মণ্ডলদের ক্ষোভ, অপেক্ষা করা এখন নিত্য দিনের সমস্যা। একই অভিযোগ শান্তিনিকেতন সাব-পোস্ট অফিসের গ্রাহক মদনমোহন মণ্ডল, মণি হেমব্রমদেরও। তাঁরা বলছেন, ‘‘যখন আধুনিক ব্যবস্থা চালু হয়নি, তখন অনেক শান্তিতে ছিলাম। এখন প্রায়ই ভুগতে হচ্ছে। পরিষেবা না পেয়ে ঘুরে যেতেও হচ্ছে।’’

ডাক বিভাগের কার্তারা অবশ্য জানাচ্ছেন, যে সংস্থা ইন্টারনেট সার্ভিস দেওয়ার বরাত পেয়েছে, তারা সমান্তরাল ভাবে দু’টি সার্ভারের ব্যবস্থা করছে। একটি সংস্থার নিজস্ব। অন্যটি যে এলাকায় যে নেটওয়ার্ক প্রচলিত, সেই সংস্থাকে ভাড়া নেওয়া। সিউড়ি, বোলপুরের ক্ষেত্রে বিসএনএলের সাহায্য নিয়েছে সংস্থা। মুশকিল হল, বরাত পাওয়া সংস্থার নিজস্ব সার্ভারটিই এই জেলায় সফল ভাবে কাজ করছে না। অতএব নির্ভর করতে হচ্ছে বিএসএনএলের উপরেই। কিন্তু, সরকারি সংস্থা হলেও বিএসএনএলের পরিষবা নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। এখন ডাক বিভাগের পরিষেবাও সেই জালে আটকে পড়েছে।

লিঙ্কের সমস্যা যে রয়েছে, তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন সিউড়ি হেড পোস্ট অফিসের সুপারিন্টেন্ডেন্ট পরিমল মিত্র। তাঁর অবশ্য দাবি, এই সমস্যা সাময়িক। তাঁরই সঙ্গে সুর মিলিয়ে আশাবাদী ডাক বিভাগের অন্য আধিকারিকেরাও। তাঁরা বলছেন, ‘‘সমস্যা দূর করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের চেষ্টার খামতি নেই। শীঘ্রই মিটবে সমস্যা। তখন পরিষেবা নিয়ে গ্রাহকদের আর অভিযোগ থাকবে না।’’ —নিজস্ব চিত্র

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ATM link post office
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE