সিউড়িতে নির্যাতিতার বাবা। —নিজস্ব চিত্র।
বিশ্বভারতীতে ভিন্ রাজ্যের ছাত্রী নির্যাতন-কাণ্ডে উপাচার্য, কলাভবনের অধ্যক্ষ এবং বিশ্ববিদ্যালয়য় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশে গঠিত তথ্য অনুসন্ধান কমিটির এক সদস্যের বিরুদ্ধে সরব হলেন, নির্যাতিতার বাবা। বুধবার, তিনি বীরভূমের জেলা পুলিশসুপার মুকেশ কুমারের সঙ্গে দেখা করেন। জানতে চান, তাঁর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তের অগ্রগতি। এবং তাঁর পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে দ্রুত শুনানি শুরু করার প্রয়োজনে মামলাটিকে সিকিমে সরানোর আর্জি জানিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, এক মাসের মধ্যে সদর্থক পদক্ষেপ না মিললে, তিনি দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সামনে আত্মঘাতী হবেন।
২০১৪ সালের ২৬ অগস্ট কলাভবনের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রীকে নির্যাতনের বিষয়টি জানাজানি হয়। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ থানায় অভিযোগ জানালে, ৩০ তারিখ তিন সিনিয়র ছাত্রকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই মামলা এখন আদালতে বিচারাধীন। ইতিমধ্যে তার চার্জশিটও জমা পড়েছে। এ দিকে বারেবারে অসুস্থতার কারণে নির্যাতিতাকে বিশ্বভারতী থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় তার পরিবার। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই, নড়েচড়ে বশে বিভিন্ন মহল। কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক এবং বিশ্ববিদ্যালয়য় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশে গঠিত হয় এক সদস্যের তথ্য অনুসন্ধান কমিটি। বিশ্বভারতীর বিশাখা কমিটি, পুলিশ এবং ওই তথ্য অনুসন্ধান কমিটি দফায় দফায় নির্যাতিতা এবং অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা বলে। এমনকী পুলিশ সঙ্গে কথা বলতে এসে নির্যাতিতা ফের অসুস্থ হয়। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাকে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে দীর্ঘ দিন চিকিৎসায় থাকার পর বাড়ি ফিরে যান ছাত্রী। তার চিকিৎসার জন্য এক লক্ষ টাকা দিয়েছিল রাজ্য সরকার।
বুধবার নির্যাতিতার বাবার অভিযোগ, ‘‘মুখমন্ত্রীর সঙ্গে নবান্নে দেখা করার পর তাঁর প্রতিশ্রুতি মতো টাকা পেলেও ঘটনার এক বছর পরেও, সেই অর্থে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। মেয়ের শারীরিক এবং মানসিক অবস্থা দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে। ভালো চিকিৎসার প্রয়োজন আছে যেখানে, আমার সেই আর্থিক সঙ্গতি নেই!’’
ওই নির্যাতিতা বর্তমানে গ্যাংটকের এসটিএনএম হাসপাতালের সাইক্রিয়াটিক বিভাগে চিকিৎসাধীন। সে কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি আবার নতুন করে কলাভনের অধ্যক্ষ, বিশ্বভারতীর উপাচার্য এবং ইউজিসির এক সদস্য যিনি আমাকে বর্ধমানে ধমক দিয়েছিলেন তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে চাই। যদি একমাসের মধ্যে কোনও তরফে সদর্থক পদক্ষপ না নেওয়া হয়, তাহলে আগামী মাসের ৯ তারিখ দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী দফতরের সামনে আমি আত্মঘাতী হব।”
জেলা পুলিশসুপার নির্যাতিতার বাবাকে আশ্বাস দেন। তাঁর পাশে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বিশ্বভারতীর ছাত্র পরিচালক শমিত রায়ও। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘ওই ছাত্রীর বাবা এসে কিছু নথি চেয়েছিলেন, আমরা দিয়েছি। তাঁকে সহযোগিতা করার কথা জানিয়েছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy