চুরির পরে হাটজনবাজারের স্কুলে। নিজস্ব চিত্র।
চুরি হল আরও একটি স্কুলে!
গত কয়েক মাসে সিউড়ি, রামপুরহাট, বোলপুরের অন্তত সাতটি স্কুলে চুরি হয়েছে। তা দেখে সিভিক ভলান্টিয়ার দিয়ে রাত পাহারার ব্যবস্থা করেছিল পুলিশ। তাতেও ঠেকানো গেল না চুরি!
বৃহস্পতিবার সকালে সিউড়ির রামপ্রসাদ রায় স্মৃতি উচ্চবিদ্যালয়ে চুরির ঘটনা সামনে আসে। পুলিশ সূত্রের খবর, স্কুলের মেন গেট, কম্পিউটর রুম মিলিয়ে ছটি তালা ভেঙে দশটি কম্পিউটার সেট, দুটি অতিরিক্ত সিপিএউ, স্ক্যানারপ্রিন্টার, প্রজেক্টর নিয়ে চম্পট দেয় চোরেরা। এ দিনই সিউড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ করেন প্রধান শিক্ষক প্রবীরকুমার দাস।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, চুরি যাওয়া কম্পিউটরগুলি পড়ুয়াদের প্রশিক্ষণের জন্যে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে পাওয়া। প্রকল্পের জেলা কো-অর্ডিনেটর উত্তম হাজরা জানান, পড়ুয়াদের কম্পিউটর প্রশিক্ষণের জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্প আইসিটি (ইনফর্মেশন কমিউনিকেশন টেকনোলজি) স্কিমে ১০টি কম্পিউটার সেট , প্রজেক্টর, প্রিন্টার, স্ক্যানার-সহ কম্পিউটর প্রশিক্ষণের সব কিছু দেওয়া হয়েছিল। যাতে গ্রামের গরিব পড়ুয়ারা বিনা পয়সায় কম্পিউটর শিখতে পারেন।
একের পর এক স্কুলে কম্পিউটর চুরি হচ্ছে, অথচ পুলিশ তার কিনারা করতে না পারায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে শিক্ষক-অভিভাবক ও পড়ুয়াদের মধ্যে। হতাশ কেন্দ্রীয় প্রকল্পের জেলা কো-অর্ডিনেটরও। রাখঢাক না রেখেই উত্তমবাবু বলেন, ‘‘একের পর এক স্কুলে কম্পিউটার চুরি হচ্ছে। অথচ পুলিশ-প্রশাসন তার কিনারা করতে পারছে না। এটা দুর্ভাগ্যজনক।’’ তিন জন সিভিক ভলান্টিয়ার থাকার পরেও কী করে চুরি হল, উঠেছে সে প্রশ্নও। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের দাবি, ঘটনার রাতে ওই ভলান্টিয়াররা আদৌ উপস্থিত ছিলেন না। পুলিশ অবশ্য তেমনটা মানতে চায়নি।
জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বেশ কয়েক মাস আগে এ ভাবেই পরপর স্কুলে চুরি হচ্ছিল। কখনও কাগজ কুড়োনোর নাম করে, আবার কখনও চা বা মিষ্টির দোকানি সেজে দুষ্কৃতী দলের এক সদস্য পৌঁছে যেত স্কুলের কাছাকাছি। তারপরে কোথায় সিঁড়ি, কোথায় কম্পিউটারের ঘর সব খুঁটিয়ে দেখে নিত। এমনকী সেই ঘরে কী ধরণের তালা লাগানো রয়েছে সে খবরও দুষ্কৃতীদের কাছে পৌঁছে যেত এদেরই মাধ্যমে। এ ভাবেই সে সময় পাঁচ জেলার অজস্র স্কুল থেকে দুষ্কৃতীরা বহু কম্পিউটার চুরি করে বলে পুলিশের দাবি। পরে সেই চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করে পান্ডার হদিশ পায় পুলিশ।
স্কুল সূত্রের খবর, ২০১২ সালে জেলার ৮৪টি স্কুলকে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে কম্পিউটর ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি দেওয়া হয়। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি বাদ দিয়ে সাতশোরও বেশি পড়ুয়া (পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত) সিউড়ির এই স্কুলে কম্পিউটরের পাঠ নিচ্ছিল। পাঠ্য বইয়ে থাকা বিষয়গুলির সঙ্গে বিষয়ভিত্তিক প্রচুর সিডি ছিল। যে গুলি প্রজেক্টরের মাধ্যমে দেখানো হত। তাতে পড়ুয়াদের আকর্ষণও তৈরি হয়েছিল। সেই কম্পিউটার সেট এবং প্রজেক্টর চুরি যাওয়ায় মনমরা তনুশ্রী, বৃষ্টি, তনুজারা।
প্রধান শিক্ষক প্রবীরবাবু মানছেন, ‘‘খুব জনপ্রিয় হয়েছিল এই ক্লাস। পড়ুয়াদের উপস্থিতিও বেড়েছিল।’’ একই সঙ্গে তাঁর আক্ষেপ, এই স্কুলে এমন পড়ুয়ার সংখ্যাই বেশি যাদের পরিবারের আর্থিক সাচ্ছল্য নেই। ওরা কম্পিউটরের প্রাথমিক পাঠটুকু স্কুলেই নিচ্ছিল। সেটাই বন্ধ হয়ে গেল!
বালিকা বিদ্যালয় লোকপাড়ায়। কলেজের পর এ বার বালিকা বিদ্যালয় হতে চলেছে ময়ূরেশ্বরের লোকপাড়ায়। প্রায় সাড়ে তিন দশক প্রচেষ্টার পর ২০১০ সালে সরকারি ছাড়পত্র লাভ করে লোকপাড়া কলেজ। ওই কলেজ গড়তে স্থানীয় বাসিন্দারা টাকা এবং জমি দান করেন। তারপরেই এলাকার বাসিন্দারা ফের বছর খানেক আগে লোকপাড়ায় একটি বালিকা বিদ্যালয় গড়ার উদ্যোগ নেন। সম্প্রতি বোলপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে ওই বালিকা বিদ্যালয় গড়ার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী সবুজ সঙ্কেত দেন বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। বুধবার প্রস্তাবিত বালিকা বিদ্যালয়ের নামে ২ বিঘে জমি দান করেন স্থানীয় লোকপাড়া হাইস্কুল। এদিন লোকপাড়া হাইস্কুলে প্রয়োজনীয় রিজার্ভ ফাণ্ডের জন্য বৈঠক ডাকেন উদ্যোক্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy