Advertisement
E-Paper

চোখ রাঙিয়ে চলে গেল ফণী

জেলা আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘূর্ণীঝড়ের জেরে শুক্রবার দিনভর বাঁকুড়ায় বৃষ্টি হয়েছে ১১২.২ মিলিমিটার। রাতের দিকে টানা ঝড় হয়। যদিও ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৪০-৪২ কিলোমিটারের মধ্যেই ছিল। 

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৯ ০৩:৫০
বিপত্তি: বিষ্ণুপুরের রাধানগর গ্রামের কাছে হরিণমুড়ি খালের উপরে অস্থায়ী রাস্তা ভাসিয়ে বয়ে যাচ্ছে জল। ছবি: শুভ্র মিত্র

বিপত্তি: বিষ্ণুপুরের রাধানগর গ্রামের কাছে হরিণমুড়ি খালের উপরে অস্থায়ী রাস্তা ভাসিয়ে বয়ে যাচ্ছে জল। ছবি: শুভ্র মিত্র

বর্ষাল, তবে গর্জাল না। শুক্রবার দিনভর বাঁকুড়ায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হলেও ঝড়ের গতি বেশি ছিল না। ফলে সার্বিক ভাবে জেলায় কিছু ক্ষয়ক্ষতি হলেও বড়সড় সমস্যা এড়ানো গিয়েছে বলেই প্রশাসন সূত্রে খবর।

জেলা আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘূর্ণীঝড়ের জেরে শুক্রবার দিনভর বাঁকুড়ায় বৃষ্টি হয়েছে ১১২.২ মিলিমিটার। রাতের দিকে টানা ঝড় হয়। যদিও ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৪০-৪২ কিলোমিটারের মধ্যেই ছিল। জেলার সব প্রান্তে ঝড়ের গতিবেগ সমান ছিল না। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, ঝড়-বৃষ্টির সব থেকে বেশি প্রভাব পড়েছে বিষ্ণুপুর মহকুমার পূর্ব বর্ধমান লাগোয়া ইন্দাস ও পাত্রসায়র ব্লকে।

ইন্দাস ব্লক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আকুই ১, মঙ্গলপুর ও রোল পঞ্চায়েত এলাকায় ৫২টি বাড়ি সম্পূর্ণ ও ৪২৫টি বাড়ি আংশিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আকুই ১ পঞ্চায়েতের উত্তর মান্দরা গ্রামে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান অনেকটাই বেশি। এই গ্রামের ৫০টিরও বেশি পরিবারকে রাতে স্থানীয় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ও প্রাথমিক স্কুলের পাকা ছাদের তলায় নিয়ে এসে রাখা হয়। গ্রামের প্রায় ২৫টি বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গোয়ালে চাপা পড়ে ইন্দাস ব্লকে দু’টি গরু ও একটি ছাগলের মৃত্যু হয়েছে।

ইন্দাস লাগোয়া পাত্রসায়র ব্লকেও ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই ব্লকে ৩৫টি বাড়ি সম্পূর্ণ ও দেড়শোটি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ব্লক দফতর জানিয়েছে। পাত্রসায়রের বেলুট রসুলপুর ও কুশদ্বীপ পঞ্চায়েত এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমান বেশি। কুশদ্বীপের সাহাপুর গ্রামের বিশ্বনাথ কর্মকার, রঞ্জন বাউড়ি, পান্ডুয়া এলাকার সূদন ঘড়ুই, কুশদ্বীপ এলাকার কার্তিক রায়, আনন্দ বাউড়িদের বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে গিয়েছে। স্থানীয় ক্লাব ও প্রাথমিক স্কুলে ওই পরিবারগুলিকে রাখা হয় রাতে। সকালে সবাই বাড়ি ফিরে যান। ত্রাণ সংগ্রহ করেন।

সাহাপুরের বিশ্বনাথবাবু বলেন, “ঝড়ে বাড়ি পুরো ভেঙে গিয়েছে। প্রশাসনের তরফে একটি ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা দিয়ে মাথা গোঁজার ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়।” পান্ডুয়ার সুদনবাবুর আক্ষেপ, “প্রশাসনের কাছে বারবার পাকা বাড়ি গড়ে দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছিলাম। কিন্তু তা হয়নি। এ বার অন্তত প্রশাসন আমাদের সমস্যা বুঝে দ্রুত বাড়ি বানানোর ব্যবস্থা করুক।”

বিষ্ণুপুর থেকে পাত্রসায়র যাওয়ার পথে ধানগড়া এলাকায় কয়েকটি দোকানে জল ঢুকে গিয়েছে। হারাধন ঘোড়ুই নামে এক মুদির দোকানদার বলেন, “শুক্রবার সকালেই জিনিসপত্র পাটাতনে তুলে দিয়েছি। তবু কিছু কিছু জিনিস ভিজেছে। হাঁটু জল পেরিয়েই খদ্দের আসছে জিনিস কিনতে।”

অন্য দিকে খাতড়া মহকুমার বিভিন্ন ব্লকেও বেশ কিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাইপুর ব্লক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, উপরবান্দা এলাকায় ঘরের দেওয়াল ধসে একটি ছাগলের মৃত্যু হয়েছে। রাইপুরের ধানাড়া পঞ্চায়েতের কয়েকটি গ্রামে ঘরবাড়ির চালা ঝড়ে উড়ে গিয়েছে বলে স্থানীয়েরা দাবি করেছেন। ব্লক দফতরের তরফে সেই দাবি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস বলেন, “ঝড়-বৃষ্টিতে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁদের ত্রাণ ও সরকারি সাহায্য দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পরিস্থিতির উপরে আমাদের

নজর রয়েছে।’’

Cyclone Fani ফণী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy