তৃণমূলের খয়রাশোল ব্লক সভাপতি কাঞ্চন অধিকারী ও দলের জেলা পরিষদ সদস্য নবগোপাল বাউড়িকে শুক্রবার মারধরের অভিযোগ উঠেছিল স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ আইনুস খান ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় শুক্রবার রাতেই পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন কাঞ্চন। পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার এক জনকে আটক করা হয়েছে।
শুক্রবার সকালে দলীয় কর্মসূতিতে যোগ দিতে লোকপুরের বারাবন গ্রামে গিয়েছিলেন কাঞ্চন ও নবগোপাল। সেখানে তাঁদের উপরে ‘প্রাণঘাতী হামলা’ হয়েছে দাবি করে সাত জনের নামে লিখিত অভিযোগ করেছেন কাঞ্চন। তার পরেই, খুনের চেষ্টা-সহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির নানা ধারায় মামলা রুজু করে তদন্তে নামে পুলিশ। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘এফআইআরে নাম থাকা এক জনকে আটক করা হয়েছে। উপযুক্ত প্রমাণ পেলে তাকে গ্রেফতার করে আদালতে তোলা হবে।’’
আভিযোগপত্রে আইনুস বা তাঁর অনুগামীদের নাম রয়েছে কিনা, তা স্পষ্ট করেনি পুলিশ। এ নিয়ে মন্তব্য এড়িয়েছেন কাঞ্চনের স্ত্রী আঁখিও। তিনি বলেন, ‘‘যে বা যাঁরা ঘটনার সঙ্গে যু্ক্ত, নাম দেওয়া হয়েছে তাঁদেরই। অন্য কারও নয়।’’ যদিও, কাঞ্চন-ঘনিষ্ঠদের দাবি, অভিযুক্তদের তালিকায় আইনুস ও তাঁর সঙ্গীদের পাশাপাশি, নাম রয়েছে কাঞ্চন-বিরোধী বলে পরিচিত দলের তিন নেতারও। পক্ষান্তরে, কাঞ্চন-বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, আক্রমণের ঘটনা নিন্দনীয়। তবে অভিযোগপত্রে ‘প্রতিহিংসার’ জেরে এমন কয়েক জনের নাম দেওয়া হয়েছে, যাঁরা ওই সময়ে ঘটনাস্থলেই ছিলেন না। বারবার চেষ্টা করেও আইনুসকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তাঁর মোবাইলে পাঠানো মেসেজের উত্তরও আসেনি।
এ দিকে, ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতার ও উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে এ দিন সকালে মিছিল করেন কাঞ্চনের স্ত্রী আঁখি ও দলের কিছু কর্মী-সমর্থক। আঁখি বলেন, ‘‘খয়রাশোলে দুষ্কৃতীরাজ চলতে দেওয়া যাবে না। আমার স্বামী এবং জেলা পরিষদের বর্যীয়ান এক সদস্যের উপরে আক্রমণের ঘটনার কথা জানতে পেরে সাধারণ মানুষ ক্ষোভে ফুঁসছেন। তাঁদের শান্ত করতেই এই মিছিল।’’ কাঞ্চন এবং নবগোপাল এখন চিকিৎসাধীন।
তৃণমূল সূত্রে খবর, খয়রাশোলে দীর্ঘদিন ধরেই দ্বন্দ্বে লিপ্ত দলের দুই গোষ্ঠী। নানা সময়ে তা প্রকাশ্যে এসেছে। ঘটনার পরে কাঞ্চন ও নবগোপালের অভিযোগ ছিল, কেন্দ্রীয় ‘বঞ্চনার প্রতিবাদে ডাকা সভায় গিয়েছিলেন তাঁরা। খয়রাশোলের রূপসপুরের বারাবন গ্রামে পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ আইনুস খানের নেতৃত্বে দলের বেশ কিছু লোক রড, লাঠি নিয়ে তাঁদের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। প্রাণে মারার চেষ্টা হয়। কোনওরকমে বেঁচে যান তাঁরা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)