Advertisement
১৫ মে ২০২৪

বাঁকুড়ায় টক্কর দিচ্ছে ছাত্রীরা

জেলার স্কুলগুলির মধ্যে গত কয়েক বছরের মতো এ বারও সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে পোয়াবাগানের বাঁকুড়া বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতন হাইস্কুল ও বাঁকুড়া মিশন গার্লস হাইস্কুল। মেধা তালিকার প্রথম দশে এই দু’টি স্কুল থেকে তিন জন করে মোট ছ’জন ছাত্রছাত্রী উঠে এসেছে। 

মিলিয়ে: বিষ্ণুপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিভিন্ন স্কুলের মার্কশিট বিলি হল। সংগ্রহ করার পরে চলছে সেগুলি গুছিয়ে নেওয়া। বুধবার। ছবি: শুভ্র মিত্র

মিলিয়ে: বিষ্ণুপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিভিন্ন স্কুলের মার্কশিট বিলি হল। সংগ্রহ করার পরে চলছে সেগুলি গুছিয়ে নেওয়া। বুধবার। ছবি: শুভ্র মিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৮ ০১:২৬
Share: Save:

মাধ্যমিকে এ বারও বাঁকুড়ার পড়ুয়াদের জয়জয়কার।

রাজ্যের মেধা তালিকার সম্ভাব্য প্রথম দশের তালিকায় এই জেলার দশ জন জায়গা করে নিয়েছে। বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুরের মতো শহরাঞ্চলের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলের মেধাও নজর কেড়েছে। কোতুলপুরের গোগড়া উচ্চবিদ্যালয়, সিমলাপাল মদনমোহন উচ্চবিদ্যালয়, বড়জোড়া হাইস্কুল থেকেও কৃতীরা রাজ্যের প্রথম দশে জায়গা করে নিয়েছে।

স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া জেলা থেকে এ বার ২৩ হাজার ১৫৭ জন ছাত্রের মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। তাদের মধ্যে ২৩ হাজার ৯৭ জন পরীক্ষায় বসে। তাদের তুলনায় অবশ্য ছাত্রীদের সংখ্যা ছিল বেশি। জেলায় এ বার ২৪ হাজার ৫৬৩ জন ছাত্রীর মাধ্যমিকে বসার কথা থাকলেও, ১০০ জন পরীক্ষা দেয়নি। যদিও সাফল্যের দৌড়ে ছাত্রীদের টপকে দিয়েছে ছাত্রেরা। ছাত্রেরা পাশ করেছে ৮৮.৫৭ শতাংশ আর ছাত্রীদের পাশের হার ৭৭.৮০ শতাংশ।

জেলার স্কুলগুলির মধ্যে গত কয়েক বছরের মতো এ বারও সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে পোয়াবাগানের বাঁকুড়া বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতন হাইস্কুল ও বাঁকুড়া মিশন গার্লস হাইস্কুল। মেধা তালিকার প্রথম দশে এই দু’টি স্কুল থেকে তিন জন করে মোট ছ’জন ছাত্রছাত্রী উঠে এসেছে।

গত বছরও মাধ্যমিকে নজর কেড়েছিল বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতন। সে বার ওই স্কুলের মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় পাঁচ জন ছাত্রছাত্রীর নাম ছিল প্রথম দশে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক তপনকুমার পতি বলেন, “১৯৯৮ সাল থেকে আমাদের স্কুলের পথ চলা শুরু হয়েছে। এই দু’দশকের ইতিহাসে আজ পর্যন্ত স্কুলের কোনও পড়ুয়া মাধ্যমিকে অকৃতকার্য হয়নি, এটাই আমাদের গর্ব।” তিনি জানাচ্ছেন, পড়াশোনার পাশাপাশি পড়ুয়াদের ব্যক্তিত্ব বিকাশের দিকেও স্কুল বিশেষ নজর রাখে। তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যতের জন্য সব দিক থেকে প্রস্তুত করা। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা আলাদা ভাবে প্রতিটি পড়ুয়ার প্রতি বিশেষ নজর রাখেন। কোন পড়ুয়া কোথায় দুর্বল সেটি খুঁজে বের করতে পারলেই অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।”

বাঁকুড়া মিশন গার্লস হাইস্কুলও বহু বছর ধরেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ছাপ ফেলে আসছে। এ বারও নজর কাড়া সাফল্য পেয়েছে ওই স্কুল। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অবিজিতা চৌধুরী বলেন, “তিন জন ছাত্রী প্রথম দশে থাকলেও, আরও কিছু ছাত্রীও ওই তালিকায় উঠতে পারত। অল্প কিছু নম্বরের ব্যবধানে তারা জায়গা পেল না বলে খারাপ লাগছে।’’ ছাত্রীদের এই ধারাবাহিক সাফল্যের জন্য তিনি অভিভাবকদের অবদান রয়েছে বলে মনে করেন। তাঁর কথায়, ‘‘এখন অভিভাবকেরা অনেক বেশি সচেতন।”

উল্লেখ্য, গত কয়েক দশক ধরেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফলে বাঁকুড়া জেলা স্কুল দাপট দেখিয়ে আসছে। এ বার কেন ওই স্কুলের কোনও ছাত্র মেধা তালিকার প্রথম দশে উঠে আসতে পারল না, তা নিয়েও বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে শিক্ষক মহলে। স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, “সেরা দশের তালিকায় এ বার কোনও ছাত্রের নাম না এলেও সামগ্রিক ভাবে স্কুলের ফল খারাপ হয়নি। তবুও এই ফলাফলের কারণ বিশ্লেষণ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE