Advertisement
E-Paper

সাহেববাঁধে কেন মরা মাছ ভাসছে, উদ্বেগ

পুরকর্মীরা জানাচ্ছেন, মরা মাছের চোখ বেরিয়ে এসেছে, মুখ খোলা।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২০ ০৩:২২
মরা মাছ তুলছেন পুরসভার কর্মীরা। ছবি: সুজিত মাহাতো

মরা মাছ তুলছেন পুরসভার কর্মীরা। ছবি: সুজিত মাহাতো

তিন দিন ধরে সাহেববাঁধের জলে মরা মাছ ভেসে ওঠায় প্রশ্ন উঠেছে পুরুলিয়ার বিভিন্ন মহলে। তবে কি ওই বাঁধের জল দূষিত হয়ে পড়েছে?

পুরুলিয়া শহরের ফুসফুস হিসেবে পরিচিত এই জাতীয় সরোবরের জলে সপ্তাহ দু’য়েক আগে মাছ মরে ভেসে ওঠে। বৃহস্পতিবারও এক কাণ্ড ঘটে। সে দিন সরোবরের উত্তর প্রান্তে শিকারা ঘাটের কাছাকাছি কিছু মাছ জলে ভাসতে দেখা যায়। শুক্রবার সেখান থেকে বাঁধের কিনারা বরাবর পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত মাছ ভাসতে দেখা যায়। ছড়ায় দুর্গন্ধ। পুরকর্মীরা তা তুলে নিয়ে যান। কিন্তু শনিবারও বাঁধের জলে মরা মাছ ভাসতে দেখা যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা তথা ডাক্তার দীপক চৌধুরী বলেন, ‘‘বাঁধের ধারে এত মাছ মরে পচে রয়েছে, যে দুর্গন্ধে পাশ দিয়ে যাতায়াত করা যাচ্ছে না।’’ এলাকার বাসিন্দা রোহিত লাটার কথায়, ‘‘সপ্তাহ দু’য়েক আগে যত মাছ ভাসতে দেখা গিয়েছিল, এ বার সংখ্যাটা অনেক বেশি। কেন এ ভাবে মাছ মারা যাচ্ছে, তা বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিয়ে পুরসভার খতিয়ে দেখা দরকার। বাঁধ কি ফের দূষিত হচ্ছে?’’

পুরকর্মীরা জানাচ্ছেন, মরা মাছের চোখ বেরিয়ে এসেছে, মুখ খোলা। কানকো থেকে রক্ত বেরিয়ে এসেছে। বিজ্ঞান মঞ্চের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক তথা চিকিৎসক নয়ন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীরা শনিবার সাহেববাঁধ থেকে জলের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এক নজরে দেখে মনে হয়েছে, বাঁধের জল দূষিত। বাঁধের জলের ধারে প্লাস্টিকের প্যাকেটবন্দি ফুল, আবর্জনা ভাসছে। জলে বিষক্রিয়ার কারণেও হতে পারে বা জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণেও মাছের মৃত্যু হতে পারে। আমরা পুরসভাকে বাঁধের জল পরিষ্কার করা, দূষিত জল বার করা, নজরদারি বাড়ানো-সহ কয়েক দফা প্রস্তাব দিয়েছি।’’ সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যার বিভাগীয় প্রধান সুব্রত রাহা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন গবেষক ছাত্র বাঁধের জল পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করেছেন।

পুরুলিয়া পুরসভার প্রশাসক তথা বিদায়ী পুরপ্রধান সামিমদাদ খান বলেন, ‘‘সপ্তাহ দু’য়েক আগে মাছের মৃত্যুর পরে পুরসভা সাহেববাঁধের জল পরীক্ষা করিয়েছিল। অস্বাভাবিক কিছু মেলেনি। ফের একই ঘটনা আমাদের চিন্তায় ফেলল।’’ তিনি জানান, জেলা মৎস্য দফতর, সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে কারণ খুঁজে বার করার জন্য চিঠি লেখা হবে। পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য বৈদ্যনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘কেউ বলছেন বাঁধে বিষাক্ত কিছু ফেলা হচ্ছে, তাই মাছ মারা যাচ্ছে। সে কথা মাথায় রেখে নজরদারিও বাড়ানো হচ্ছে।’’

পুরুলিয়া জেলা মৎস্য দফতরের সহকারী অধিকর্তা অলোক প্রহরাজ বলেন, ‘‘শুনেছি, মরা মাছের চোখ বেরিয়ে আসছে, মুখ খোলা, কানকো থেকে রক্ত বার হচ্ছে। দূষণের প্রভাবে জলে অ্যামোনিয়ার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় এমনটা হতে পারে। জল দূষণমুক্ত করা দরকার। তবে পুরসভা আমাদের সহায়তা চাইলে, সাহায্য করব।’’ তবে ওই মরা মাছ কারও খাওয়া উচিত নয় বলে সতর্ক করছেন নয়নবাবুরা।

Saheb Bandh Purulia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy