Advertisement
E-Paper

বালি-গর্তে ডুবে মৃত্যু বালিকার

বালি মাফিয়াদের নিত্য বালি পাচারে নদী গর্ভে তৈরি হচ্ছে গভীর গর্ত। শনিবার ব্রাহ্মণী নদীতে স্নান করতে নেমে তেমন গর্তেই তলিয়ে মৃত্যু হল দশ বছরের এক বালিকার!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৬ ০৭:২৪

বালি মাফিয়াদের নিত্য বালি পাচারে নদী গর্ভে তৈরি হচ্ছে গভীর গর্ত। শনিবার ব্রাহ্মণী নদীতে স্নান করতে নেমে তেমন গর্তেই তলিয়ে মৃত্যু হল দশ বছরের এক বালিকার!

নলহাটি থানার জয়পুরের ঘটনা। পুলিশ জানায়, মৃতার নাম মোনালিসা ঘোষ (১০)। ঘটনার ঘণ্টা দুয়েক পরে স্থানীয় বাসিন্দা ও দমকল কর্মীরা দেহটি উদ্ধার করে। পরে রামপুরহাট হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য দেহটিকে পাঠানো হয়। মোনালিসার বাবা সপ্তমবাবু ও পরিজনরা তার মৃত্যুর জন্য নদী ঘাট থেকে অবাধ বালি চুরিকেই দায়ী করছেন। বালি মাফিয়াদের উপদ্রবে জেলাজুড়েই নদী গর্ভে গভীর গর্ত তৈরি হয়েছে। বিপজ্জনক এই গর্তগুলি ভয়াল হয়ে ওঠে বর্ষাকালে। ঘাট-বা ঘাট সংলগ্ন এলাকায় এমন গর্তে ডুবেই ফি বছর মৃত্যু হয় বহু মানুষের। মোনালিসার যে ঘাটে মৃত্যু হয়েছে, তিন দিন আগেই নদীতে জল আসার জন্য সেই ঘাটেই স্নান করতে নেমে গভীর গর্তের মধ্যে এক মহিলা ডুবে যান। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আরও দু’জন ডুবে যান। কোনও ক্রমে তিন জনকে উদ্ধার করা হয়। বারবার এমন ঘটনায় প্রশ্নের মুখে সেচ দফতর। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দফতরের কর্মীদের একাংশ বালি মাফিয়াদের থেকে তোলা নেয়। সে কারণেই বেআইনি কাজ রুখতে তেমন তৎপরত হতে দেখা যায় না প্রশাসনকে।

এ দিনও মোনালিসার ছোট বোনকে উদ্ধার করা গেলেও এ দিন আর তাকে বাঁচাতে পারেনি পড়শিরা। সপ্তমবাবু বলেন, ‘‘বালি মাফিয়াদের উপদ্রবে নদীতে বাঁধ বলে আর কিছু নেই। নদী থেকে রোজই অবৈধ ভাবে বালি পাচার হয়ে যাচ্ছে। যন্ত্রের সাহায্যে বালি তোলার জন্য নদীতে যেখানে-সেখানে গভীর গর্ত তৈরি হয়েছে। মেয়ে নদীতে স্নান করতে নেমে সেই গর্তের মধ্যেই পড়ে যায়। সব শেষ হয়ে গেল!’’ মোনালিসা তার মামার বাড়ি মুরারইয়ের গোবিন্দপুরে থেকে পড়াশোনা করত। ছুটিতে শুক্রবারই বাড়ি এসেছিল। বড় মেয়ের মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়ে মা মিতালিদেবী বলেন, ‘‘সকাল এগারটা নাগাদ মেজ মেয়ে পাঁচ বছরের দিশাকে সঙ্গে নিয়ে স্নানে গিয়েছিল। বাড়ির থেকে বেশি দূরে ঘাট নয় বলে মেয়েদেরকে স্নান করতে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু ওই ভাবে যে তলিয়ে যাবে ভাবতেই পারিনি!’’ ঘাটের দিক থেকে পড়শিদের সোরগোল শুনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন মিতালিদেবী। তিনি বলেন, ‘‘পড়িমড়ি করে ঘাটের দিকে ছুটতে ছুটতে শুনতে পেলাম, বালির খালে পড়ে আমার দুই মেয়েই নদীর জলে তলিয়ে গিয়েছে!’’

সেচ বিভাগের ময়ূরাক্ষী উত্তর ক্যানেলের নলহাটি বিভাগের সহকারী বাস্তুকার সুকান্ত দাস বলেন, ‘‘বালি চোরদের উপদ্রবের বিরুদ্ধে অনেক আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েও বন্ধ করা যায়নি!” রামপুরহাট মহকুমাশাসক সুপ্রিয় দাসও ব্রাহ্মণী নদী থেকে বালি চুরির বিষয়টি মেনে নেন। তিনি বলেন, ‘‘অনেক দিন ধরেই নলহাটি থানায় বালি পাচারের অভিযোগ আসছে। এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সেচ দফতরকে বলা হয়েছে।’’

Sand-pit Death Accident
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy