E-Paper

পায়েস, পেস্ট্রিতে স্কুলে খাদ্য উৎসব

কেউ বানিয়েছে নলেন গুড়ের পায়েস, কেউ পাটিসাপটা, কেউ বকুল পিঠে, কেউ সুজির পিঠে, কেউ বা নারকেল নাড়ু। ছিল মোমো, চাউমিন থেকে কেক, পেস্ট্রি, গরম গুলাবজামুনও।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:০৩

থরে থরে সাজানো মিষ্টি, পিঠে, পায়েস, কেক থেকে ফুচকা, আলুকাবলি, পাপড়িচাট! চোখের সামনে জিভে জল আনা খাবার দেখে ক্রেতাদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছিল। মাথায় ক্যাপ আঁটা বিক্রেতারা, গ্লাভস হাতে একে একে ক্রেতাদের বাটিতে সেই সব খাবার তুলে দিল। হিসেব করে দামও নিল।

কোনও মেলা নয়, স্কুল চত্বরেই বসল খাদ্য মেলা। ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই পড়ুয়া। ‘স্টুডেন্ট উইক’ উপলক্ষে সোমবার খাদ্যমেলায় মাতল দু’জেলার বিভিন্ন স্কুল।

পুরুলিয়া শান্তময়ী গার্লস হাইস্কুলের অষ্টম-একাদশ শ্রেণির ১৮০ জন পড়ুয়া ১৮টি দোকান সাজিয়ে বসেছিল। কেউ বানিয়েছে নলেন গুড়ের পায়েস, কেউ পাটিসাপটা, কেউ বকুল পিঠে, কেউ সুজির পিঠে, কেউ বা নারকেল নাড়ু। ছিল মোমো, চাউমিন থেকে কেক, পেস্ট্রি, গরম গুলাবজামুনও। তবে প্রায় সবারই নজর আকর্ষণের কেন্দ্রে ছিল ফুচকা, আলুকাবলি। বন্ধুদের হাতে তৈরি খাবারের স্বাদ নিতে ভিড় এমনই ছিল যে খাবারের পাত্র শূন্য হতে বেশিক্ষণ সময় লাগেনি।

শ্রীপর্ণা দত্ত নামে এক পড়ুয়ার কথায়, ‘‘শিক্ষিকাদের পরামর্শ ও বাড়ির লোকেদের সহায়তায় আমি চিনি ও গুড়ের নারকেল নাড়ু তৈরি করেছিলাম। খুব উপভোগ করলাম।’’ নবম শ্রেণির চৈতালি নন্দী, আঞ্জুমা খাতুন বা দশম শ্রেণির রাজন্যা মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘সমস্ত খাবার এত তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে যাবে জানলে আরও বেশি করে বানাতাম।’’ আয়োজনের দায়িত্বে থাকা অন্যতম শিক্ষিকা সুস্মিতা রায়চৌধুরী জানান, এমন যে সাড়া পড়বে, ভাবেননি।

প্রধান শিক্ষিকা ইন্দ্রাণী পাল বলেন, ‘‘ছাত্রীদের একসঙ্গে কাজ করার মনোভাবের পাশাপাশি খাবার তৈরি করে বিক্রির অভিজ্ঞতাও হল। পরে এই অভিজ্ঞতা ওঁদের কাজে লাগবে।’’ তিনি জানান, কোন খাবার কোন পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়েছে, তার পুষ্টিগুণ কতটা, ইত্যাদি নিয়ে পড়ুয়াদের কাছে তাঁরা রিপোর্টও নেবেন।

ইঁদপুর সরোজিনী বালিকা বিদ্যালয়ে খাদ্য উৎসবের উদ্বোধন করেন বিডিও (ইঁদপুর) সুমন্ত ভৌমিক। ছিলেন ইঁদপুর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক পার্থসারথি পাত্র-সহ ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকেরা। ছিল মোচার চপ, ঝালমুড়ি, পাপড়ি চাট, ফুচকা, মোমো, ইডলি, নলেন গুড়ের পায়েস, পাটিসাপটা থেকে হরেক পিঠে।

নবম শ্রেণির শুভ্রা গঙ্গোপাধ্যায়, প্রিয়াঙ্কা মুদি বলে, ‘‘বাড়িতে পিঠে, পায়েস, ঘুঘনি-সহ বিভিন্ন খাবার তৈরি করে এনেছিলাম। খুব ভাল বিক্রি হয়েছে।’’ স্কুল জানিয়েছে, সমস্ত খরচ বাদে মেয়েরা প্রায় চার হাজার টাকা লাভ করেছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হয়। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা স্বপ্না মণ্ডল জানান, পাশের স্কুলের পড়ুয়ারা তো বটেই, অভিভাবকেরাও এসেছিলেন।

অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক পার্থসারথি পাত্র জানান, ইঁদপুর ব্লকের মধ্যে এই স্কুলই খাদ্য উৎসবের আয়োজন করেছিল।

সোনামুখীর ইছারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে খাদ্য উৎসবে ঘণ্টাখানেকেই ২২টি স্টলের সব খাবার শেষ হয়ে যায়। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাপসকুমার চৌধুরী বলেন, “ফি বছর এই খাদ্য মেলা যাতে হয়, সেই ব্যবস্থা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ করবে।”

বাঁকুড়ার জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) পীযূষকান্তি বেরা বলেন, ‘‘জেলার বিভিন্ন স্কুল নিজেদের মতো করে খাদ্য উৎসবের আয়োজন করেছিল। পড়ুয়াদের স্কুলে আসার আগ্রহ বাড়াতেই এ ধরনের কর্মসূচি নেওয়া হয়।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

purulia Food festival

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy