Advertisement
E-Paper

নেতার বিরুদ্ধে অনশনে দলের কর্মীরাই

তিনি জেলা তৃণমূলের ‘প্রভাবশালী’ নেতা। তিনি জেলা পরিষদে শাসকদলের দলনেতাও। পুরুলিয়ার সেই তৃণমূল নেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেই এ বার দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পার্টি অফিসে অনশনে বসলেন দলেরই কর্মীদের একাংশ!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৬ ০১:৫২
তৃণমূলের দলীয় অফিসে পড়ল পোস্টার। —নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূলের দলীয় অফিসে পড়ল পোস্টার। —নিজস্ব চিত্র।

তিনি জেলা তৃণমূলের ‘প্রভাবশালী’ নেতা। তিনি জেলা পরিষদে শাসকদলের দলনেতাও। পুরুলিয়ার সেই তৃণমূল নেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেই এ বার দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পার্টি অফিসে অনশনে বসলেন দলেরই কর্মীদের একাংশ!

জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির অন্যতম সদস্য সুজয়বাবুকে সরানোর দাবিতে মঙ্গলবার বিকেল থেকে পুঞ্চার বদড়া গ্রামে কিছু তৃণমূল কর্মী একাংশ অনশন শুরু করেছিলেন। ঘটনাচক্রে পুঞ্চারই বাসিন্দা সুজয়বাবু। তাঁর বিরুদ্ধে সরাসরি দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার থেকে ওই অনশন পুঞ্চার তৃণমূল কার্যালয়ে শুরু করেছেন ওই তৃণমূল কর্মীরা। এ দিন সেই কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেল, দুই মহিলা-সহ বারান্দায় জনা পঁচিশেক তৃণমূল কর্মী বসে আছেন। পার্টি অফিসের দেওয়ালে ও দরজায় এবং বাইরের বেদিতে কম্পিউটারে ছাপানো লিফলেট সাঁটানো। তাতে লেখা আছে, ‘দুর্নীতিবাজ সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিচারের আশায় আমরণ অনশন চলছে চলবে’ কিংবা ‘সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় জেনে রাখুন, আমরা তোমার গুন্ডারাজ মানছি না, মানব না’।

অনশনের কথা শুনেছেন সুজয়বাবু। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি পুরুলিয়ায় রয়েছি। শুনেছি, কয়েক জন আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে আমাকে সরানোর দাবিতে অনশনে বসেছেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনও অভিযোগ তো প্রমাণিত হয়নি।’’ পরে তিনি এ-ও দাবি করেন, অনশনে বসা লোকজন তৃণমূলের কর্মীই নন। দলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘দলীয় ভাবে বিশদে খোঁজ নিচ্ছি। এই ঘটনা রাজ্য নেতৃত্বকেও জানানো হবে।’’

যাঁরা অনশনে বসেছেন, তাঁদের অন্যতম পুঞ্চার বদড়া গ্রামের মনোরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, বাগদার কুমারেশ মুখোপাধ্যায়, জয়কাল্লা গ্রামের প্রকাশ দত্তদের অভিযোগ, ‘‘আমরা দলের জন্মলগ্ন থেকেই তৃণমূল কর্মী। সুজয়বাবু আমাদের মতো কর্মীদের সাহায্য নিয়েই জেলা নেতা হয়েছেন। কিন্তু, দল ক্ষমতায় আসতেই উনি স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজন পোষণ এবং নানা দুর্নীতি শুরু করেছেন। আমরা এর প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে ওঁর বিরাগভাজন হই।’’ তাঁদের দাবি, সুজয়বাবুর বিরুদ্ধে জেলা সভাপতি, সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো, মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু-সহ অনেককে জানিয়েছেন। কিন্তু, কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

মনোরঞ্জনবাবুর দাবি, প্রতিবাদ করায় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে জানিয়ে লিফলেটও ছড়িয়েছেন সুজয়বাবু। পরে জেলা সভাপতি তাঁকে দলীয় কর্মীর স্বীকৃতি দিয়ে পুঞ্চার পাঁচটি অঞ্চল দেখভাল করার দায়িত্ব দিয়েছেন। এই সমস্ত অভিযোগ তিনি কলকাতায় গিয়ে দলের শীর্ষনেতৃত্বকে জানিয়েছেন বলেও তাঁর দাবি। শান্তিরামবাবুও বলেছেন, ‘‘দলনেত্রীর কাছে ওই কর্মী গিয়েছিলেন বলে আমি জেনেছি। তবে কী কথা হয়েছে, জানি না।’’ আর সভাধিপতির সাফ বক্তব্য, ‘‘অনশনে বসা ওঁরা সকলেই এক সময় সুজয়বাবুর বিশ্বস্ত অনুগামী ছিলেন। সুজয়বাবু যদি খারাপ কিছু করে থাকেন, তার ফলও পেতে হবে।’’

জেলা তৃণমূলেরই একাংশ কিন্তু দাবি করছেন, সুজয়বাবুর বিরুদ্ধে আচমকা এমন দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অনশনে বসার পিছনে দলেরই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থাকতে পারে।

TMC Leader Worker
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy