জয়রামবাটির জগদ্ধাত্রী পুজো। —নিজস্ব চিত্র।
করোনার আবহে সীমিত সময়ের জন্যই জয়রামবাটির জগদ্ধাত্রী পুজো দেখার সুযোগ হয়েছিল দর্শনার্থীদের। তবে প্রায় দেড়শোর বছরের পুরনো এই পুজোয় আগের মতোই ভিড় উপচে পড়েছে। শুক্রবার সকাল থেকেই দূরদূরান্ত থেকে তাঁরা ভিড় করেছেন জয়রামবাটির মাতৃ মন্দিরে। কথিত, স্বপ্নাদেশ পেয়ে নিজের বাড়িতে এই পুজোর সূচনা করেন সারদা দেবীর মা শ্যামাসুন্দরী দেবী। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমী তিথির এই পুজো করা হয়।
জগদ্ধাত্রী পুজো উপলক্ষে শুক্রবার ভোর থেকেই জয়রামবাটির মন্দিরে ছিল সাজো সাজো রব। ভোর সাড়ে ৫টা থেকে মন্দিরের গর্ভগৃহের সামনের নাটমন্দিরে পুজো শুরু হয়। মাতৃ মন্দিরের সময়সূচি মেনে এবং করোনাবিধির কথা মাথায় রেখে মন্দিরে প্রবেশ করেন দর্শনার্থীরা। মাতৃ মন্দিরের তরফে জানানো হয়েছে, করোনা পরিস্থিতিতে জন্য সীমিত সময়ের জন্যে পুজো দেখার সুযোগ পেয়েছেন তাঁরা।
জয়রামবাটির এ পুজোর পিছনে নানা কথা শোনা যায়। অনেকে বলেন, এক সময় এখানে পুজোর প্রচলন ছিল না। গ্রামের মুখোপাধ্যায় পরিবারের কালীপুজো ছিল বিখ্যাত। কথিত, কালীপুজোর নৈবেদ্য দেওয়ার জন্য বছরভর ধান সেদ্ধ করে তা তুলে রাখতেন সারদা দেবীর মা শ্যামাসুন্দরী দেবী। কালী পুজোর সময় সেই নৈবেদ্য পাঠানো হত মুখোপাধ্যায় পরিবারের কালী মন্দিরে। প্রায় দেড়শো বছর আগে কোনও এক কারণে সেই নৈবেদ্য পুজোয় ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল শ্যামাসুন্দরীদেবীর কাছে। তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান তিনি। সে রাতেই পান স্বপ্নাদেশ পান শ্যামাসুন্দরী দেবী। বাড়িতে জগদ্ধাত্রী পুজো চালু করে ওই চাল নৈবেদ্য হিসাবে উৎসর্গ করার নির্দেশ পান তিনি। সে সময় থেকেই জয়রামবাটিতে নিজের বাড়িতে জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা করেছিলেন শ্যামাসুন্দরী দেবী। তাঁর মৃত্যুর পর বেশ কয়েক বছর নিজেই এ পুজো পরিচালনা করতেন সারদা দেবী।
অনেকে বলেন, প্রতি বছর জগদ্ধাত্রী পুজোর সময় পৈতৃক বাড়িতে উপস্থিত থাকতেন সারদা দেবী। মাতৃ মন্দিরের তরফে জানা গিয়েছে, জীবনের শেষ লগ্নে ১৯১৯ সালেও জগদ্ধাত্রী পুজোয় জয়রামবাটিতে উপস্থিত ছিলেন তিনি। পরবর্তীকালে জয়রামবাটিতে মাতৃ মন্দির প্রতিষ্ঠা হলে মঠের উদ্যোগে জগদ্ধাত্রী পুজোর আয়োজন করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy