Advertisement
২০ মে ২০২৪
চার মাসের বকেয়া বাকি

সঙ্কটে পুষ্টি প্রকল্প

চাল আছে, ডালও আছে। নেই কেবল তা রান্না করার জ্বালানি আর সব্জি কেনার টাকা। তাই সঙ্কটের মুখে পড়েছে গোটা নানুর ব্লকের প্রায় পঁচিশ হাজার শিশু এবং হাজার পাঁচেক প্রসূতি ও অন্তঃসত্ত্বা।

নানুরের অফিসে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র

নানুরের অফিসে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নানুর শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৬ ০৩:২৮
Share: Save:

চাল আছে, ডালও আছে। নেই কেবল তা রান্না করার জ্বালানি আর সব্জি কেনার টাকা। তাই সঙ্কটের মুখে পড়েছে গোটা নানুর ব্লকের প্রায় পঁচিশ হাজার শিশু এবং হাজার পাঁচেক প্রসূতি ও অন্তঃসত্ত্বা। কারণ টানা চার মাস ধরে বরাদ্দ টাকা না মেলায় প্রায় উঠে যেতে বসেছে এলাকায় প্রায় তিনশোটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পুষ্টি প্রকল্প। ওই অভিযোগ তুলে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে শুক্রবার ব্লক সুসংহত শিশুবিকাশ আধিকারিকের দফতরে বিক্ষোভ দেখালেন শ’খানেক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে খবর, অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রে প্রাক প্রাইমারি স্তরে শিশুদের স্কুলমুখী করণ এবং পুষ্টি প্রকল্পে তিন দিন ভাত ও তিন দিন খিচুড়ি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে এলাকার অন্তঃসত্ত্বা এবং প্রসূতি মায়েদেরও খাবার দেওয়া ওই সব কেন্দ্রে। নিয়মা অনুযায়ী, চাল-ডাল-তেল-নুন প্রকল্প আধিকারিকের দফতর থেকে সরাসরি দেওয়া হয়। জ্বালানির জন্য বেনিফিসিয়ারি অনুযায়ী বরাদ্দ রয়েছে ১৭-২৩ টাকা। একই ভাবে সব্জির জন্য সাধারণত মাথা পিছু দৈনিক ৬৯ পয়সা, আলু ৫২ পয়সা এবং ডিমের জন্য ৪ টাকা ২০ পয়সা বরাদ্দ রয়েছে। তবে পুষ্ট, অপুষ্ট, অন্তঃসত্ত্বা কিংবা প্রসূতিদের জন্য অবশ্য বরাদ্দের তারতম্য রয়েছে।

প্রচলিত রীতি অনুসারে অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রের কর্মীরা সাধারণত স্থানীয় হাটবাজার থেকে ধারে কিংবা নিজেদের টাকায় ওই সব মালপত্র কিনে রান্নার ব্যবস্থা করেন। মাসের শেষে হাজিরা অনুযায়ী বিল করে জমা দেন ব্লক সুসংহত প্রকল্প আধিকারিকের দফতরে। যাচাই করার পরে সেই টাকা পান কর্মীরা। কিন্তু গত চার মাস ধরে বিল জমা দিয়ে টাকা মেলেনি বলে অভিযোগ। এর ফলে গোটা ব্লকে শিশু ও মায়েদের পুষ্টি প্রকল্প সঙ্কটের মুখে পড়েছে বলে কর্মীদের অভিযোগে। প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, এমন পরিস্থিতির জেরে দুর্ভোগে পড়েছেন ব্লকের ২৯৫টি অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রের ২৪, ৪৬৬ শিশু এবং ৫ হাজার প্রসূতি ও অন্তঃসত্ত্বা মায়েরা। বিক্ষোভে থাকা বনগ্রাম কেন্দ্রের কর্মী সায়রা বানু, তকোড়ার মিনতি দে বলেন, ‘‘বারবার প্রশাসনের দৃষ্টি আর্কষণ করেও বকেয়া মেলেনি। এত দিন আমরা কেউ ধার, কেউবা নিজের গয়না বন্ধক রেখে কোনও রকমে চালিয়েছি। কিন্তু দোকানদারেরা জানিয়ে দিয়েছেন, আর ধার দেবেন না। তাই পুষ্টি প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই।’’

এ দিন সংশ্লিষ্ট ব্লক সুসংহত শিশু বিকাশ আধিকারিক শৈলেন্দ্রনাথ রায় দাবি করেছেন, নানা প্রশাসনিক জটিলতায় এত দিন বকেয়া টাকা দেওয়া যায়নি। আগামি ১০ দিনের মধ্যেই সমস্ত বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস তিনি দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

nutrition
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE